সিলেট মিরর ডেস্ক
ফেব্রুয়ারি ১১, ২০২২
০৮:০১ পূর্বাহ্ন
আপডেট : ফেব্রুয়ারি ১১, ২০২২
০৫:৩৬ অপরাহ্ন
রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যকার ‘যুদ্ধপরিস্থিতি’তে ইউরোপের নিরাপত্তা ব্যবস্থা গুরুতর সংকটের মুখে পড়েছে বলে মনে করছেন যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন।
বৃহস্পতিবার বেলজিয়ামের রাজধানী ব্রাসেলসে ন্যাটোর সদর দফতরে এক বৈঠকে যোগ দেওয়ার আগে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে জনসন বলেন, ‘আমি সত্যিই মনে করি, ইউক্রেনে আগ্রাসনের ব্যাপারে রাশিয়া এখনও স্থির সিদ্ধান্তে আসেনি।’
‘তার মানে কিন্তু এই নয়— ইউক্রেনে রুশ আগ্রাসনের সম্ভাবনা একেবারেই নেই। আমাদের গোয়েন্দারা এখনও এ বিষয়ে আমাদেরকে নিশ্চিত কোনো তথ্য সরবরাহ করেনি।’
‘তবে আমি অবশ্যই বলব, এই যুদ্ধাবস্থার কারণে ইউরোপের নিরপত্তা এই মুহূর্তে সবচেয়ে বিপজ্জনক পর্যায়ে রয়েছে যা গত কয়েক দশকের মধ্যে ঘটেনি। পরিস্থিতি পুরোপুরি বোঝা এবং কী করতে হবে—তা নির্ধারণে আগামী কয়েকদিন আমাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।’
‘যদি সত্যিই ইউক্রেনের সঙ্গে রাশিয়ার যুদ্ধ বেঁধে যায়, তাহলে রক্তক্ষয় এড়ানো অসম্ভব হবে এবং রাশিয়া, ইউক্রেনের পাশাপাশি ইউরোপের নিরাপত্তা পরিস্থিতিতেও বড় বিপর্যয় নেমে আসবে।’
সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের অঙ্গরাজ্য ও রাশিয়ার প্রতিবেশী রাষ্ট্র ইউক্রেন কয়েক বছর আগে ন্যাটোর সদস্যপদের জন্য আবেদন করার পর থেকেই উত্তেজনা শুরু হয়েছে রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে। সম্প্রতি ন্যাটো ইউক্রেনকে সদস্যপদ না দিলেও ‘সহযোগী দেশ’ হিসেবে মনোনীত করায় আরও বেড়েছে এই উত্তেজনা।
১৯৪৯ সালে গঠিত হওয়া নর্থ আটলান্টিক ট্রিটি অ্যালায়েন্সকে (ন্যাটো) রাশিয়া বরাবরই পাশ্চাত্য শক্তিসমূহের আধিপত্য বিস্তারের হাতিয়ার হিসেবে মনে করে; এবং ঐতিহাসিকভাবেই বিশ্বের বৃহত্তম দেশ রাশিয়া পাশ্চাত্য আধিপিত্যবাদের বিরোধী।
একসময়ের সোভিয়েত অঙ্গরাষ্ট্র ইউক্রেনের মোট জনসংখ্যার একটি উল্লেখযোগ্য অংশ রুশ বংশোদ্ভুত। দেশটিতে রুশ বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠীও বেশ সক্রিয়। এই গোষ্ঠীর সশস্ত্র সহায়তায় ২০১৪ সালে ইউক্রেনের কাছ থেকে ক্রিমিয়া দ্বীপের দখল নেয় রাশিয়া।
রাশিয়ার ভৌগলিক নিরাপত্তা বিষয়ক উদ্বেগের আর একটি কারণ কৃষ্ণসাগর। এটি রাশিয়ার একমাত্র সামুদ্রিক জলপথ। এই সাগরের উপকূলবর্তী অপর দেশ ইউক্রেন যদি ন্যাটোর সদস্য হয়, সেক্ষেত্রে কৃষ্ণসাগর অঞ্চলে ন্যাটোর তৎপরতা স্বাভাবিকভাবেই বাড়বে, যা কখনও রাশিয়ার কাম্য নয়।
ন্যাটোর নেতৃত্বে থাকা দেশ যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এর মধ্যে বেশ কয়েকবার মস্কোর উদ্দেশে সতর্কবার্তা দিয়ে বলেছেন, যদি ইউক্রেনে আগ্রাসন চালানো হয়, সেক্ষেত্রে ‘অভূতপূর্ব’ কূটনৈতিক সংকট নেমে আসবে রাশিয়ার ওপর।
তবে রাশিয়া যে এই সতর্কবার্তা ও হুমকিতে বিচলিত— এমন বলার উপায় নেই। রাশিয়া-ইউক্রেন সীমান্তে এখনও লক্ষাধিক সৈন্য মোতায়েন রেখেছে দেশটি।
পাশাপাশি, এই ইস্যুতে সম্প্রতি বিরুদ্ধে বেইজিংয়ের সঙ্গে ওয়াশিংটনবিরোধী জোট করেছে মস্কো এবং অপর মিত্র দেশ বেলারুশের সঙ্গে ১০ দিনের যৌথ সামরিক মহড়া শুরু করেছে রাশিয়া।
আরসি-০৭