ইজারা ছাড়াই চলছে শ্রীপুর কোয়ারিতে পাথর উত্তোলন

মো. রেজওয়ান করিম সাব্বির, জৈন্তাপুর


মার্চ ২৬, ২০২২
০১:৫৯ পূর্বাহ্ন


আপডেট : মার্চ ২৬, ২০২২
০১:৫৯ পূর্বাহ্ন



ইজারা ছাড়াই চলছে শ্রীপুর কোয়ারিতে পাথর উত্তোলন

জৈন্তাপুর উপজেলার শ্রীপুরে ইজারা ছাড়াই প্রভাবশালী একটি চক্র শ্রমিকদের দিয়ে পাথর উত্তোলন করছে। অবৈধভাবে পাথর উত্তোলন করতে গিয়ে শ্রমিকরা রাংপানি নদীর তীরে সীমান্তের ১২৮০ নম্বর পিলার সংলগ্ন এলাকায় ঢুকে পড়ছেন।

ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সদস্যরা বিভিন্ন সময় ঘটনাস্থলে গেলে পালিয়ে যান তারা। এ পরিস্থিতি চলতে থাকলে যে কোনো সময় অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটতে পারে। 

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, প্রতিদিন কয়েকশত শ্রমিক দিনের আলোতে ১২৮০ নম্বর আর্ন্তজাতিক পিলার এলাকা থেকে বড় বড় পাথর উত্তোলন করে রাংপানি (শ্রীপুর) নদীর ধারে জড়ো করছে। সন্ধ্যার পর নৌকাযোগে পাথর নিয়ে যাওয়া হয় আসামপাড়া, বাংলাবাজার, আদর্শগ্রামসহ বিভিন্ন স্থানে। 

শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, পাথর উত্তোলনে করে নদীর পাশে ঝড়ো করা হয়। এক নৌকা পাথর উত্তোলন করলে আটশ টাকা মজুরি পান তারা। পেটের দায়ে মহাজনের নির্দেশে ঝুঁকি নিয়েই কোয়ারিতে পাথর উত্তোলনের কাজ করেন তারা। 

এ বিষয়ে সীমান্তরক্ষী বাহিনী বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সদস্যরা নিরব ভূমিকা পালন করলেও ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ প্রায়ই বাধা দিচ্ছে। তাদের দেখলে পালিয়ে যান শ্রমিকরা। এভাবে চোর-পুলিশ খেলার মধ্য দিয়ে পাথর উত্তোলন করে যাচ্ছেন তারা। 


কথা হয় একজন পাথর ব্যবসায়ীর সঙ্গে। তিনি নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘বিগত দুইমাস ধরে বন্ধ থাকা শ্রীপুর পাথর কোয়ারি থেকে প্রভাবশালী একটি পাথরখেকু চক্র শ্রমিক দিয়ে পাথর উত্তোলন করে আসছে। সীমান্তে পাথর উত্তোলনের জন্য বিএসএফ বাঁধাও দেয়। তারপরও পাথর উত্তোলন হচ্ছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘পাথর উত্তোলনকে কেন্দ্র করে যে কোনো সময় শ্রীপুর পাথর কোয়ারিতে বিএসএফ গুলি বর্ষণ করতে পারে।’

শ্রীপুর পাথর কোয়ারিতে সাংবাদিকদের অবস্থান শুনে দ্রুত সেখানে পৌঁছান শ্রীপুর বিজিবি ক্যাম্পের দুইজন সদস্য। তখন বিজিবির সদস্যরা পাথর উত্তোলনকারীদের ঘটনাস্থল এলাকা থেকে সরিয়ে দেন। 

জৈন্তাপুর ইউপির সাবেক ইউপি সদস্য ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের ছোট ভাই মো. ইসমাইল আলী বলেন, ‘আমি নিজেও শ্রীপুর পাথর কোয়ারিতে ব্যবসা করতাম। শ্রীপুর কোয়ারিতে পাথর উত্তোলনের অযোগ্য হওয়ায় সরকার ইজারা বাতিল করেছে। এরপর থেকে কোয়ারি বন্ধ রয়েছে। বিএসএফ গুলি চালালে অসহায় শ্রমিকদের জীবন ও জীবিকা হুমকির মুখে পড়বে।’

জৈন্তাপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কামাল আহমদ বলেন, ‘শ্রীপুর কোয়ারি সরকারিভাবে বন্ধ রয়েছে। কোয়ারির জিরো লাইনের কাছাকাছি এলাকা থেকে পাথর উত্তোলন হচ্ছে কি না আমার জানা নেই। আমি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে অবহিত করছি। তিনি সরজমিনে গিয়ে বিষয়টি খতিয়ে দেখবেন।’

জৈন্তাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আল বশিরুল ইসলাম বলেন, ‘জৈন্তাপুরে নতুন যোগদান করেছি। শ্রীপুর কোয়ারি থেকে পাথর উত্তোলনের বিষয়টি কেউ আমাকে কেউ অবগত করেনি। বিষয়টি তদন্তপূর্বক আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

এ বিষয়ে শ্রীপুর বিজিবি ক্যম্পোর মুঠোফোন নাম্বারে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও যুক্ত হওয়া যায়নি।

আরসি-১০