ধর্মপাশা ও মধ্যনগর বোরো ধানের বাম্পার ফলনের আশা

শামীম আহমেদ, ধর্মপাশা


মার্চ ২৯, ২০২৪
০৯:৫৯ অপরাহ্ন


আপডেট : মার্চ ৩১, ২০২৪
০৩:১১ অপরাহ্ন



ধর্মপাশা ও মধ্যনগর বোরো ধানের বাম্পার ফলনের আশা
অনুকুল আবহাওয়ায় খুশি কৃষকেরা


চৈত্র মাসে সাধারণত কাঠফাটা রোদ্দুর থাকে। হাওর, খাল, বিল, নদ-নদীর পানি শুকিয়ে চৌচির হয়ে যায়। বৃষ্টির অভাবে বোরো জমিতে সেচ কাজ হয় ব্যাহত। কিন্তু এবার যেন প্রকৃতি বেশ দারাজ। আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় এবং গত দুই সপ্তারের মধ্যে তিন দিন  বৃষ্টিপাত হওয়ায় সুনামগঞ্জের ধর্মপাশা ও মধ্যনগর উপজেলায় বোরো ধানের বাম্পার ফলনের আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা। বেশ খোশ মেজাজেই কৃষকেরা। হাওরের উৎপাদিত বোরো জমির ধান কেটে ঘরে তোলার অপেক্ষার প্রহর গুণছেন হাওরপাড়ের কৃষকেরা।

ধর্মপাশা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার কার্যালয় ও স্থানীয় এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে,  ধর্মপাশা ও মধ্যনগর উপজেলায় ১০টি ইউনিয়নে ছোটবড় ৮০টি হাওর রয়েছে। এই দুই উপজেলায় এবার বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৩১হাজার ৮৫২হেক্টর। কিন্তু  আবাদ করা হয়েছে ৩১হাজার ৯০২হেক্টর। যা লক্ষমাত্রার চেয়ে ৫০হেক্টর বেশি। বোরো ধান উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে এক লাখ ৯৪হাজার ৬০২মেট্রিক টন ধান। চৈত্রের মাসের ১তারিখ থেকে ১৫চৈত্র পর্যন্ত  ধর্মপাশা ও মধ্যনগর উপজেলায় তিনদিন বৃষ্টি হয়েছে।তবে চৈত্র মাসের দিনের আলোতে ঝলমলে রোদের  দেখা মিলছে। সময়মতো বৃষ্টি হওয়ায় ধান গাছে পোকামাকড়ের আক্রমণের তীব্রতা কমেছে।  পাশাপাশি বোরো জমিতে পানি সেচের প্রয়োজনীয়তাও মিটেছে।

ধর্মপাশা উপজেলার সেলবরষ ইউনিয়নের বীর দক্ষিণ পূর্বপাড়া গ্রামের কৃষক রফিকুল ইসলাম (৬০) বলেন, এই বার চৈত্র মাসও গরম কম।, কাঠ ফাডা রইদও তেমন নাইগা। সময়মতো বৃষ্টিও অইতাছে। আবহাওয়াডাও ভালা যাইতাছে। অহন যা অবস্থা তা থাকলে এইবার বোরো ধানের বাম্পার ফলন অইব। 

হাওর বাঁচাও আন্দোলনের মধ্যনগর উপজেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলার মধ্যনগর ইউনিয়নের মধ্যনগর বাজারের বাসিন্দা কৃষক আলা উদ্দিন (৪৫) বলেন, ছোট বেলা থেকে দেখে আসছি যে, চৈত্র মাসে বৃষ্টি খুবই কম হয়। কিন্তু এবার সময়মতো বৃষ্টি হয়েছে। আবহাওয়াও খুব চমৎকার। বৃষ্টি হওয়ায় বোরো জমিতে সেচ দিতে হচ্ছেনা। এই বৃষ্টি এখন কৃষকদের আশীবার্দ হিসেবে পরিণত হয়েছে। ভয়াবহ কোনো রকম প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে এবার রেকর্ড পরিমাণ বোরো ধান উৎপাদন হবে ইনশাআল্লাহ। 

ধর্মপাশা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মীর হাসান আল বান্না  বলেন, এখন বোরো জমির ধান গাছ থেকে ফুল বেরোচ্ছে। এই ফুল বেরোনোর ২০থেকে ২৫দিনের মধ্য ধান কর্তন করা সম্ভব হবে। এবার সময়মতো বৃষ্টি হয়েছে। এতে করে বোরো জমির ধান গাছে পোকামাকড় আক্রমণের তীব্রতাও কমেছে। আবহাওয়া অনুকুলে থাকলে এবং ভয়াবহ কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে এবার বোরো ধানের বাম্পার ফলন হবে বলে আমরা আশা করছি।


এএফ-০৪