কুলাউড়া প্রতিনিধি
ফেব্রুয়ারি ০১, ২০২২
০৫:১৫ অপরাহ্ন
আপডেট : ফেব্রুয়ারি ০১, ২০২২
০৫:১৫ অপরাহ্ন
মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার ভাটেরা ইউনিয়নের কৃষ্ণপুর গ্রামের নুরুন নাহার চৌধুরী (ঝর্ণা চৌধুরী) উচ্চ শিক্ষার জন্য আমেরিকায় থাকেন। তিনি সেই দেশের সংস্কৃতি অনুযায়ী আধুনিক পোশাক পরেন। এই অপরাধে কুলাউড়ায় ঝর্ণার পরিবারকে একঘরে করে দিয়েছে গ্রাম পঞ্চায়েত।
এ বিষয়ে সোমবার (৩১ জানুয়ারি) কুলাউড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছে ভুক্তভোগীর পরিবার। ঝর্ণা চৌধুরীর পরিবারের লিখিত অভিযোগ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উচ্চ শিক্ষার জন্য গত ২৬ ডিসেম্বর আমেরিকায় যান ঝর্ণা চৌধুরী। ২৭ ডিসেম্বর থেকে স্থানীয় একটি ‘মৌলবাদী গোষ্ঠী’ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে এ নিয়ে নানা কুৎসা রটান।
এরপর ২৮ ডিসেম্বর শুক্রবার স্থানীয় ভাটেরা বাজার কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ পঞ্চায়েত কমিটি ঝর্নার বাবা আব্দুল হাই চৌধুরী গুলাবের বিরুদ্ধে শালিস বৈঠকে বসেন। কিন্তু তিনি গুরুতর অসুস্থ থাকায় বৈঠকে উপস্থিত হতে পারেননি। তাই ক্ষিপ্ত হয়ে মসজিদ পঞ্চায়েত কমিটির সভাপতি মাখন মিয়া ও সম্পাদক আমিন মিয়ার নির্দেশে তাদের একঘরে করে দেওয়া হয়।
এ প্রসঙ্গে ঝর্ণা চৌধুরী বলেন, ‘উচ্চশিক্ষার্থে যুক্তরাষ্ট্রে আসাকে কেন্দ্র করে এলাকার কিছু অতি উৎসাহী মানুষ স্থানীয় মসজিদে আমাকে নিয়ে বিচার বসান। আমার বাবাকে সেই বিচারে উপস্থিত হতে বলেন। কিন্তু ৭০ বছর বয়সী আমার বাবার ইতোমধ্যে তিনবার মিনি স্ট্রোক হয়েছে। ডাক্তার বিশ্রামে থাকতে পরামর্শ দিয়েছেন। সম্প্রতি তাঁর আবার ডিমেনশিয়া (ভুলে যাওয়ার অসুখ) ধরা পড়েছে। তিনি বিচারে না যাওয়ায় আমার পরিবারকে এক ঘরে করে দেওয়া হয়েছে।’
এ খবর পেয়ে ঝর্না চৌধুরী মসজিদ কমিটির সেক্রেটারি আমিন মিয়ার কাছে অভিযোগ সম্পর্কে জানতে চান। জবাবে তিনি বলেন, ‘আমি আমেরিকায় গিয়ে আমার এলাকার সনাতন ধর্মাবলম্বী একজনকে বিয়ে করেছি। যা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট। তাছাড়া আমার বাবা কেন তাদের নির্দেশ মানেননি, তাই আমার পরিবারকে এক ঘরে করা হয়েছে।’
এ বিষয়ে পঞ্চায়েত কমিটির সভাপতি ও সম্পাদকের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তারা ফোন রিসিভ না করায় বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
ভাটেরা ইউপি চেয়ারম্যান সৈয়দ নজরুল ইসলাম বলেন, ‘এ ঘটনা মিথ্যা। সামান্য বিষয়টি নিয়ে ভুলবুঝাবুঝি হয়েছে।’
কুলাউড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার এটিএম ফরহাদ চৌধুরী জানান, আমাগী ১২ ফেব্রুয়ারি উভয় পক্ষকে ডাকা হয়েছে। সেখানে তাদের উভয় পক্ষের বক্তব্য শুনে বিষয়টি মিমাংসা করা হবে। তাছাড়া ওসি, ইউনিয়ন চেয়াম্যানকে নির্দেশ দিয়েছি ঝর্ণার পরিবারের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে।
জেডএইচ/আরসি-০৮