তিউনিশিয়ায় সাংবাদিকদের ধর্মঘট

সিলেট মিরর ডেস্ক


মার্চ ২৩, ২০২২
১১:০৭ অপরাহ্ন


আপডেট : মার্চ ২৩, ২০২২
১১:০৭ অপরাহ্ন



তিউনিশিয়ায় সাংবাদিকদের ধর্মঘট

২০১১ সালের বিপ্লবে বাক স্বাধীনতার যে জয় হয়েছিল, তার ভয়ে তিউনিশিয়ার প্রেসিডেন্টের সরকারি গণমাধ্যম নিয়ন্ত্রণ চেষ্টার প্রতিবাদে ধর্মঘটের ডাক দিয়েছেন দেশটির সাংবাদিকরা। বুধবার দেশটির সাংবাদিক ইউনিয়নের কর্মকর্তারা বলেছেন, গণমাধ্যমের স্বাধীনতার দাবিতে তারা আগামী ২ এপ্রিল ধর্মঘটে যাবেন।

দেশটির রাষ্ট্রায়ত্ত টেলিভিশন চ্যানেলকে সরাসরি প্রেসিডেন্ট কাইস সাঈদের নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার পদক্ষেপ নিয়েছে তিউনিশিয়ার সরকার। এছাড়া গত সপ্তাহে সূত্রের পরিচয় উল্লেখ না করে ইসলামপন্থী জঙ্গিদের নিয়ে একটি প্রতিবেদন তৈরির দায়ে এক সাংবাদিককে গ্রেফতার করা হয়েছে।

রাষ্ট্রায়ত্ত টেলিভিশন চ্যানেলকে সরাসরি প্রেসিডেন্টের নিয়ন্ত্রণে নেওয়া এবং সাংবাদিক গ্রেফতারের এই ঘটনার কড়া সমালোচনা করেছে দেশটির সাংবাদিকদের প্রধান সংগঠন।

গত গ্রীষ্মে পার্লামেন্ট স্থগিত এবং বেশিরভাগ ক্ষমতা নিজের নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার পর থেকে দেশটিতে এক-ব্যক্তির শাসন জারি করেছেন প্রেসিডেন্ট সাঈদ। তারপরও তিনি জনগণের অধিকার এবং গণতান্ত্রিক বিপ্লবের মাধ্যমে অর্জিত বাক স্বাধীনতা সমুন্নত রাখার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।

কিন্তু সমালোচকরা বলেছেন, প্রেসিডেন্ট সাঈদ দেশের বিচারিক স্বাধীনতার নিশ্চয়তা দেয় এমন সংস্থার প্রতিস্থাপন এবং সুশীল সমাজের সংগঠনগুলোতে বিদেশি অর্থায়ন বন্ধের মতো উদ্যোগ নিয়েছেন। তিনি ভিন্ন মতাবলম্বীদের প্রতি সামান্যতম সহনশীলতা দেখাতে ব্যর্থ হয়েছেন।

তিউনিশিয়ার রাজনৈতিক অঙ্গনে প্রেসিডেন্ট কাইস সাঈদের পদক্ষেপের বিরোধিতাকে আরও বিস্তৃত করছে সাংবাদিকদের ধর্মঘটের ডাক। যদিও গত কয়েক বছর ধরে দেশটির রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার কারণে পঙ্গু হয়ে যাওয়া জোট সরকারের প্রতি মোহভঙ্গের কারণে তিনি কিছুটা জনপ্রিয়তা ধরে রেখেছেন বলে মনে করা হয়।

২০১১ সালের বিপ্লবের পর তিউনিশিয়ায় যে নতুন গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা গড়ে উঠেছিল, তার অন্যতম অর্জন ছিল বাক এবং গণমাধ্যমের স্বাধীনতা লাভ। তিউনিশিয়ার সেই গণঅভ্যুত্থানের পর দেশটির গণমাধ্যম প্রেসিডেন্ট সাঈদের বিপক্ষে যায় এমন প্রতিবেদন প্রকাশ ও প্রচার করে আসছে। পাশাপাশি তার বিরুদ্ধে দেশটিতে অনুষ্ঠিত বিক্ষোভও গণমাধ্যমে তুলে ধরা হয়েছে।

দেশটির সাংবাদিকদের সংগঠন বলেছে, গণমাধ্যমের এ ধরনের স্বাধীনতা এখন গুরুতর হুমকিতে রয়েছে। সাংবাদিকদের জনসম্মুখে প্রতিবেদন করা এবং রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে রাজনৈতিক বিতর্কে বিরোধীদলীয় নেতাদের অতিথি করার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে।

দেশটির রাষ্ট্রায়ত্ত টেলিভিশনের প্রধান বলেছেন, এ ধরনের কোনো নিষেধাজ্ঞা নেই। কিন্তু গত গ্রীষ্মে প্রেসিডেন্ট সাঈদ রাষ্ট্রায়ত্ত টেলিভিশন চ্যানেলটির নির্বাহী কর্তৃপক্ষের দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে এতে কোনো বিরোধী নেতাকে অতিথি হিসেবে দেখা যায়নি বলে জানিয়েছে রয়টার্স।

তিউনিশিয়ার সাংবাদিকদের সংগঠনের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা আমিরা মোহাম্মদ বলেছেন, প্রেসিডেন্টের প্রচারণার যন্ত্রে পরিণত হয়েছে রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন।

আরসি-১৬