প্রধানমন্ত্রী মুক্তিযোদ্ধাদের সার্বিক জীবনমান উন্নয়নে আন্তরিক

সিলেট মিরর ডেস্ক


ডিসেম্বর ১৬, ২০২২
০১:০০ পূর্বাহ্ন


আপডেট : ডিসেম্বর ১৬, ২০২২
০৬:৫৪ অপরাহ্ন



প্রধানমন্ত্রী মুক্তিযোদ্ধাদের সার্বিক জীবনমান উন্নয়নে আন্তরিক
সিলেট প্রেসক্লাবে মুক্তিযোদ্ধা সংবর্ধনা ও আলোচনা সভায় দেবজিৎ সিংহ


সিলেটের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (সার্বিক) দেবজিৎ সিংহ বলেছেন, মুক্তিযোদ্ধারা জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান। স্বাধীনতার ৫১ বছর পরও তাদেরকে বেঁচে থাকার জন্য সংগ্রাম করতে হচ্ছে। যারা জীবন বাজি রেখে যুদ্ধ করে এ দেশকে স্বাধীন করেছেন তাদের অসচ্ছল-অসহায় জীবন যাপন জাতির জন্য লজ্জাকর। এই বিষয়টি সামনে নিয়েই প্রধানমন্ত্রী মুক্তিযোদ্ধাদের সার্বিক জীবনমান উন্নয়নে খুবই আন্তরিক। এর ধারাবাহিকতায় সরকার মুক্তিযোদ্ধাদের ভাতা বৃদ্ধিসহ বেশকিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। তিনি মুক্তিযোদ্ধাদের যথাযত সম্মান প্রদর্শনের আহবান জানান।

শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস ও মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে বৃহস্পতিবার দুপুরে সিলেট প্রেসক্লাবে আয়োজিত মুক্তিযোদ্ধা সংবর্ধনা ও আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এই আহবান জানান।

ক্লাবের আমীনূর রশীদ চৌধুরী মিলনায়তনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে সংবর্ধিত অতিথি ছিলেন মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সিলেট জেলা ইউনিটের সাবেক কমান্ডার ও সিলেট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার বাস্তবায়ন কমিটির অন্যতম সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. শওকত আলী।


সিলেট প্রেসক্লাব সভাপতি ইকবাল সিদ্দিকীর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক আবদুর রশিদ মো. রেনুর পরিচালনায় সভার শুরুতে পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত করেন ক্লাবের নির্বাহী সদস্য মো. আব্দুর রাজ্জাক। বক্তব্য রাখেন ক্লাবের সিনিয়র সহ সভাপতি এম এ হান্নান, ক্লাবের সাবেক নির্বাহী সদস্য মো. মুহিবুর রহমান, এম এ মতিন, ক্লাব সদস্য শেখ আশরাফুল আলম নাসির ও আমিরুল ইসলাম চৌধুরী এহিয়া।

প্রধান অতিথি দেবজিৎ সিংহ আরও বলেন, স্বাধীনতার প্রকৃত সুফল পেতে সমাজের সর্বত্র শুদ্ধাচার চর্চা করতে হবে। অনিয়ম দুর্নীতিরোধে সকলকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় দেশকে গড়ে তুলতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যে স্বপ্ন দেখেছিলেন সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নে মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী প্রজন্মকে অগ্রণী ভুমিকা পালন করতে হবে। রাষ্ট্রীয় কাজ সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে সম্পন্ন করতে সরকার বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। প্রশাসনে শুদ্ধাচার চর্চা শুরু হয়েছে। সমাজের অবক্ষয় রোধে সততা ও নৈতিকতা চর্চার বিকল্প নেই। 

সংবর্ধিত অতিথি বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. শওকত আলী মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচারণ করে বলেন, জীবন বাজি রেখে যুদ্ধ করেছি, শরীরের কিছু হয়নি। কিন্তু স্বাধীন দেশে গ্রেনেড হামলার শিকার হয়ে মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে এসেছি। এখনও একটি গোষ্ঠি এ দেশের স্বাধীনতাকে মেনে নিতে পারেনি। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিরোধীরা এখন সক্রিয়। সিলেট নগরীর গুলশান সেন্টারে মহানগর আওয়ামী লীগের সভায় গ্রেনেড হামলা তারই প্রমান। যে হামলায় ক্ষতবিক্ষত হয়ে আজ আমাকে গ্রেণেডের অসংখ্য স্প্রিন্টার নিয়ে জীবন-যাপন করতে হচ্ছে। তিনি স্বাধীনতা বিরোধীদের ষড়যন্ত্র থেকে সকলকে সতর্ক থাকার আহবান জানান।

সভাপতির বক্তব্যে ইকবাল সিদ্দিকী বলেন, স্বাধীনতার ৫১ বছর পার করছে বাংলাদেশ। এখন বেঁচে থাকা মুক্তিযোদ্ধাদের বয়স কারও ৭০ এর কাছাকাছি, কারও তার চেয়ে বেশি। যারা বেঁচে আছেন তাদের স্বাভাবিক ও মানসম্মত জীবনযাপন নিশ্চিত করতে হবে। তারা আমাদের মধ্যে আর বেশি দিন থাকবেন না। এমনও দিন আসবে যখন কোনো মুক্তিযোদ্ধাকে পাওয়া যাবে না। তাই সকলের উচিত তাদের জীবদ্দশয়াই যথাযথ সম্মান করা। আগামী প্রজন্মের সামনে মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস তুলে ধরতে হবে। তিনি মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ বুদ্ধিজীবীদের তালিকা থেকে বিভ্রান্তি দূর করে সঠিক তালিকা প্রনয়ণের জন্য সকারের প্রতি আহবান জানান।

সভায় উপস্থিত ছিলেন ক্লাব সদস্য চৌধুরী দেলওয়ার হোসেন জিলন, সাবেক নির্বাহী সদস্য আনিস রহমান, সাবেক পাঠাগার ও প্রকাশনা সম্পাদক খালেদ আহমদ, সাবেক নির্বাহী সদস্য তকুল রানা, ক্লাব সদস্য সিন্টু রঞ্জন চন্দ, আবুল কালাম কাওছার, এম রহমান ফারুক ও শাহ শরিফ উদ্দিন। আরও উপস্থিত ছিলেন, সাংবাদিক নাবিল হোসেন ও মোজাম্মেল হক। 

এএন/০১