আজ থেকে শামসুদ্দিনে ফের বন্ধ হচ্ছে বহির্বিভাগ সেবা

নিজস্ব প্রতিবেদক


ফেব্রুয়ারি ০১, ২০২২
০৫:১১ পূর্বাহ্ন


আপডেট : ফেব্রুয়ারি ০৩, ২০২২
০১:৪৩ পূর্বাহ্ন



আজ থেকে শামসুদ্দিনে ফের বন্ধ হচ্ছে বহির্বিভাগ সেবা

করোনা সংক্রমণ বাড়ায় সিলেটের হাসপাতালগুলোতে বাড়ছে করোনা রোগীর চাপ। এ অবস্থায় আজ সোমবার (১ ফেব্রুয়ারি) থেকে সিলেট করোনা আইসোলেশন সেন্টার শহীদ শামসুদ্দিন আহমদ হাসপাতালে বন্ধ হচ্ছে বহির্গমন সেবা। দেড় বছরের বেশি সময় পর চলতি মাসের ১ তারিখ থেকে হাসপাতালে বহির্বিভাগ সেবা চালু হয়েছিল।

শামসুদ্দিন আহমদ হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, ২০২০ সালের মার্চে দেশে করোনা রোগী শনাক্ত হওয়ার পর থেকে ১০০ শয্যা বিশিষ্ট শহীদ শামসুদ্দিন আহমদ হাসপাতাল সিলেটের করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতাল হিসেবে সেবা দেওয়া শুরু করে। এরপর থেকে এখন পর্যন্ত প্রায় ১০ হাজার রোগীকে চিকিৎসা দিয়েছে হাসপাতালটি। এরমধ্যে করোনা আক্রান্ত, করোনা উপসর্গ নিয়ে চিকিৎসা নিয়েছেন রোগীরা। সিলেটে সংক্রমণ যখন চূড়ায় ছিল তখন হাসপাতালটি রোগীতে পরিপূর্ণ ছিল। তবে গত অক্টোবরের পর সিলেটে করোনা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে থাকায় হাসপাতাল ভর্তি রোগীর সংখ্যা ১০ এর নিচে নেমে আসে।

এই অবস্থায় হাসপাতালের বহির্বিভাগ পুনরায় চালু করার সিদ্ধান্ত নেয় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। পহেলা জানুয়ারি থেকে মেডিসিন বিভাগ (নারী-পুরুষ), সার্জারি, গাইনি এবং ডেন্টাল বিভাগে রোগী দেখার মধ্যে দিয়ে বহির্বিভাগ চালু হয়। পর্যায়ক্রমে দন্ত বিভাগ, চর্মরোগ বিভাগ, শিশু বিভাগসহ অন্যান্য বিভাগ খুলে দেওয়ারও সিদ্ধান্ত নিয়েছিল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এদিকে বহির্বিভাগের পাশাপাশি জন্য হাসপাতালে ৫০টি শয্যা সাধারণ রোগীদের সংরক্ষিত রাখা হয়েছিল।

তবে নতুন করে সংক্রমণ বাড়ায় হাসপাতালে বাড়তে শুরু করেছে ভর্তি রোগীর সংখ্যা। গতকাল রবিবার সকাল পর্যন্ত হাসপাতালটিতে ৬৫ জন রোগী ভর্তি আছেন। এর মধ্যে করোনা আক্রান্ত হয়ে ভর্তি আছেন ৫৫ জন। বাকিরা উপসর্গ নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি আছেন। এদিকে হাসপাতালের আইসিউইতে ৭ জন রোগী চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

সিলেট করোনা আইসোলেশন সেন্টার শহীদ শামসুদ্দিন আহমদ হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) ডা. মো. মিজানুর রহমান সিলেট মিররকে বলেন, ‘রোগীর চাপ কম থাকায় পহেলা জানুয়ারি থেকে হাসপাতালের আউটডোর সেবা চালু হয়েছিল। তবে বর্তমানে রোগীর চাপ বাড়ছে। তাই আগামীকাল ১ ফেব্রæয়ারি থেকে পুণরায় আউডোর সেবা বন্ধ করা হচ্ছে। এখন থেকে শুধু করোনা সংক্রান্ত সেবা প্রদান করা হবে হাসপাতালে। সাধারণ কোনো রোগীকে হাসপাতালে ভর্তি করা হবে না।’

জানা গেছে, চিকিৎসা শুরুর সময় হাসপাতালটিতে কোনো আইসিইউ সুবিধা ছিল না। ছিল না সেন্ট্রাল অক্সিজেন ব্যবস্থা। তবে বর্তমানে হাসপাতালে ১৬টি আইসিইউ ও ১০ হাজার লিটারের একটি অক্সিজেন প্ল্যান্ট রয়েছে। সেন্ট্রাল অক্সিজেন সেবাও রয়েছে এই হাসপাতালে।

২০২০ সালের এপ্রিলে করোনা শনাক্ত হওয়ার পর মে-জুনে শনাক্তের হার বাড়তে শুরু করে। তবে আগস্টের পর থেকে তা আবার কমতে শুরু হয়। ২০২১ সালের প্রথম দুই মাসে সংক্রমণ ছিল নিয়ন্ত্রণে। তবে মার্চের শেষ সপ্তাহ থেকে আবারও বাড়তে থাকে সংক্রমণ। গত জুলাইয়ে সংক্রমণ ছিল চূড়ায়। তবে আগস্টের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে আবার সংক্রমণ কিছুটা কমতে শুরু করে।

এদিকে গত বছরের সেপ্টেম্বর থেকে সিলেটে করোনা শনাক্তের নিম্মমূখিতা চলতে থাকে গেল ডিসেম্বর পর্যন্ত। নতুন বছরের প্রথম থেকে আবারও শনাক্ত বাড়তে থাকে। গত ২ সপ্তাহ তা বাড়ছে উদ্বেগজনক হারে। শনাক্ত বাড়ায় হাসপাতালগুলোতেও বাড়ছে রোগীর চাপ।

গত ৩১ ডিসেম্বর সিলেট বিভাগের হাসপাতালগুলোতে ৬ জন করোনা আক্রান্ত রোগী ভর্তি ছিলেন, ১৫ জানুয়ারি ভর্তি রোগীর সংখ্যা ছিল ২৫ জন আর গতকাল ৩১ জানুয়ারি তা বেড়ে দাঁড়ায় ২১৬ জনে। এদের মধ্যে ৯৮ জনই সিলেট জেলার বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি আছেন। এছাড়া সুনামগঞ্জের হাসপাতালে ৩৭ জন, হবিগঞ্জে ২৫ জন এবং মৌলভীবাজারের হাসপাতালে ৫৬ জন ভর্তি আছেন।

সিলেটের ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা, জন্মেজয় দত্ত বলেন, ‘হাসপাতালগুলোতে কিছুটা চাপ বাড়ছে। যার ভর্তি হচ্ছেন তাদের বেশিরভাগই করোনার টিকা নেননি। এবার টিকা গ্রহীতাদের শারিরীক অবস্থা আশঙ্কাজনক হচ্ছে না। ফলে তাদের হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার প্রয়োজন পড়ছে না।’

এনএইচ/আরসি-০১