সিলেট মিরর ডেস্ক
মার্চ ১৩, ২০২২
০৭:০৮ পূর্বাহ্ন
আপডেট : মার্চ ১৩, ২০২২
০৭:০৮ পূর্বাহ্ন
কিয়েভে প্রবেশের গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে ব্যারিকেড বসিয়েছে সাধারণ বাসিন্দারা। ছবি: আল জাজিরা।
চূড়ান্ত লড়াইয়ের প্রস্তুতি নিচ্ছে ইউক্রেনবাসী। যেকোনো সময় রাজধানী কিয়েভে অভিযান শুরু করতে পারে রুশ সেনারা। তাদের মোকাবিলায় সেনাদের পাশাপাশি ইউক্রেনের সাধারণ নাগরিক ও অনেক স্বেচ্ছাসেবক বিভিন্ন পয়েন্টে অবস্থান নিয়েছে।
তাদের একজন ইউরি মালিনস্কি। চার দিন আগে গোলা হামলায় ভাইকে হারানোয় লড়াইটা অনেকটা ব্যক্তিগত হয়ে গেছে মালিনস্কির কাছে। মাতৃভূমি রক্ষায় নেদারল্যান্ডসে ট্রাকচালকের চাকরি ছেড়ে এসেছেন বিমান বাহিনীর সাবেক এই কর্মকর্তা।
আল জাজিরাকে তিনি বলেন, ‘আমার ভাইকে কেবল তার পোশাকের কারণে চিনতে পেরেছি, তাকে চেনার অন্য উপায় ছিল না।
‘এখানে এমন অনেকে আছে, যারা কখনও যুদ্ধে যায়নি। কখনও গুলি চালায়নি, রাইফেলের শব্দও শোনেনি। তার পরও আমরা প্রস্তুত। বিশ্বাস করুন, আগে কখনও এতটা মনোবল পাইনি।’
কেবল লড়াই নয়, বাসিন্দাদের মনোবল চাঙা রাখতে এবং জরুরি সেবায় কাজ করছেন অনেকে। রুশ অভিযানের মুখে শহরে ইতোমধ্যে খাদ্য ও পানি সরবরাহে ঘাটতি শুরু হয়েছে।
অ্যালিওনা কিমলাচ দুই সপ্তাহ আগেও ছিলেন একজন নির্মাণকর্মী। যুদ্ধ তাকে বদলে দিয়েছে। এখন বয়স্ক ও অসুস্থ নাগরিকদের নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে সাহায্য করছেন তিনি। পাশাপাশি বোমা হামলার আতঙ্কে যারা বের হচ্ছে না, তাদের বাড়িতে খাবার পৌঁছে দিচ্ছেন হাসিমুখে।
আল জাজিরার সঙ্গে যখন কথা হয়, তখন ৯৫ বছরের আলা সাভিচনার জন্য খাবার কিনতে মুদি দোকানে কিমলাচ।
সাভিচনা বলেন, ‘আমার বয়সীদের কিয়েভ ছাড়ার যুক্তি কী? আপনি দেখেন আমি কীভাবে হাঁটছি। দুটি অস্ত্রোপচার হয়েছে, কোমর ভাঙা। গত ১০ বছর রাস্তায় নামিনি, আমি আমার বেডরুমেই মরতে চাই।’
কিমলাচ বলেন, ‘বুঝতে পারছি না কী করব। আট মাসের মেয়েকে নিয়ে অজানায় যাত্রা করব কি না। গোলা আর সাইরেনের শব্দে নার্ভাস লাগছে।’
ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভ ঘিরে রেখেছে পুতিন বাহিনী। রুশ সেনারা চেষ্টা চালাচ্ছে শহরটিকে বিচ্ছিন্ন করার। স্যাটেলাইটের ছবিতে দেখা গেছে, কিয়েভের চারপাশে রুশ সেনারা অবস্থান নিচ্ছে। পূর্ব ইউক্রেনের শহর সুমি থেকে আরেকটি বহর কিয়েভের দিকে এগিয়ে আসছে।
কিয়েভ রক্ষায় শহরে প্রবেশের গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে ব্যারিকেড দিয়ে বিশাল রুশ সেনাবহরের গতি কমানোর চেষ্টা করছে ইউক্রেনবাসী। বিভিন্ন জায়গা থেকে থেমে থেমে আসছে গুলির শব্দ।
ব্রিটিশ থিংক ট্যাংক রয়্যাল ইউনাইটেড সার্ভিসেস ইনস্টিটিউটের কর্মকর্তা জ্যাক ওয়াটলিং বলেন, ‘কিয়েভের চারপাশে রুশ সেনাদের অবস্থান দেখে মনে হচ্ছে, সরাসরি হামলায় না গিয়ে শহরটি অবরুদ্ধ করে রাখতে পারে রুশ বাহিনী।’
আরসি-০৭