বড়লেখায় দুই পৃথক দুর্ঘটনায় দুই যুবকের মৃত্যু, দাফন সম্পন্ন

বড়লেখা প্রতিনিধি


ফেব্রুয়ারি ১৬, ২০২২
০৫:৩০ অপরাহ্ন


আপডেট : ফেব্রুয়ারি ১৬, ২০২২
০৫:৩০ অপরাহ্ন



বড়লেখায় দুই পৃথক দুর্ঘটনায় দুই যুবকের মৃত্যু, দাফন সম্পন্ন

মধ্যপ্রাচ্যের কাতারে চলন্ত মোটরসাইকেলে হার্ট অ্যাটাকে মারা যাওয়া মুহিবুজ্জামান মুন্নাকে (২৯) দাফন করা হয়েছে।  বুধবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) বেলা আড়াইটায় উপজেলার রতুলীবাজার সংলগ্ন মাঠে তার জানাজা শেষে তাকে দাফন করা হয়। অন্যদিকে বড়লেখায় সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত তরুণ ব্যবসায়ী আব্দুর রবের (২৭) দাফন করা হয়েছে। বুধবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) বেলা ১১টায় উপজেলার শিক্ষারমহল পূর্বজামে মসজিদ সংলগ্ন মাঠে জানাজা শেষে তাকে দাফন করা হয়েছে। তাদের আকস্মিক মৃত্যুতে পরিবারের পাশাপাশি গোটা উপজেলার মানুষ যেন শোকে স্তব্ধ হয়ে পড়েছেন।  

কাতার প্রবাসী ও মুন্নার পরিবার সূত্রে জানা গেছে, মুহিবুজ্জামান মুন্না প্রায় ৬ বছর ধরে কাতারে ছিলেন। তিনি সেখানে প্রথমে একটি দোকানে কাজ করতেন। পরে ফুড ডেলিভারি ম্যান হিসেবে কাজ শুরু করেন। গত বুধবার (০৯ ফেব্রুয়ারি) কাতার সময় রাত দুইটার দিকে মোটরসাইকেলযোগে খাবার ডেলিভারি দিয়ে ফেরার সময় চলন্ত মোটরসাইকেল থেকে তিনি সড়কে ছিটকে পড়েন। প্রত্যক্ষদর্শীরা তাকে সেখান থেকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। চিকিৎসকের বরাত দিয়ে এক কাতার প্রবাসী জানিয়েছেন, চলন্ত মোটরসাইকেলেই মুন্না হার্ট অ্যাটাক করে ঘটনাস্থলেই মারা যান। নিহত মুন্না বড়লেখা উপজেলার দক্ষিণভাগ দক্ষিণ ইউনিয়নের পশ্চিম গাংকুল গ্রামের মনিরুজ্জামান মনিরের একমাত্র ছেলে।  দেশের বাড়িতে নিহত মুন্নার স্ত্রী, এক ছেলে ও বাবা-মা রয়েছেন। এদিকে গত মঙ্গলবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) কাতার থেকে বিমানে মুন্নার লাশ দেশে আসে।  বিকেলে লাশবাহী গাড়ি মুন্নার মরদেহ নিয়ে বাড়িতে পৌছার পর শোকাবহ এক পরিবেশ তৈরি হয়। একমাত্র ছেলে মুন্নাকে হারিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন তার বাবা-মা। শোকে কাতর হয়ে পড়েন তার স্ত্রী।  

মুন্নার বাবা মনিরুজ্জামান মনির জানান, কাতারের পুলিশ তদন্ত করে দেখেছে যে মোটরসাইকেলে চলন্ত অবস্থায় হার্ট অ্যাটাক করে আমার ছেলে মুন্না মারা গেছে। তিনি জানান, আমার তিন ছেলে মেয়ে। এরমধ্যে আগে এক মেয়ে মারা গেছে। এখন আমার একমাত্র ছেলে মুন্নাও আমাকে ছেড়ে চলে গেল। 

অন্যদিকে গত মঙ্গলবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে বড়লেখা-কুলাউড়া আঞ্চলিক মহাসড়কের পানিধার এলাকায় সিএনজিচালিত অটোরিকশার সঙ্গে মোটরসাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষে তরুণ ব্যবসায়ী আব্দুর রব (২৭) প্রাণ হারিয়েছেন। ঘটনার পর অটোরিকশার চালক পালিয়েছে। খবর পেয়ে পুলিশ অটোরিকশাটি জব্দ করেছে। নিহত আব্দুর রব বড়লেখা সদর ইউপির শিক্ষারমহল গ্রামের মৃত ইব্রাহিম আলীর ছেলে। পৌরশহরে তার একটি কাপড়ের দোকান রয়েছে। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার বিকেলে আব্দুর রব বড়লেখা থেকে মোটরসাইকেলে বাড়িতে ফিরছিলেন। পৌরশহরের পানিধার এলাকায় পৌঁছামাত্র বিপরীত দিক থেকে দ্রুত গতিতে আসা একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশার সঙ্গে মোটরসাইকেলটির সংঘর্ষ হয়। এতে মোটরসাইকেল আরোহী আব্দুর রব গুরুতর আহত হন। পরে স্থানীয়রা রবকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এদিকে দুর্ঘটনায় আব্দুর রবের এমন মৃত্যুতে পরিবারের পাশাপাশি এলাকায় শোকের ছায়া নেমে আসে।   

বড়লেখা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) জাহাঙ্গীর হোসেন সরদার বুধবার বলেন, সিএনজিচালিত অটোরিকশার সঙ্গে মোটরসাইকেলের সংর্ঘষে একজন নিহত হয়েছেন। ঘটনার অটোরিকশা চালক পালিয়েছে। তবে অটোরিকশাটি জব্দ করা হয়েছে। নিহতের পরিবারের কোনো অভিযোগ না থাকায় যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমতিক্রমে লাশ ময়নাতদন্ত ছাড়াই দাফনের অনুমতি দেওয়া হয়েছে।   


এ.জে/বি এন-১০