যুদ্ধাপরাধী সৈয়দ কায়সারের মৃত্যু

মাধবপুর প্রতিনিধি


ফেব্রুয়ারি ১১, ২০২২
০৪:১৫ অপরাহ্ন


আপডেট : ফেব্রুয়ারি ১১, ২০২২
০৪:১৮ অপরাহ্ন



যুদ্ধাপরাধী সৈয়দ কায়সারের মৃত্যু

একাত্তরের মানবতা বিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত হবিগঞ্জের মাধবপুরের সৈয়দ মো. কায়সারের মৃত্যু হয়েছে। 

আজ শুক্রবার (১১ ফেব্রুয়ারি) ভোররাত ৫ ঘটিকায় ঢাকার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে মৃত্যু বরণ করেছেন বলে তার ভাতিজা ৯নং নয়াপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এস এম আতাউল মোস্তফা সোহেল জানান।

ফাসির দণ্ডপ্রাপ্ত আসামী সৈয়দ কায়সারের মৃতদেহ কোথায় সমাহিত করা হবে এবং জানাযা কোথায় কখন অনুষ্ঠিত হবে তা এখনো নিহতের পারিবারের কোন সদস্য নিশ্চিত করতে পারেনি।

সৈয়দ কায়সার ১৯৪০ সালের ১৯ জুন সৈয়দ সঈদ উদ্দিন ও বেগম হামিদা বানুর ঘরে নয়াপাড়া ইউনিয়নের ইটাখোলা গ্রামের জন্মগ্রহন করেছিলেন। ছাত্রজীবন ঢাকায় কাটিয়ে রাজনৈতিক জীবনে তিনি ১৯৬৬ সাল থেকে ১৯৭১ সাল পর্যন্ত পাকিস্তান মুসলিম লীগের সিলেট জেলা শাখার সদস্য ছিলেন। ১৯৭০ সালে প্রাদেশিক পরিষদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ‘হাতি’ প্রতীকে অংশ নিয়ে পরাজিত হন। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশ স্বাধীনতার যুদ্ধ চলাকালীন সময়ে পাকিস্তানী সেনাবাহিনীদের সাথে যুক্ত হয়ে কায়সার বাহিনী গঠন করে মাধবপুর, হবিগঞ্জ, চুনারুঘাট, নাসিরনগর ও ব্রাহ্মণবাড়ীয়ায় হত্যাযজ্ঞ, ধর্ষণ, লুঠতরাজ, অগ্নিসংযোগ করেন। 

১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর দেশ স্বাধীন হওয়ার পর কিছুকাল সৈয়দ কায়সার রাজনীতিতে নিষ্ক্রিয়  থাকলেও ১৯৭৮ সালে আবার সক্রিয় হয়ে ১৯৭৯ সালে দেশের দ্বিতীয় জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ‘তালা’ প্রতীকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে অংশগ্রহন করে হবিগঞ্জ-৪ (তৎকালীন সিলেট ১৭) আসনে নির্বাচিত হন। এমপি নির্বাচিত হয়ে তিনি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী বিএনপিতে যোগ দিয়ে হবিগঞ্জ জেলা বিএনপি’র সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৮২ সালের পর তিনি জাতীয় পার্টিতে যোগদান করে জেলা সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। জাতীয় পার্টির মনোনীত প্রার্থী হিসেবে ১৯৮৬ সালে তৃতীয় জাতীয় সংসদ নির্বাচন এবং ১৯৮৮ সালে চতুর্থ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করে হুসাইন মো. এরশাদের মন্ত্রী সভায় কৃষি প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। পরবর্তিতে ১৯৯১, ১৯৯৬ ও ২০০১ সালের জাতীয় সংসদের নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে তিনি পরাজিত হন। ২০১৩ সালে আর্ন্তজাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ দায়ের করেন। ওই বছরের ১৫ মার্চ ট্রাইব্যুনাল তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারী পরোয়ানা জারি করলে ১৬ মার্চ ঢাকার ভাটারা এলাকা থেকে গ্রেপ্তার হন সৈয়দ কায়সার। ২০১৪ সালের ২রা ফেব্রুয়ারি তার বিরুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধের সময় গণহত্যা, ধর্ষণ, নির্যাতন, লুটতরাজ ও অগ্নিসংযোগসহ মানবতাবিরোধী ১৬টি অভিযোগ আনা হয়। আনীত ১৬টি অভিযোগের মধ্যে ১৪টি অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত করে ২টি অভিযোগ থেকে খালাস দেওয়া হয়েছিল। ৭টি অভিযোগে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হলে তিনি দীর্ঘ কারাবাস থাকাবস্থায় আজ হাসপাতালে মৃত্যু বরণ করেন। 

ও এম/বি এন-০৩