একমাস পর চালু শাবির দুই শতাধিক শিক্ষার্থীর মোবাইল নম্বর

নিজস্ব প্রতিবেদক


ফেব্রুয়ারি ২২, ২০২২
০৫:১৬ পূর্বাহ্ন


আপডেট : ফেব্রুয়ারি ২২, ২০২২
০৫:১৬ পূর্বাহ্ন



একমাস পর চালু শাবির দুই শতাধিক শিক্ষার্থীর মোবাইল নম্বর

প্রায় এক মাস পর শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শতাধিক শিক্ষার্থীর মোবাইল নম্বর চালু হয়েছে। গতকাল রবিবার তাদের সিমকার্ডগুলো চালু হয়। 

জানা যায়, উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে চলা আন্দোলনের মধ্যে গত ২৪ জানুয়ারি শাবিপ্রবির প্রায় দুইশ বর্তমান ও প্রাক্তন শিক্ষার্থীর মোবাইল নম্বর ও মোবাইল ব্যাংকিং বন্ধ করে দেওয়ার অভিযোগ তুলেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। পরে গত ১১ ফেব্রুয়ারি শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি ও শিক্ষা উপমন্ত্রী মুহিবুল ইসলাম নওফেলের সঙ্গে আলোচনাকালে অন্যান্য দাবির সঙ্গে মোবাইল নম্বর ও ব্যাংকিং নম্বর খুলে দেওয়ার দাবিও জানান শিক্ষার্থীরা। এ সময় শিক্ষামন্ত্রী আগামী কয়েক দিনের মধ্যেই মোবাইল নম্বর ও ব্যাংকিং নম্বর খুলে দেওয়ার বিষয়ে শিক্ষার্থীদের আশ্বস্ত করেন। এই আশ্বাসের প্রায় এক সপ্তাহ পর গতকাল রবিবার শিক্ষার্থীদের মোবাইল নম্বরগুলো খুলে দেওয়া হয়। তবে এখনও বন্ধ রয়েছে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের নম্বরগুলো। 

এ বিষয়ে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বিরোধী আন্দোলনের মুখপাত্র মুহাইমিনুল বাশার রাজ সিলেট মিররকে বলেন, ‘আমাদের প্রায় দুইশর মতো মোবাইল নম্বর ও মোবাইল ব্যাংকিং নম্বর বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। গতকাল রবিবার সব মোবাইল নম্বর খুলে দেওয়া হয়েছে। তবে এখনও মোবাইল ব্যাংকিং একাউন্ট বন্ধ রয়েছে। সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, আগামী কর্মদিবসের মধ্যে মোবাইল ব্যাংকিং নম্বর খুলে দেওয়া হবে।’

মামলা প্রত্যাহার হয়েছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এখনও শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে দায়ের করা দুই মামলা প্রত্যাহার করা হয়নি। যা আমাদের হতাশ করেছে। কারণ দ্রুতই মামলাগুলো প্রত্যাহার হবে বলে শিক্ষামন্ত্রী আমাদের আশ্বস্ত করেছিলেন।’

উল্লেখ্য, শাবিপ্রবির শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের সূত্রপাত গত ১৩ জানুয়ারি। ওই দিন রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বেগম সিরাজুন্নেসা চৌধুরী হলের প্রাধ্যক্ষ জাফরিন আহমেদের বিরুদ্ধে অসদাচরণের অভিযোগ তুলে তার পদত্যাগসহ তিন দফা দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন হলের কয়েক শছাত্রী। গত ১৫ জানুয়ারি সন্ধ্যার দিকে ছাত্রলীগ হলের ছাত্রীদের ওপর হামলা চালায়। 

পরদিন ১৬ জানুয়ারি বিকেলে শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইসিটি ভবনে উপাচার্যকে অবরুদ্ধ করেন। তখন পুলিশ শিক্ষার্থীদের লাঠিপেটা ও তাদের লক্ষ্য করে রাবার বুলেট ও সাউন্ড গ্রেনেড ছোড়ে। এতে শিক্ষক, শিক্ষার্থীসহ অর্ধশতাধিক আহত হন। ওই দিন রাত সাড়ে আটটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ও হল ছাড়ার ঘোষণা দিলেও শিক্ষার্থীরা তা উপেক্ষা করে উপাচার্যের পদত্যাগ চেয়ে আন্দোলন চালিয়ে যান। এরপর গত ১৯ জানুয়ারি থেকে অনশন শুরু করেন আন্দোলরত শিক্ষার্থীরা। এ সময় শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি, বিভিন্ন শিক্ষক, শিক্ষক প্রতিনিধি, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ কয়েকবার চেষ্টা করেও অনশন ভাঙ্গাতে পারেননি। তবে গত ২৬ জানুয়ারি অধ্যাপক ড. মুহম্মদ জাফর ইকবালের আশ্বাসে অনশন ভাঙ্গেন শিক্ষার্থীরা। এ সময় অধ্যাপক জাফর ইকবাল জানিয়েছিলেন, সরকারের উচ্চ পর্যায় থেকে দাবি পূরণের আশ্বাস পেয়েই তিনি শাবিপ্রবিতে এসেছেন। 

এরপর থেকেই রোড পেইন্টিং, প্রতিবাদী সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, টং দোকান, বির্তক প্রতিযোগিতার মাধ্যমে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছিলেন আন্দোলনকারীরা। এ সময় শিক্ষামন্ত্রীকে সিলেটে এসে আলোচনার আহ্বান জানান শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীদের আহ্বানে সাড়া দিয়ে গত ১১ ফেব্রুয়ারি সিলেটে আসেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। পরদিন দাবি মানার আশ্বাসে আন্দোলন আপাতত প্রত্যাহার করেন শিক্ষার্থীরা। 

এনএইচ/আরসি-০১