সিলেট মিরর ডেস্ক
ফেব্রুয়ারি ২৭, ২০২২
০২:২০ পূর্বাহ্ন
আপডেট : ফেব্রুয়ারি ২৭, ২০২২
০২:২০ পূর্বাহ্ন
সিলেট নগরের চৌহাট্টা এলাকার সিলেট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে দিনব্যাপী সিলেট বইমেলায় জনস্রােত ছিল। লেখক-পাঠক-দর্শনার্থীদের সরব পদচারণায় মেলা ছিল প্রাণবন্ত। প্রথম আলো বন্ধুসভা সপ্তমবারের মতো এ বইমেলার আয়োজন করেছিল। এতে ঢাকা ও সিলেটের ১৭টি প্রকাশনাপ্রতিষ্ঠান যোগ দেয়।
জাতীয় সংগীত পরিবেশনার মধ্য দিয়ে মেলা শুরু হয়। বেলা চারটায় মূলমঞ্চে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী। প্রধান অতিথি বক্তব্যে বলেন, সিলেট বইমেলা ধারাবাহিকভাবে আয়োজিত হওয়ায় এরই মধ্যে পাঠকদের কাছে ব্যাপক সাড়া জাগিয়েছে। করোনাপরিস্থিতিতে গত বছরের মতো এবারও সংক্ষিপ্ত আয়োজনে দিনব্যাপী বইমেলা হলেও আগামী বছর থেকে আগের মতো পক্ষকালব্যাপী এ বইমেলা হবে বলেও তিনি বক্তৃতায় আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
উদ্বোধনী পর্বে আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন সিলেট প্রেসক্লাবের সভাপতি ইকবাল সিদ্দিকী, সিলেট জেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি আল আজাদ, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট সিলেটের সভাপতি আমিনুল ইসলাম চৌধুরী লিটন, সম্মিলিত নাট্য পরিষদ সিলেটের সভাপতি মিশফাক আহমদ চৌধুরী মিশু, কবি-গবেষক ড. মোস্তাক আহমাদ দীন এবং ইলেকট্রনিক মিডিয়া জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশন (ইমজা) সিলেটের সভাপতি মইন উদ্দিন মনজু। অনুষ্ঠান সঞ্চালন করেন প্রথম আলো সিলেটের নিজস্ব প্রতিবেদক সুমনকুমার দাশ।
আলোচনা পর্বের পর প্রতি বছরের ধারাবাহিকতায় এবারও ‘প্রথম আলো বন্ধুসভা সাহিত্য পুরস্কার’ দেওয়া হয়। এবার মৌলভীবাজারের বাসিন্দা বিশিষ্ট কথাসাহিত্যিক ও কবি আকমল হোসেন নিপুকে এ সম্মাননা জানানো হয়। তাঁর হাতে আমন্ত্রিত অতিথিরা সম্মাননা-স্মারক ও নগদ ১০ হাজার টাকা তুলে দেন। স্মারক-সম্মাননা গ্রহণ শেষে অনুভূতি প্রকাশ করে আকমল হোসেন নিপু বলেন, ‘আমার নিজস্ব কিছু কথা আছে, সেসব প্রকাশ করার জন্যই আমি লিখি। এ সম্মাননা আমাকে প্রাণিত করেছে।’
উদ্বোধনী পর্বে আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে আরও উপস্থিত ছিলেন সিলেট প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি ও ‘সিলেট মিরর’ সম্পাদক আহমেদ নূর, বাংলাদেশ আবৃত্তি সমন্বয় পরিষদের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য মোকাদ্দেস বাবুল, কবি এ কে শেরাম, উদীচী সিলেটের সভাপতি এনায়েত হাসান মানিক, ছড়াকার বিধূভূষণ ভট্টাচার্য, গল্পকার জামান মাহবুব, রসসাহিত্যিক মনোজবিকাশ দেবরায়, নাট্যব্যক্তিত্ব মু. আনোয়ার হোসেন রনি ও শামসুল বাসিত শেরো, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট সিলেটের সাধারণ সম্পাদক গৌতম চক্রবর্তী, সম্মিলিত নাট্য পরিষদ সিলেটের সাধারণ সম্পাদক রজতকান্তি গুপ্ত, সিলেট জেলা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ছামির মাহমুদ, জেলা সাংস্কৃতিক কর্মকর্তা অসিত বরণ দাশ গুপ্ত, আবৃত্তিকার আনোয়ার লাভলু, কবি পুলিন রায় ও সিলেট ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির সহকারী অধ্যাপক প্রণবকান্তি দেব প্রমুখ।
আলোচনা পর্বের পর ফারিয়া খানম শ্রেয়ার সঞ্চালনে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান শুরু হয়। এতে আবৃত্তিকার আনোয়ার লাভলু, বাউল বশিরউদ্দিন সরকার, শিল্পী লিংকন দাশ ও আশরাফুল ইসলাম অনি প্রমুখ আবৃত্তি ও গান পরিবেশন করেন। এ ছাড়া ছন্দ নৃত্যালয়, মুক্তাক্ষর, লিডিং ইউনিভার্সিটি কালচারাল ক্লাব ও একদল ফিনিক্সসহ বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠন গান, নৃত্য ও আবৃত্তি পরিবেশনায় অংশ নেয়। রাতে সমাপণী বক্তব্য দেন প্রথম আলো বন্ধুসভা সিলেটের সভাপতি হুমাইরা জাকিয়া পুতুল।
সাংস্কৃতিক পর্বের ফাঁকে বইমেলা নিয়ে অনুভূতি প্রকাশ করে বক্তব্য দেন প্রবীণ সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব ও বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ আরশ আলী, কবি নৃপেন্দ্র লাল দাশ, সিলেট জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি এমাদ উল্লাহ শহীদুল ইসলাম, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের কেন্দ্রীয় সদস্য ও বিশিষ্ট গীতিকার শামসুল আলম সেলিম, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট সিলেটের সাবেক সাধারণ সম্পাদক এনামুল মুনীর, বিটিভি সিলেটের প্রতিনিধি ও সমাজ অনুশীলন সিলেটের সদস্যসচিব মুক্তাদীর আহমদ, মুক্তিযুদ্ধ-বিষয়ক গবেষক ও সাংবাদিক অপূর্ব শর্মা, গল্পকার তাপসী চক্রবর্তী লিপি, লোকগবেষক পার্থ তালুকদার, কবি ও গীতিকার আশফাক রহমান ও কবি আয়েশা মুন্নী।
সিলেট সিটি করপোরেশনের সহযোগিতায় আয়োজিত এ বইমেলা উৎসর্গ করা হয়েছে সদ্যপ্রয়াত প্রখ্যাত গীতিকার ও বীর মুক্তিযোদ্ধা কাওসার আহমেদ চৌধুরীকে। বইমেলায় অংশগ্রহণকারী স্টলগুলো হচ্ছে প্রথমা, কথাপ্রকাশ, অন্বেষা প্রকাশন, উৎস প্রকাশন, চৈতন্য, নাগরী, বাবুই, বাসিয়া প্রকাশনী, ঘাস প্রকাশন, পাণ্ডুলিপি প্রকাশন, পাপড়ি, অভ্র প্রকাশন, বুনন প্রকাশন, মাছরাঙা প্রকাশন, নোভা বুকস অ্যান্ড পাবলিশার্স, জসিম বুক হাউস ও নিধি প্রকাশনী। এর বাইরে প্রথম আলো বন্ধুসভারও একটি স্টল মেলায় ছিল।
আরসি-১৮