শাবিপ্রবি প্রতিনিধি
মার্চ ০২, ২০২২
০৫:৩৭ পূর্বাহ্ন
আপডেট : মার্চ ০২, ২০২২
০৫:৩৯ পূর্বাহ্ন
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আবাসিক হলের শিক্ষার্থীদের সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি ও হলের সেবার মানোন্নয়নে করণীয় নির্ধারণ করতে ছাত্রদের সঙ্গে মতবিনিময় করেছেন হলটির প্রাধ্যক্ষরা।
মঙ্গলবার (০১ মার্চ) সন্ধ্যা ৭টার দিকে হলের টিভিকক্ষে এ সভা শুরু হয়ে রাত সাড়ে আটটা পর্যন্ত চলে। এ সময় আবাসিক শিক্ষার্থীরা হলের ধীরগতির ওয়াই–ফাই, খাবারের অনুন্নত মানসহ বিভিন্ন সমস্যার কথা তুলে ধরেন।
সভায় হলে পানির ফিল্টার মেরামত, অতিথিকক্ষ চালু, হলের পাশের ভাঁগাড় থেকে দ্রুত ময়লা-আবর্জনা অপসারণ, রিডিংরুমের পড়াশোনার উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি, ক্রীড়াসামগ্রী প্রদান ও মশার উপদ্রব নিরসনে উদ্যোগ নেওয়ার জন্য প্রাধ্যক্ষদের অনুরোধ জানান শিক্ষার্থীরা। প্রাধ্যক্ষরা এসব সমস্যার সমাধানের প্রতিশ্রুতি দেন। এ সময় শিক্ষার্থীদের কাছেও এগুলো সমাধানের উপায় জানতে চান তাঁরা।
হলের ৩ হাজার ১২ নম্বর কক্ষের আবাসিক শিক্ষার্থী মাসুদ রানা বলেন, হলের সমস্যা কিছুটা কমে এসেছে। তবে ইন্টারনেট ও খাবারের কিছু সমস্যা এখনো আছে। এসব সমাধানে শিক্ষার্থীরা উদ্যোগ নেওয়ার বিষয়ে বলেছেন।
হলের একাধিক আবাসিক শিক্ষার্থী জানিয়েছেন, হলটিতে প্রায় ৪০০ শিক্ষার্থী থাকেন। এর মধ্যে বৈঠকে ৩৫ থেকে ৪০ জন আবাসিক শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন। তবে হল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, যে সময়টায় সভা আহ্বান করা হয়েছে, তখন অধিকাংশ ছাত্র বাইরে ছিলেন। তাই সভায় উপস্থিতির পরিমাণ কম ছিল। এরপরও যাঁরা ছিলেন, তাঁরা সমস্যাগুলো চিহ্নিত করে হল কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছেন।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের প্রাধ্যক্ষ মোহাম্মদ সামিউল ইসলাম গণমাধ্যমকে বলেন, হলের সমস্যা নিয়ে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে নিয়মিত বৈঠক করা হয়ে থাকে। এর অংশ হিসেবে এ সভা হয়েছে। শিক্ষার্থীরা সভায় নানা সমস্যার কথা বলেছেন। দ্রুততার সঙ্গে সেসব সমস্যার সমাধানের আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। এর বাইরে কীভাবে হলের পরিবেশ সুন্দর রাখা যায়, এ নিয়েও যৌক্তিক কিছু পরামর্শ দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।
সভায় হলের সহকারী প্রাধ্যক্ষ মনিরুজ্জামান খান, আরিফুর রহমান ও হেদাউতুল্লাহ আলী হাদী উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, গত ১৩ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের বেগম সিরাজুন্নেসা চৌধুরী হলের প্রাধ্যক্ষের বিরুদ্ধে অসদাচরণসহ বিভিন্ন অভিযোগ তুলে তাঁর পদত্যাগসহ তিন দফা দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন কয়েক শ ছাত্রী। ১৬ জানুয়ারি দাবি আদায়ের লক্ষ্যে উপাচার্যকে অবরুদ্ধ করেন শিক্ষার্থীরা। সেখানে পুলিশ শিক্ষার্থীদের লাঠিপেটা করে এবং তাঁদের লক্ষ্য করে শটগানের গুলি ও সাউন্ড গ্রেনেড ছোড়ে। ওই দিন সন্ধ্যায় নিজ বাসভবনে সিন্ডিকেট সভা ডেকে বিশ্ববিদ্যালয় অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধের ঘোষণা দেন উপাচার্য।
পরে এই আন্দোলন উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন আহমেদের পদত্যাগের এক দফা দাবিতে রূপ নেয়। এরপর শিক্ষামন্ত্রী শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠক করে দাবি পূরণের আশ্বাস দেন। পাশাপাশি উপাচার্যের পদত্যাগের দাবির বিষয়টি আচার্যকে অবহিত করবেন বলে কথা দেন শিক্ষামন্ত্রী। এরপর শিক্ষার্থীরা আন্দোলন কর্মসূচি প্রত্যাহার করে নেন। পরে সিন্ডিকেট সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ১৬ ফেব্রুয়ারি থেকে অনলাইনে এবং ২২ ফেব্রুয়ারি থেকে সশরীর ক্লাস শুরু হয়।
আরসি-০২