কে ছিলেন এই 'হেনরি কিসিঞ্জার'

সিলেট মিরর ডেস্ক


নভেম্বর ৩০, ২০২৩
১২:৪৩ অপরাহ্ন


আপডেট : নভেম্বর ৩০, ২০২৩
১২:৫১ অপরাহ্ন



কে ছিলেন এই 'হেনরি কিসিঞ্জার'

যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হেনরি কিসিঞ্জার মারা গেছেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ১০০ বছর। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ পরবর্তী সময়ে মার্কিন কূটনীতির প্রতীক হিসেবে বিবেচনা করা হয় তাঁকে।

তার মৃত্যুতে আমেরিকার কূটনৈতিক ইতিহাসের একটি অধ্যায় সমাপ্ত হল বলে মনে করছেন অনেকে।

১৯২৩ সালের ২৭ মে জার্মান এক ইহুদি পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন হেনরি কিসিঞ্জার। নাৎসি শাসন আমলে জার্মানি থেকে পালিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে যায় তার পরিবার। সেখানেই তার বেড়ে ওঠা। এরপর ১৯৪৩ সালে মার্কিন নাগরিক হন হেনরি। আর মার্কিন সেনাবাহিনীতে এবং পরে কাউন্টার ইন্টেলিজেন্স কর্পসে তিন বছর চাকরি করেন।

আন্তর্জাতিক সম্পর্ক নিয়ে পিএইচি করার পর দীর্ঘ দিন আমেরিকার হাভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে এই বিষয়ে অধ্যাপনাও করেন তিনি। তবে বেশি পরিচিতি পান রাজনীতিতে এসে।

১৯৭০ এর দশকে মার্কিন পররাষ্ট্রনীতির অপর নাম ছিল 'হেনরি কিসিঞ্জার'।

আমেরিকার দুই প্রেসিডেন্ট রিচার্ড নিক্সন এবং জেরাল্ড ফোর্ডের সময়ে পররাষ্ট্র সচিব এবং জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টার দায়িত্ব পালন করেছেন কিসিঞ্জার। প্রথমে রিচার্ড নিক্সনের নেতৃত্বাধীন প্রশাসনে, পরে জেরাল্ড ফোর্ডের আমলে।

মনে করা হয় যে, বহু আন্তর্জাতিক সঙ্কটে আমেরিকার কূটনৈতিক অবস্থানের নেপথ্যে মূলত কিসিঞ্জারেরই হাত ছিল। পররাষ্ট্র সচিব হিসাবে ১৯৭৩ সালে ইসরায়েল এবং ফিলিস্তিনের মধ্যে হওয়া ইয়ম কিংপুরের যুদ্ধ থামাতে তাঁর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা র কথা স্মরণ করেন কেউ কেউ। আবার ভিয়েতনাম যুদ্ধের পর প্যারিস শান্তি চুক্তির অন্যতম স্থপতি হিসাবেও তাঁর অবদানের কথা স্বীকার করেন অনেকে।

ভিয়েতনাম যুদ্ধ বন্ধে উদ্যোগ নেওয়ায় তাকে নোবেল শান্তি পুরস্কার দেওয়া হয়। তবে সমালোচকরা বলেন যে, কিসিঞ্জার মূলত ভিয়েতনামে মার্কিন বাহিনীর পরাজয় ঠেকাতে যুদ্ধ বন্ধের উদ্যোগ নিয়েছিলেন।

কিন্তু, ভিয়েতনাম যুদ্ধের সময় প্রতিবেশী কম্বোডিয়ায় নির্বিচার বোমা বর্ষণের অভিযোগে প্রচুর সমালোচনা ও নিন্দার মুখে পড়েন তিনি।

তবে ১৯৭৩ সালের আরব-ইসরায়েল যুদ্ধের পর তাঁর শাটল ডিপ্লোম্যাসির মাধ্যমে মিসরকে ইসরায়েলের শত্রুপক্ষ থেকে সরিয়ে পরম মিত্রে পরিণত করা এবং সে সময় সিরিয়া-ইসরায়েল সংঘাতের আপাতসমাপ্তি তার সাফল্য গাথায় থাকলেও তাতে বেশি উপকৃত হয়েছিল ইসরায়েল।

তবে ভারত ও বাংলাদেশের কাছে ‘খলনায়ক’ হিসাবেই কুখ্যাত সাবেক এই মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। ১৯৭১ সালে ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর সমালোচনার মুখে পড়েছিল কিসিঞ্জারের ভূমিকা। আর এ কারণে নয়াদিল্লির সঙ্গে দূরত্ব বেড়েছিল ওয়াশিংটনের। কারণ, মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তানের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন তিনি।

তৎকালীন পাকিস্তানি জেনারেল ইয়াহিয়ার বাংলাদেশে গণহত্যা বিরুদ্ধে অবস্থান নিতে প্রত্যাখ্যান করেছিলেন হেনরি কিসিঞ্জার। পূর্ব-পাকিস্তান (বর্তমানে বাংলাদেশ) রক্তে লালা হয়ে উঠলেও ভারতকে চাপে ফেলতে মার্কিন নৌবহর পাঠিয়েছিল নিক্সন-কিসিঞ্জার জুটি।

 আরসি-০২