হাসান নাঈম, শাবিপ্রবি
মার্চ ২০, ২০২২
০২:০৯ পূর্বাহ্ন
আপডেট : মার্চ ২০, ২০২২
০২:১৯ পূর্বাহ্ন
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (শাবিপ্রবি) ২০২০-২১ সেশনের শিক্ষার্থীদের নবীনবরণ আগামীকাল রবিবার (২০ মার্চ)। পরেরদিন সোমবার (২১ মার্চ) থেকে শুরু হচ্ছে ক্লাস কার্যক্রম। তবে ক্লাস শুরুর কয়েকদিন আগে থেকেই ক্যাম্পাসে চলে এসেছে অনেক শিক্ষার্থী, অবস্থান নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হল, পার্শ্ববর্তী এলাকাসহ শহরের বিভিন্ন মেসে। তবে হলে আসতে না আসতেই নবীনদের উপর র্যাগিং কার্যক্রম শুরু হয়ে গেছে। তাতে বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের প্রথম ক্লাসকে সামনে রেখে উচ্ছ্বাসের পাশাপাশি র্যাগিং আতঙ্ক বিরাজ করছে নবীন শিক্ষার্থীদের মাঝে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নবীন শিক্ষার্থীদের আগমনকে কেন্দ্র করে কয়েক দিন ধরে র্যাগিংয়ের মতো ঘটনা ঘটছে আবাসিক হলগুলোতে। নবীনদের বিশ্ববিদ্যালয়ের ম্যানার শেখানো কিংবা সিনিয়র-জুনিয়র পরিচিত পর্বে নামে চলছে র্যাগিং কার্যক্রম।
এমনকি, সালাম না দেওয়া কিংবা সামান্য কোনো অজুহাতে র্যাগিংয়ের শিকার হচ্ছে ক্যাম্পাসে আসা সদ্য নবীন শিক্ষার্থীরা। অনেক ক্ষেত্রে মানসিক ও শারীরিক নির্যাতনের মতো ঘটনা ঘটছে বলেও জানা যায়।
শাবিপ্রবিতে র্যাগিং নিষিদ্ধ থাকলেও গত কয়েক বছরের তুলনায় এবছর র্যাগিং বেড়েছে কয়েকগুন। এতে প্রতিনিয়ত র্যাগিং আতঙ্ক বিরাজ করছে সদ্য বিশ্ববিদ্যালয়ে পা রাখা শিক্ষার্থীদের মধ্যে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক নবীন শিক্ষার্থী বলেন, প্রতিদিন রাত হলে হলের সিনিয়ররা আমাদের ফোন করে রুমে ডেকে নিয়ে যায়। এরপর বিভিন্ন ধরণের আপত্তিকর অঙ্গভঙ্গি, ইশারা-ইঙ্গিত, বিভিন্ন ধরনের হাসি-বিদ্রুপ করতে বলে।
ঐ শিক্ষার্থী বলেন, তাদের কথামত সেগুলো করতে বিলম্ব করলে অথবা করতে অস্বীকৃতি জানালে বাবা-মাকে তুলে আমাদের গালিগালাজ করে, এমনকি বিভিন্ন ধরণের হুমকি দেন সিনিয়ররা। এতে আমরা হলে কিংবা মেসে অনিরাপদবোধ করছি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে শাহপরাণ হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. মো. মিজানুর রহমান খান বলেন, ‘হলে প্রতিবছরের ন্যায় এবছরও বিভিন্ন ধরণের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। হলের রুমগুলো নজরদারিতে রাখা হচ্ছে। হলে এ ধরণের কোন ঘটনা ঘটুক সেটা আমাদের কাম্য নয়। সে জন্য আমরা সতর্ক অবস্থানে আছি। যদি এ ধরণের কোন ঘটনা ঘটে তাহলে হলের নিয়ম অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে’।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমার হলের প্রভোস্ট সহযোগী অধ্যাপক মোহাম্মদ সামিউল ইসলাম বলেন, ‘আমরা হলের র্সিনিয়রদের বলেছি, জুনিয়রদের সাথে অসৌজন্যমূলক কিছু না করতে। এ বিষয়ে হলের শিক্ষার্থীদের সচেতন করা হচ্ছে। পাশাপাশি হল প্রশাসন সজাগ অবস্থানে রয়েছে’।
ছাত্র উপদেশ ও নির্দেশনা পরিচালক অধ্যাপক আমিনা পারভীন বলেন, ‘আমাদের ক্যাম্পাসে র্যাগিং নিষিদ্ধ। র্যাগিং নিয়ে আমাদের শৃঙ্খলা কমিটি সজাগ অবস্থানে রয়েছে। ক্যাম্পাসে বিভিন্ন স্থানে আমরা র্যাগিং নিষিদ্ধ সংবলিত ব্যানার টানিয়ে দেওয়া হচ্ছে। তাতেও যদি র্যাগিংয়ের মতো কোনো ঘটনা ঘটে, সেক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে’।
বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, ‘বরাবরের মতো র্যাগিংয়ের ব্যাপারে আমরা জিরো টলারেন্স অবস্থানে আছি। কোথাও এ ধরনের কোনো ঘটনা ঘটলে আশা করব তৎক্ষণাৎ আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে। এরূপ কোনো ঘটনা ঘটলে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম অনুয়াযী সর্বোচ্চ শান্তির ব্যবস্থা করা হবে। শিক্ষার্থীদের আহ্বান করবো এ ধরণের কর্মকান্ড থেকে বিরত থাকতে।’
আরসি-১৬