সিলেট মিরর ডেস্ক
মে ০৭, ২০২৩
০৭:৪৮ অপরাহ্ন
আপডেট : মে ০৭, ২০২৩
১১:০৬ অপরাহ্ন
ভারতের উত্তরপূর্বাঞ্চলীয় মণিপুর রাজ্যে চলমান সহিংসতা দমনে সেখানে কড়া নিরাপত্তা জারি করা হয়েছে। নিরাপত্তা বাহিনীর ব্যাপক উপস্থিতি ও তীক্ষ্ন নজরদারি চলছে। তবে এর মাঝেও নতুন করে সংঘর্ষের খবর পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছে আল জাজিরা।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শুক্রবার রাতে সংঘর্ষের পর সেখানের পরিস্থিতি এখনও বেশ থমথমে। দেশটির শীর্ষ পুলিশ কর্মকর্তারা সতর্ক করেছে, পুলিশ স্টেশন থেকে দাঙ্গাকারীরা অস্ত্র ও গোলাবারুদ চুরি করেছে।
এর আগে দেশটির কর্মকর্তারা জানান, চলমান সহিংসতায় নিহতের সংখ্যা ৫৪ জন। তবে বিভিন্ন সূত্র নিহতের সংখ্যা বিভিন্ন জানাচ্ছে। গতকাল শনিবার রাজ্যের রাজধানীতে দোকান ও বিভিন্ন মার্কেট খুলেছে। সেইসঙ্গে রাস্তায় চলেছে গাড়ি। প্রধান প্রধান জায়গা ও রাস্তায় দেশটির নিরাপত্তা বাহিনীর ব্যাপক উপস্থিতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
মণিপুর সরকারের নিরাপত্তা উপদেষ্টা কুলদীপ সিং সাংবাদিকদের বলেন, ইম্ফালে ১৮ থেকে ২০ জন নিহতের খবর পাওয়া গেছে। যদিও আমরা তদন্ত করছি এসব হতাহত চলমান সহিংসতায় হয়েছে না অন্য কারণে।
তিনি আরও বলেন, বিভিন্ন হাসপাতালে অন্তত আহত ১০০ জনকে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। গত কয়েক দিনে রাজ্যে পাঁচ শতাধিক বাড়ি পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে, সেইসঙ্গে কিছু গাড়িও পুড়ে দেওয়া হয়েছে।
দেশটির এক প্রতিরক্ষা মুখপাত্র বলেন, চুরাচাদপুর, মোরেহ, কাকচিং এবং কাংপোকপি জেলা সেনাবাহিনী পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে এনেছে। একাধিক সূত্র জানিয়েছে, জাতিগত লড়াইয়ে অনেকে নিহত হয়েছেন। তবে পুলিশ এ সংখ্যা নিশ্চিত করতে রাজি হয়নি। ইম্ফালের পূর্ব এবং পশ্চিম জেলা, চুরাচাদপুর এবং বিশেনপুর থেকে লাশ আনা হয়েছে।
গত শুক্রবার পর্যন্ত দেশটির সেনাবাহিনী ও কেন্দ্রীয় পুলিশ বাহিনী ১৫ থেকে ২০ হাজার মানুষকে উপদ্রুত এলাকাগুলি থেকে সরিয়ে নিয়ে গেছে। রাজ্যের পুলিশ মহানির্দেশক পি ডউঙ্গেল এ তথ্য জানান। সেখানকার এসপি জানান, প্রায় এক হাজার জন মণিপুর থেকে আসামের কাছাড় জেলায় আশ্রয় নিয়েছেন।
বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মনিপুরের সংখ্যাগুরু মেইতেই গোষ্ঠী দীর্ঘদিন ধরে তপশীলি উপজাতি বা এসটি তালিকাভুক্ত হওয়ার দাবি জানিয়ে আসছিল। ইম্ফল উপত্যকায় এসব উপজাতির বসবাস।
অন্যদিকে পাহাড়ি অঞ্চলে যে আদিবাসীরা বসবাস করেন তাদের বড় একটা অংশ মূলত কুকি চিন জনগোষ্ঠীর মানুষ। সেখানে নাগা কুকিরাও যেমন থাকেন কিছু সংখ্যায়, তেমনই আরও অনেক গোষ্ঠী আছে। মেইতেইরা তপশীলী উপজাতির তকমা পেয়ে গেলে পাহাড়ি অঞ্চলের মানুষ বঞ্চিত হবেন, এ শঙ্কা ছিল।
তবে গত ৩ মে হাইকোর্ট মেইতেইদের তপশীলি উপজাতি হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার বিষয়টি সরকারকে বিবেচনা করতে বলে। এর বিরুদ্ধে গত বুধবার পাহাড়ি উপজাতি জনগোষ্ঠী বিক্ষোভ মিছিল করে। এখান থেকেই সহিংসতার শুরু। এরপর তা খুব দ্রুত পুরো রাজ্যেই ছড়িয়ে পড়ে।
এএফ/০২