হাসপাতালে হিমুর লাশ রেখে নিরুদ্দেশ প্রেমিককে খুঁজছে পুলিশ

সিলেট মিরর ডেস্ক


নভেম্বর ০৩, ২০২৩
১২:৫৯ পূর্বাহ্ন


আপডেট : নভেম্বর ০৩, ২০২৩
০১:০০ পূর্বাহ্ন



হাসপাতালে হিমুর লাশ রেখে নিরুদ্দেশ প্রেমিককে খুঁজছে পুলিশ


প্রেমিকের সঙ্গে দ্বন্দ্বের জেরেই অভিনেত্রী হোময়রা হিমুর মৃত্যু হয়েছে। হিমুর ওই প্রেমিক মোহাম্মদ জিয়াউদ্দিন রাফি নিজেও বিবাহিত। তাঁর সঙ্গে হিমুর দীর্ঘদিনের প্রেম ছিল। রাফির আলাদা সংসার রয়েছে।

আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় এসব তথ্য জানিয়েছেন উত্তরা জোনের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (এডিসি) মির্জা সালাউদ্দিন।  

মির্জা সালাউদ্দিন বলেন, ‘অভিনেত্রী হিমু ছিলেন ব্রোকেন ফ্যামিলির। তিনি তাঁর এক পালিত ভাইকে নিয়ে উত্তরার ফ্ল্যাটে থাকতেন। তাঁর সঙ্গে এক ছেলের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। ওই প্রেমিকের সঙ্গে হিমুর দ্বন্দ্ব হয়েছিল। এরপরই হিমু এ ঘটনা ঘটিয়েছেন। এ ঘটনায় কাউকে আটক বা গ্রেপ্তার করা হয়নি। দুজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে।’ 

এটি হত্যা না আত্মহত্যা—জানতে চাইলে এডিসি মির্জা সালাউদ্দিন বলেন, এটি এখনই বলা যাচ্ছে না। হিমুর মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্তের পর বিস্তারিত বলা যাবে। এ ঘটনায় আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন। পালিয়ে যাওয়া প্রেমিককে আটকের চেষ্টা করা হচ্ছে। 

এ সংক্রান্ত পূর্বের নিউজ পড়ুন: ছোট পর্দার অভিনেত্রী হুমায়রা হিমু আর নেই

এর আগে আজ বিকেলে রাজধানীর উত্তরার নিজ ফ্ল্যাটে সিলিং ফ্যানের হ্যাঙ্গারে রশি দিয়ে গলায় ফাঁস লাগানো অবস্থায় ঝুলছিলেন হোময়রা হিমু। পরে তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

উত্তরা আধুনিক মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, হিমুর মরদেহটি ময়নাতদন্তের জন্য শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হচ্ছে। সেই সঙ্গে হাসপাতাল থেকে হিমুর পালিত ভাই ও খালাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে যাচ্ছে উত্তরা পশ্চিম থানা–পুলিশ। 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পুলিশের একজন পরিদর্শক বলেন, ‘মোহাম্মদ জিয়াউদ্দিন রাফি নামের বিবাহিত এক যুবকের সঙ্গে অভিনেত্রী হোময়রা হিমুর দীর্ঘ দিনের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। ছেলেটি তাঁর ফ্ল্যাটে প্রায়ই আসা যাওয়া করত। মাঝে মাঝে ছেলেটি হিমুর সঙ্গে থাকত।’ 

তিনি আরও বলেন, ‘আজ বিকেল ৩টার দিকে হিমুর বাসায় এসেছিল রাফি। পরে তাদের মধ্যে কোনো বিষয় নিয়ে দ্বন্দ্ব হয়। তখন হিমুর পালিত ভাই মিহির ওয়াশ রুমে গিয়েছিল। হিমু রুমে একাই ছিল। এরপর মিহির বের হয়ে দেখে হিমু ফ্যানের হ্যাঙ্গারের সঙ্গে ঝুলছে। রাফি ও মিহির তখন হিমুকে হাসপাতালে নিয়ে আসে।’ 

এ সংক্রান্ত পূর্বের নিউজ পড়ুন: অভিনেত্রী হোমায়রা হিমুর রহস্যজনক মৃত্যু

এই পুলিশ পরিদর্শক আরও বলেন, হাসপাতালে নিয়ে আসার পর যখন চিকিৎসক পুলিশকে বিষয়টি জানায়, তখনই রাফি হিমুর মোবাইল ফোন নিয়ে পালিয়ে যায়। তিনি আরও বলেন, হিমুর গলায় ইউ আকৃতির দাগ ব্যতীত অন্য কোথাও কোনো আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে তিনি আত্মহত্যা করেছেন। বিস্তারিত ময়নাতদন্তের পর জানা যাবে। 

অভিনয় শিল্পী সংঘের সভাপতি আহসান হাবিব নাসিম বলেন, ‘হিমুর ভাই ও বয়ফ্রেন্ড তাঁকে উত্তরা আধুনিক মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গিয়েছিল। হাসপাতালের দায়িত্বরত চিকিৎসক পুলিশকে খবর দিলে হিমুর বয়ফ্রেন্ড পালিয়ে যান। সঙ্গে করে হিমুর মোবাইল ফোনটিও নিয়ে যান।’ 

উত্তরা জোনের সিনিয়র সহকারী পুলিশ কমিশনার (এসি) জ্যোতির্ময় সাহা আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘অভিনেত্রী হুমায়রা হিমুর রুমে সিলিং ফ্যান ছিল না। ফ্যান লাগানোর ওই হ্যাঙ্গারে লাইলনের রশি দিয়ে ঝুলন্ত অবস্থায় তাঁকে পাওয়া যায়। পরে তাঁর স্বজনেরা উদ্ধার করে উত্তরা আধুনিক মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।’

জ্যোতির্ময় সাহা আরও বলেন, ‘তাৎক্ষণিকভাবে এটি হত্যা না আত্মহত্যা তা জানা যায়নি। আমরা ঘটনাস্থল থেকে বিভিন্ন আলামত সংগ্রহ করছি। বিস্তারিত জানার চেষ্টা চলছে। তদন্ত সাপেক্ষে পরবর্তীতে জানানো যাবে।’


এএফ/০৪