জৈন্তাপুর প্রতিনিধি
জানুয়ারি ২৯, ২০২২
০১:৫৫ পূর্বাহ্ন
আপডেট : জানুয়ারি ২৯, ২০২২
০১:৫৫ পূর্বাহ্ন
‘হেডস্যার মো. আব্দুর রহীম উত্তর-পূর্ব সিলেটে শিক্ষা বিস্তারের অগ্রদূত। বৃহত্তর জৈন্তার শিক্ষার এই বাতিঘর তাঁর ৪৬ বছরের শিক্ষকতা জীবনে বেশ কিছু মানুষ তৈরী করে গেছেন। যারা জনপ্রতিনিধিত্ব, জনপ্রশাসন থেকে শুরু করে আজ বিভিন্ন ক্ষেত্রে যোগ্যতার স্বাক্ষর রাখছে। তিনি কেবলই একজন গুণী শিক্ষক কিংবা শিক্ষাবিদ ছিলেন না; একাধারে তিনি একজন সমাজচিন্তক, সংস্কারক ও নিখাদ ভাল মানুষ ছিলেন। শিক্ষকতাকে তিনি গতানুগতি শিক্ষার বাইরে নিজের সৃজনশীলতার মিশেলে শিক্ষকতাকে এক শিল্পে পরিণত করেছিলেন। শিক্ষা ও সমাজ উন্নয়নে তাঁর ভ‚মিকা যুগ যুগ জিইয়ে থাকবে, তিনি তাঁর অসামান্য অবদানের মধ্য দিয়ে অমর, অক্ষয় ও অব্যয় হয়ে থাকবেন।’
সেন্ট্রাল জৈন্তা উচ্চ বিদ্যালয়ের চার দশকের প্রধান শিক্ষক বৃহত্তর জৈন্তায় ‘হেডস্যার’ হিসেবে সমধিক পরিচিত মো. আব্দুর রহীম স্মরণে প্রকাশিত স্মৃতিগ্রন্থ ‘স্মৃতির পিঞ্জরে’ এর প্রকাশনা অনুষ্ঠান ও আলোচনা সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন।
আজ শুক্রবার সিলেটের জৈন্তাপুর উপজেলার দরবস্ত ইউপি কমপ্লেক্সে হেডস্যার আব্দুর রহীম স্মৃতি সংসদ আয়োজিত এ প্রকাশনা অনুষ্ঠান ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সেন্ট্রাল জৈন্তা উচ্চ বিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্র এবং সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজের সহযোগী অধ্যাপক ডা. আশিক আনোয়ার বাহার।
সারি নদী বাঁচাও আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী আব্দুল হাই আল হাদির উপস্থাপনায় অনুষ্ঠানে মূল বক্তব্য (প্রবন্ধ) উপস্থাপন করেন ‘স্মৃতির পিঞ্জরে’র সম্পাদক এহসানুল হক জসীম। সেন্ট্রাল জৈন্তার অবসরপ্রাপ্ত সহকারী প্রধান শিক্ষক হোসাইন আহমদ (বিএসসি স্যার) এর নেতৃত্বে অনুষ্ঠানে ‘স্মৃতির পিঞ্জরে’ এর আনুষ্ঠানিক মোড়ক উন্মোচন করা হয়। হেডস্যার আব্দুর রহীম ও স্মৃতিগ্রন্থের উপর আলোচনা করেন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান ড. আতিউল্লাহ, সুনামগঞ্জ সরকারি কলেজের ইসলামের ইতিহাস বিভাগের চেয়ারম্যান সাব্বির আহমদ, অধ্যক্ষ মো. ফজলুল হক, কারিগরী শিক্ষা অধিদপ্তরের সিলেট বিভাগীয় পরিচালক রেহান উদ্দিন। আমন্ত্রিত অতিথির বক্তব্য রাখেন জৈন্তাপুর উপজেলা চেয়ারম্যান কামাল আহমদ, সাবেক চেয়ারম্যান জয়নাল আবেদীন, সহকারী অধ্যাপক শাহেদ আহমদ, ব্যাংকার সাইফুল ইসলাম, দরবস্ত ইউপি চেয়ারম্যান বাহারুল আলম বাহার, দক্ষিণ বাণীগ্রাম ইউপি চেয়ারম্যান মো. লোকমান উদ্দিন, জৈন্তাপুর উপজেলা যুবলীগের আহŸায়ক আনোয়ার হোসন, যুগ্ম আহŸায়ক কুতুব উদ্দিন, পশ্চিম জাফলং ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান এমএ রহীম, কবি সরওয়ার ফারুকী, জৈন্তাপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি নূরুল ইসলাম, জৈন্তাপুর অনলাইন প্রেসক্লাবের সভাপতি এস.এম.রুহেল, জৈন্তাপুর প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি ফয়েজ আহমদ, জৈন্তা বার্তার সম্পাদক ফারুক আহমদ, জৈন্তাপুর প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক আবুল হোসেন মো. হানিফ, যুগ্ম সম্পাদক রেজওয়ান করিম সাব্বির প্রমুখ।
ড. আতিউল্লাহ বলেন, শিক্ষকতার মতো পেশাকে যারা ব্রত হিসেবে নেন, তারা প্রকৃত অর্থে মানুষ গড়ার কারিগর হিসেবে অভিহিত হন। হেডস্যার আব্দুর রহীমের কাছে শিক্ষকতা কেবলই একটি পেশা ছিল না, তাঁর কাছে এটা ছিল ব্রত এবং জৈন্তা অঞ্চলে শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দেওয়ার সুযোগ। শিক্ষকতাকে তিনি শিল্পে পরিণত করেছিলেন বলে মানুষ গড়ার কারিগরই শুধু হয়ে উঠেননি; তিনি হয়ে উঠেছিলেন বৃহত্তর জৈন্তার শিক্ষার বাতিঘর।
হেডস্যারের সবচেয়ে দীর্ঘ সময়ের সহকর্মী হোসাইন আহমদ বিএসসি স্যার বলেন, সেন্ট্রাল জৈন্তা উচ্চ বিদ্যালয়ে আমরা সকল শিক্ষক টিমওয়ার্ক করেছি। আমাদের টিমের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন সুযোগ্য প্রধান শিক্ষক মরহুম আব্দুর রহীম। তিনি তাঁর কর্মগুণে যুগ যুগ ধরে বেঁচে থাকবেন সকলের হৃদয়ে।
আরকেএস/আরসি-১৮