জকিগঞ্জ প্রতিনিধি
মার্চ ০২, ২০২২
০৩:১০ পূর্বাহ্ন
আপডেট : মার্চ ০২, ২০২২
০৩:৪৪ পূর্বাহ্ন
সিলেটের জকিগঞ্জে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা থাকার পরও সাংবাদিক সেজে নবনিযুক্ত ওসির সঙ্গে বৈঠক করেও রেহাই মেলেনি বহু পরিচয়ধারী প্রতারক এটিএম ফয়ছলের। প্রযুক্তির সহায়তায় আজ মঙ্গলবার (১ মার্চ) বিকেলে সিলেট নগর থেকে চাঁদাবাজী মামলায় তাকে গ্রেপ্তার করেছে জকিগঞ্জ থানা পুলিশ।
গ্রেপ্তারকৃত এটিএম ফয়ছলের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজী মামলায় সিলেটের আদালতে (দায়রা-৪৮/২১) গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ছিলো। কিন্তু আদালতের গ্রেপ্তারি পরোয়ানা থাকার পরও সম্প্রতি থানার নতুন ওসি মো. মোশারফ হোসেনের সঙ্গে সখ্যতা গড়ে তোলার চেষ্টায় অভ্যর্থনা জানাতে থানায় যায় প্রতারক এটিএম ফয়ছলসহ তার সহযোগী সোহেল তালুকদার, সুলতানপুর ইউপির ঘেছুয়া এলাকার আব্দুল হানিফ সুমন, রতনগঞ্জ এলাকার শাহাদাৎ হোসেন চৌধুরী বকুল। থানায় অবস্থানকালে তারা নিজেদেরকে সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে ওসির সঙ্গে বৈঠক করে ছবি তোলেন। পরে ফেসবুকে পোস্ট করেন ‘সাংবাদিকদের সঙ্গে ওসির মতবিনিময়’। ফেসবুকে এমন ছবি দেখে ঘটনাটি নিয়ে বির্তক এবং একাধিক গণমাধ্যমে গত সোমবার সংবাদ প্রকাশিত হয়।
জানা গেছে, জকিগঞ্জের মানিকপুর ইউপির দরগাবাহারপুর গ্রামের আব্দুল করিমের ছেলে এটিএম ফয়ছল কখনও সাংবাদিক-সম্পাদক, কখনও রাজনীতিবীদ, কখনও মানবাধিকার কর্মী, আবার কখনও লেখক, মিডিয়া ব্যক্তিত্ব, সংগঠক ও সমাজকর্মী পরিচয় দিয়ে নানা অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছিলেন দীর্ঘদিন থেকে। তার নানা অপকর্মে জকিগঞ্জের সাংবাদিকরাসহ বিভিন্ন মহল বিব্রকর পরিস্থিতির মধ্যে রয়েছেন।
২০১৮ সালের পহেলা অক্টোবর জকিগঞ্জ শহরের হারিছ ট্রেডার্সের ম্যানেজার মাওলানা মুহি উদ্দিন মহসিনের ঝুলন্ত লাশ দরগাবাহারপুর গ্রামের বাড়ি থেকে উদ্ধার করে পুলিশ। লাশ উদ্ধারের পর প্রতারক এটিএম ফয়ছল শরীফ ট্রেডার্সের মালিক আবুল হারিছের কাছে নিজেকে সাংবাদিক দাবি করে ২০ হাজার টাকা চাঁদা চায়। চাঁদা না দিলে আবুল হারিছ তার ম্যানেজার মাওলানা মুহি উদ্দিন মহসিনকে হত্যা করে ঝুলিয়ে রেখেছেন বলে পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশের হুমকি দেন। লেখালেখি শুরু করলে অপমৃত্যুর মামলাটি হত্যা মামলায় রূপান্তরিত হয়ে আবুল হারিছ ফেঁসে যাবেন বলে জানান।
এ ঘটনায় শরীফ ট্রেডার্সের মালিক আবুল হারিছ বাদী হয়ে জকিগঞ্জ থানায় এটিএম ফয়ছলের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজী মামলা (নম্বর-০২/১১/১৮) দায়ের করেন।
এ ব্যাপারে জকিগঞ্জ থানার নতুন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মোশারফ হোসেন জানিয়েছেন, তিনি ১৯ ফেব্রুয়ারী থানায় যোগদান করেন। নতুন হিসেবে তিনি কাউকে চিনেন না এবং কারো ব্যাপারে অবগত নন। এ সুযোগে সংবাদিক পরিচয় দিয়ে এটিএম ফয়ছলসহ কয়েকজন তাঁর কক্ষে গিয়ে দেখা করে ছবি তোলে ফেসবুকে ছাড়েন। পরে তিনি যখন শুনেছেন এটিএম ফয়ছল একটি মামলায় ফেরারী আসামী তখনই তিনি তাকে সিলেট নগর থেকে প্রযুক্তির সহায়তায় গ্রেপ্তার করেন।
আরসি-০৪