হাসান নাঈম, শাবিপ্রবি
মার্চ ৩১, ২০২২
০৪:৩১ পূর্বাহ্ন
আপডেট : মার্চ ৩১, ২০২২
০৫:৪১ পূর্বাহ্ন
রাত পোহালেই অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (শাবিপ্রবি) শিক্ষক সমিতির নির্বাচন। আজ বৃহস্পতিবার (৩১ মার্চ) অনুষ্ঠিতব্য নির্বাচন নিয়ে উত্তেজনাময় পরিবেশ বিরাজ করছে শিক্ষক মহলে। ইতোমধ্যে নির্বাচনের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছেন বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশন। শেষমুহুর্তে, নির্বাচনকে ঘিরে প্রচার-প্রচারণায় ব্যস্ত সময় পার করছেন পদপ্রার্থীরা।
তবে এবারের নির্বাচনে বিএনপি-জামায়াতপন্থী শিক্ষকেরা প্রার্থীতা না দেয়ায় শুধুমাত্র আওয়ামীপন্থী দুই প্যানেলের শিক্ষকরা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। ফলে, ভোটের মাঠে আওয়ামীপন্থী দু'গ্রুপের শিক্ষকদের মধ্যে জয়-পরাজয় নিয়ে নানান সমীকরণের সৃষ্টি হয়েছে। প্রার্থীহীন জামায়াত-বিএনপি গ্রুপের 'ভোট ব্যাংক' নির্বাচনে জয়ের ক্ষেত্রে ফ্যাক্টর হিসেবে কাজ করায় এবারের নির্বাচনে তাদেরকে জয়ের জন্য ‘ট্রাম্পকার্ড' হিসেবে মনে করছেন অনেকে।
জানা যায়, এবারের নির্বাচনে প্যানেল থেকে নীতিগত সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে না পারায় প্রার্থীতা দেয়নি বিএনপি-জামায়াতপন্থী শিক্ষকরা। তবে প্রার্থীতা না দিলেও ভোট বর্জন না করে ভোট দিতে যাবেন তারা এ প্যানেলের অধিকাংশ ভোটাররা।
অন্যদিকে, কৌশলগত কারণে এ গ্রুপটির একটি বড় অংশ ভোট দেওয়া থেকে বিরত থাকবেন বলে ধারণা করছেন অনেকে। তবুও হাল ছাড়ছেন না প্রার্থীরা। ভোট কেন্দ্রে তাদেরকে নিয়ে আসতে ও নিজেদের ভোটব্যাংককে ভোটের সংখ্যা বৃদ্ধি করতে সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন উভয় গ্রুপের প্রার্থীরা।
কেননা, বিগত বছরগুলোতে নিজেদের প্যানেলের প্রার্থীকে ভোট দিয়ে আসলেও এবারের নির্বাচনে তাদের ভোটে নির্বাচিত হতে যাচ্ছে আওয়ামীপন্থী শিক্ষকরা। তবে আওয়ামীপন্থী কোন প্যানেল তাদের ভোট পাবেন তা নিয়ে এক ধরণের ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে শিক্ষক মহলে।
এ বিষয়ে বিএনপি-জামায়াতপন্থী প্যানেলের কয়েকজন শিক্ষক জানিয়েছেন, নির্বাচনে ভোট দিতে যাওয়া না যাওয়া নিয়ে প্যানেলের কোন বিধি-নিষেধ নেই বলে নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়েছে। তবে সিনিয়র কয়েকজন শিক্ষক ছাড়া বাকী শিক্ষকেরা ভোট দিতে যাবেন বলেও আশা করছেন অনেকে।
জানা যায়, বিগত বছরগুলোতে আওয়ামীপন্থী শিক্ষকদের দুটি প্যানেল ‘মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ শিক্ষক পরিষদ’, ও ‘মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও মুক্তচিন্তা চর্চায় ঐক্যবদ্ধ শিক্ষকবৃন্দ’ এবং বিএনপি-জামায়াতপন্থী প্যানেল ‘মহান মুক্তিযুদ্ধ ও জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরাম’ প্যানেলের শিক্ষকরা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলেও এবারের নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন না বিএনপি-জামায়াতপন্থী শিক্ষকদের প্যানেল।
বিএনপি-জামায়াতপন্থী শিক্ষকদের প্যানেল থেকে প্রার্থী না থাকায় কাদেরকে ভোট দিবেন তারা? এমন প্রশ্ন বিরাজ করছে শিক্ষক মহলে।
এমন প্রশ্নের জবাবে জানা যায়, নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী দু'প্যানেলের শিক্ষকরা মনে করছেন উভয় প্যানেলকে ভোট দিবেন বিএনপি-জামায়াতপন্থী শিক্ষকরা। এর বাইরে বিএনপিপন্থী শিক্ষকরা সিনিয়র-জুনিয়র, সাস্টিয়ান-নন সাস্টিয়ান, আঞ্চলিকতা ও অনুষদ ভিত্তিক পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিবেন কিংবা উভয় প্যানেলে ভাগাভাগি হতে পারে বলে জানিয়েছেন অনেকে।
ভোট ব্যাংকখ্যাত জামায়াত-বিএনপির ভোট পাওয়ার বিষয়ে মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ শিক্ষকবৃন্দ প্যানেলের সভাপতি পদপ্রার্থী অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মস্তাবুর রহমান বলেন, 'এখানে আমরা সবাই শিক্ষক। শিক্ষকদের মধ্যে কোন ধরণের বিভেদ আছে বলে মনে করি না। তবুও, আশাকরি শিক্ষকরা আগামীকাল যোগ্য প্রার্থী দেখেই ভোট দিবেন'।
এ বিষয়ে মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও মুক্তচিন্তা চর্চায় ঐক্যবদ্ধ শিক্ষকবৃন্দ প্যানেলের সভাপতি পদপ্রার্থী অধ্যাপক ড. মো. আখতারুল ইসলাম বলেন, ' শিক্ষকরা একাডেমিক বিষয় চিন্তা করে দলীয় মনোভাব পোষণ না করে ভোট প্রয়োগ করবেন। আমরা আশা করছি বিএনপি-জামাতপন্থী শিক্ষকদের প্যানেল থেকে আমরা সর্বোচ্চ ভোট পাব'।
নির্বাচন কমিশন সুত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার (৩১ মার্চ) সকাল সাড়ে ৯টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মিলনায়তনে এ ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। সাড়ে ৫’শ এর অধিক শিক্ষক থাকলেও অনেকে শিক্ষাছুটিতে থাকায় ৪৬২ জনের মতো শিক্ষক ভোট প্রদান করে আগামী এক বছরের জন্য নির্বাচিত করবেন শিক্ষক সমিতির নেতৃত্ব।
আরসি-০২