সিলেটে একমাত্র ক্যামব্রিজ পরীক্ষাকেন্দ্রের স্বীকৃতি পেল রাইজ স্কুল

সিলেট মিরর ডেস্ক


এপ্রিল ২৭, ২০২৪
০৯:১৯ অপরাহ্ন


আপডেট : এপ্রিল ২৭, ২০২৪
১০:০৩ অপরাহ্ন



সিলেটে একমাত্র ক্যামব্রিজ পরীক্ষাকেন্দ্রের স্বীকৃতি পেল রাইজ স্কুল


ব্রিটিশ কাউন্সিল নির্ধারিত সিলেটে একমাত্র ক্যামব্রিজ এক্সাম ভেন্যু (পরীক্ষা কেন্দ্র) হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে সিলেটের সুনামধন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রয়েল ইন্সটিটিউট অফ স্মার্ট অ্যাডুকেশন (রাইজ) স্কুুল। 

আজ শনিবার (২৭ এপ্রিল) সিলেট নগরের সুবিদবাজারস্থ স্কুল ক্যাম্পাসে সংবাদ সম্মেলনে এ অনন্য স্বীকৃতির বিষয়টি জানান রাইজ স্কুল কর্তৃপক্ষ।


সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন রয়েল অ্যাডুকেয়ার লিমিটেডের পরিচালক ফাহিম আহমদ চৌধুরী। 

এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ক্যামব্রিজ অ্যাসেসমেন্ট ইন্টারন্যাশনাল অ্যাডুকেশনের বাংলাদেশ কান্ট্রি ম্যানেজার শাহিন রেজা। বক্তব্য দেন রয়েল অ্যাডুকেশন লিমিটেডের চেয়ারম্যান ফয়সল আহমদ চৌধুরী। 

স্বাগত বক্তব্য দেন রাইজ স্কুলের অধ্যক্ষ ফারজানা করিম। উপস্থিত ছিলেন, ব্রিটিশ কাউন্সিল এর এক্সামিনেশন সার্ভিস ম্যানেজার মো. মেছবাহ উদ্দিন, রয়েল অ্যাডুকেয়ার লিমিটেডের ভাইস চেয়ারম্যান মো. মিজানুর রহমান চৌধুরী, ম্যানেজিং ডিরেক্টর গোলাম রব্বানি চৌধুরী, ইউরো কিডস সিলেটের সেন্টার হেড রুশিনা চৌধুরী। অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলেন রোহেনা সুলতানা।


লিখিত বক্তব্যে ফাহিম আহমদ চৌধুরী বলেন, ‘রয়েল ইন্সটিটিউট অফ স্মার্ট অ্যাডুকেশন (রাইজ) স্কুুল সিলেটে প্রতিষ্ঠিত সর্বপ্রথম এবং একমাত্র ক্যাম্ব্রিজ নিবন্ধিত স্কুল। এই স্কুল ২০১৫ সালে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর থেকেই অত্যন্ত সাফল্যের সাথে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। এরই ধারাবাহিকতায় সম্প্রতি রাইজ স্কুল ব্রিটিশ কাউন্সিল নির্ধারিত সিলেটের একমাত্র ক্যামব্রিজ এক্সাম ভেন্যু (পরীক্ষা কেন্দ্র) হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়া অত্যন্ত আনন্দের বিষয়।’


রাইজ স্কুলের দীর্ঘ পথচলায় সাফল্যের উদাহরণ তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘আমাদের সফলতা অনেকগুলো গল্প তৈরি হয়েছে। তার মধ্যে কয়েকটি আজ আপনাদের সামনে উপস্থাপন করতে চাই। বিগত কয়েক বছর থেকে এই বিদ্যাপীঠের শিক্ষার্থীরা ডেইলি স্টার অ্যাওয়ার্ড পেয়েছে। সম্প্রতি বুয়েটে অনুষ্ঠিতব্য বায়োম্যাড অলিম্পিয়াডে আমাদের শিক্ষার্থীরা কৃতিত্বের সঙ্গে অংশগ্রহণ করে উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করেছে। এমনকি ও-লেভেল এবং এ- লেভেল পরীক্ষায় কামব্রিজ কান্ট্রি হাইয়েস্ট এচিভার হিসেবেও ভূষিত হয়ে আসছে।’

তিনি আরও জানান, বিগত কয়েক বছরে ৬৩টি ‘এ স্টার’ পাওয়ার গৌরব অর্জন করেছে এই বিদ্যাপিঠের শিক্ষার্থীরা। এরই ধারাবাহিকতায় গত কয়েক বছরে বাংলাদেশের স্বনামধন্য পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ভর্তির পাশাপাশি বিশ্বের খ্যাতনামা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতেও শিক্ষার্থীরা সাফল্যের সঙ্গে অধ্যয়নের সুযোগ পেয়েছে।’


উদাহরণ হিসেবে তিনি যুক্তরাজ্যের লন্ডন স্কুল অফ ইকনমিক্স, কিংস কলেজ লন্ডন, গোল্ড স্মিথ ইউনিভার্সিটি লন্ডন, সিটি ইউনিভার্সিটি অফ লন্ডন, মিডলসেক্স ইউনিভার্সিটি, ডি মন্টফর্ট ইউনিভার্সিটি, ইউনিভার্সিটি অফ লিস্টার, ইউনিভার্সিটি অফ বার্মিংহাম, কানাডার ইউনিভার্সিটি অফ ম্যানিটোবা, অস্ট্রেলিয়ার ইউনিভার্সিটি অফ উলুংগং, ইউনিভার্সিটি অফ টেকনলজি মালয়েশিয়া এবং যুক্তরাষ্ট্রসহ বেশকিছু বিশ্ববিদ্যালয়ের কথা তুলে ধরেন তিনি।

রাইজ স্কুলের লক্ষ্য-উদ্দেশ্য তিনি বলেন, ‘রাইজ স্কুলের লক্ষ্য- স্মার্ট প্রযুক্তির মাধ্যমে আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন উন্নত শিক্ষা প্রদান এবং একটি সৃজনশীল দক্ষ প্রজন্ম গড়ে তোলা। যারা শুধুমাত্র শিক্ষাক্ষেত্রেই এগিয়ে থাকবে না, পাশাপাশি ব্যবহারিক জ্ঞান এবং নৈতিক গুণাবলী সম্পন্ন একটি আত্মনির্ভরশীল প্রজন্ম হিসেবে বিশ্বের বুকে মাথা উঁচু করে দাঁড়াবে। একই সাথে জাতীয় ঐতিহ্য, সংস্কৃতি এবং ভাষা সম্পর্কে নিজেদেরকে সচেতন করে গড়ে তুলবে। আর সেই লক্ষ্যেই রাইজ স্কুল এগিয়ে যাচ্ছে।’


স্কুলে আধুনিক সুযোগ-সুবিধার কথা জানিয়ে ফাহিম চৌধুরী বলেন, ‘রাইজ স্কুলে সর্বাধুনিক সুযোগ-সুবিধা প্রদানের মধ্য দিয়ে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালিত হয়ে আসছে। অত্যাধুনিক স্মার্ট-বোর্ড প্রযুক্তি, দেশি বিদেশি প্রায় সহস্রাধিক বইয়ের সমাহার নিয়ে একটি বিশাল লাইব্রেরি, উন্নত মান সম্পন্ন ইকুইপমেন্ট সমৃদ্ধ দুটি সাইন্স ল্যাব, উন্নত প্রযুক্তি নির্ভর সুবিশাল দুটি কম্পিউটার ল্যাব রয়েছে এ প্রতিষ্ঠানে। এছাড়া স্কুলে রয়েছে বিশাল খেলার মাঠসহ অনন্য সাধারণ স্পোর্টস ফ্যাসিলিটিস, যা শহরের স্কুল গুলোতে খুবই কম চোখে পড়ে। এখানে সুবিশাল পরিসরে রয়েছে আর্ট এন্ড ডিজাইন স্টুডিও যেখানে শিক্ষার্থীরা তাদের সুপ্ত প্রতিভার বিকাশ ঘটাতে পারে।’

রাইজের সহযোগী প্রতিষ্ঠান ইউরোকিডস প্রিতস্কুলে কার্যক্রম তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘ইউরোকিডস প্রিতস্কুল সিলেটে প্রতিষ্ঠিত সর্বপ্রথম প্রিতস্কুল।’

রয়েল এডুকেয়ার লিমিটেডের ডিরেক্টর ফাহিম আহমদ চৌধুরী আরও বলেন, ‘আমাদের প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা বিশ্বব্যাপি স্বীকৃত ডিউক অফ এডিনবার্গ ক্লাবে যুক্ত হয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা, দিকনির্দেশনা এবং দল গত কাজ করাসহ প্রয়োজনীয় দক্ষতা বিকাশের জন্যে বিভিন্ন কর্মশালায় অংশ নিচ্ছে। এছাড়াও ফুটবল, ব্যাডমিন্টন, সুইমিং, ফটোগ্রাফি, গ্রাফিক্স ডিজাইন, ডিবেট, কোডিং, ক্রিয়েটিভ রাইটিং সহ বিভিন্ন ধরনের ক্লাব সুবিধাও রয়েছে।’


বাংলাদেশের মধ্যে একমাত্র রাইজ স্কুলই শারীরিক শিক্ষা (ফিজিকাল এডুকেশন) বিষয়টিকে আইজিসিএসইর মূল বিষয় হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করার গৌরব অর্জন করেছে- জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এ বিষয় অধ্যয়নের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা শুধুমাত্র খেলাধুলায় পারদর্শী হবে নয়; তাদের শারীরিক ও মানসিক বিকাশের পাশাপাশি সুস্থ ও দক্ষ প্রজন্ম হিসেবে নিজেদের গড়ে তুলবে। বিশ্বের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে উচ্চতর শিক্ষা অর্জনের মধ্য দিয়ে ক্রীড়া বিজ্ঞান, ফিটনেস এবং স্বাস্থ্যসেবায় ভবিষ্যৎ ক্যারিয়ার গঠনে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে।’

এ বিষয়ের অন্তর্ভুক্ত কার্যক্রম হিসেবে শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন সময়ে হাইকিং, ক্যাম্পিং, সাইক্লিং কার্যক্রমে নিয়মিত অংশগ্রহণ করে আসছে। তিনি আশা প্রকাশ করেন, রাইজ স্কুলের পথ ধরে অন্যান্য স্কুলগুলোও শারীরিক শিক্ষার গুরুত্ব উপলব্ধি করতে সক্ষম হবে এবং এই বিষয়টিকে তাদের একাডেমিক কার্যক্রমে অন্তর্ভুক্ত করবে।


এএফ/০৬