ধর্মপাশা উপজেলা নির্বাচনের ছয় চেয়ারম্যান প্রার্থীর দুজন কোটিপতি!

শামীম আহমেদ, ধর্মপাশা


মে ১৮, ২০২৪
১০:৪৪ অপরাহ্ন


আপডেট : মে ২০, ২০২৪
০১:২১ পূর্বাহ্ন



ধর্মপাশা উপজেলা নির্বাচনের ছয় চেয়ারম্যান প্রার্থীর দুজন কোটিপতি!


সুনামগঞ্জ জেলার ধর্মপাশা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যানপদে ছয় জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তাদের মধ্যে অর্থবিত্তে সবচেয়ে এগিয়ে নাসরিন সুলতানা দিপা ও এস আর হায়দার চৌধুরী। তারা দুইজনই কোটিপতি।

নাসরিন সুলতানা উপজেলার সুখাইড় রাজাপুর উত্তর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান পদে ছিলেন। উপজেলা নির্বাচনে অংশ নিতে তিনি ইউপি চেয়ারম্যান পদ থেকে অব্যাহতি নেন গত ১৮এপ্রিল। তিনি সুনামগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের মহিলা বিষয়ক সম্পাদক। তাঁর স্বামী আসাদুজ্জামান সেন্টুও জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক। অপর কোটিপতি প্রার্থী এস আর হায়দার সুনামগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পদে ও আইন পেশায় নিয়োজিত রয়েছেন।

নির্বাচনে অংশ নিতে প্রার্থীদের জমা দেওয়া হলফনামা ঘেটে এসব তথ্য জানা গেছে। 

হলফনামা ঘেটে দেখা যায়, চেয়ারম্যান প্রার্থী নাসরিন সুলতানা দিপার শিক্ষাগত যোগ্যতা অষ্টম শ্রেণি। পেশা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান/ সমাজ সেবা। ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান হিসেবে বাৎসরিক আয় ৫৪ হাজার টাকা, নগদ ও ব্যাংকে টাকার পরিমাণ দুই কোটি ৮৯লাখ ৮৪ হাজার ৭১৪ টাকা ৭৫ পয়সা। বন্ড, সঞ্চয়পত্র,স্টক একচেঞ্জ ও তালিকাভূক্ত কোম্পানির শেয়ার রয়েছে ৩২ লাখ ৫০ হাজার টাকা। স্বর্ণ ও অন্যান্য মূল্যবান ধাতু রয়েছে দুই লাখ টাকার। ইলেকট্রনিক্স সামগ্রী এক লাখ টাকা ও আসবাবপত্র রয়েছে এক লাখ টাকার। স্থাবর সম্পত্তি রয়েছে তিন কাঠা ও ১৩ দশমিক ৫শতক ভূমি।যার মুল্য ৪৮লাখ ৪হাজার টাকা। দালান (আবাসিক বা বাণিজ্যিক) এর মুল্য  পাঁচ লাখ টাকা।

চেয়ারম্যান প্রার্থী এস আর হায়দার চৌধুরীর শিক্ষাগত যোগ্যতা বি.কম (সম্মান), এলএলবি। তারঁ পেশা আইনজীবী ও ব্যবসা। ব্যবসা থেকে বাৎসরিক আয় ৪৭ লাখ ৮৫হাজার টাকা। আইন পেশা থেকে বাৎসরিক আয় পাঁচ লাখ ৪১ হাজার ৯৭৮ টাকা, নগদ রয়েছে দুই লাখ টাকা। ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমাকৃত টাকার পরিমান ২৩ লাখ ৬২ হাজার ৬৫২ টাকা, এফডিআর  ৫০ লাখ টাকা, বিভিন্ন ধরণের সঞ্চয়পত্র ও স্থায়ী আমানত ৩০ লাখ টাকা, ইলেকট্রনিক্স সামগ্রী ৫০ হাজার টাকা, আসবাবপত্র ৫০ হাজার টাকা, ব্যবসার পুঁজি ৩৪ লাখ ৮ হাজার ৭২৫ টাকা। কৃষি জমির পরিমাণ ০ দশমিক ০৭৮০ একর। যার মুল্য ২৪ লাখ টাকা, অকৃষি জমি ০ দশমিক ০৬১৭৪০ একর। যার মুল্য ২৯ লাখ টাকা। পাকা দালান ১টি যার মুল্য ২০ লাখ টাকা। ১০ ভরি স্বর্ণ যার মুল্য এক লাখ টাকা। 

চেয়ারম্যান প্রার্থী শামীম আহমেদ।শিক্ষাগত যোগ্যতা এইচএসসি। পেশা কৃষি। কৃষি খাত থেকে বাৎসরিক আয় ৬০হাজার টাকা, ব্যবসা থেকে বাৎসরিক আয় তিন লাখ টাকা, নগদ চার লাখ টাকা, তিন ভরি স্বর্ণ (উপহার স্বরূপ), ইলেকট্রনিক্স সামগ্রী ৬০হাজার টাকা, আসবাবপত্র ৫০হাজার টাকা, অন্যান্য ২৫হাজার টাকা, কৃষি জমি ক্রয় সূত্রে সাত একর ও তিন একর পৈত্রিক সূত্রে। যার মুল্য সাত লাখ টাকা। অকৃষি জমি পৈত্রিক সূত্রে রয়েছে এক একর, তিনটি হাফ বিল্ডিং ঘর পৈত্রিক সূত্রে, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের ধর্মপাশা শাখায় কৃষি ঋণ এক লাখ ২০হাজার টাকা, সোনালী ব্যাংক লিমিটেডের ধর্মপাশা শাখায় এক লাখ টাকা। 

শামীম আহমেদ মুরাদের শিক্ষাগত যোগ্যতা বিএ। পেশা ধান চালের ব্যবসা। ব্যবসা থেকে বাৎসরিক আয় চার লাখ টাকা, নগদ ৫০হাজার টাকা, একটি মোটর সাইকেলের মুল্য  এক লাখ ৮৬হাজার টাকা, পাঁচ ভরি স্বর্ণালঙ্কার যার মুল্য ৮০হাজার টাকা, আসবাবপত্র ৭০ হাজার টাকা, ব্যবসার পুঁজি ১১লাখ ৯হাজার ৩২৫টাকা, কৃষি জমির পরিমাণ দুই একর যার মুল্য এক লাখ টাকা, দুই তলা বিশিষ্ট একটি ভবন যার মুল্য ১৫লাখ টাকা। 

মো.বাশার তালুকদারের শিক্ষাগত যোগ্যতা স্বশিক্ষিত। পেশা-কৃষি । কৃষি খাত থেকে বাৎসরিক আয় চার লাখ টাকা, নগদ ছয় লাখ টাকা, অলংকার ৪তোলা যার মুল্য এক লাখ টাকা, চার ভরি স্বর্ণ (উপহার স্বরূপ), ইলেকট্রনিক্স সামগ্রী এক লাখ টাকা, আসবাবপত্র এক লাখ টাকা, কৃষি জমি ১৫একর যার মুল্য দুই লাখ ১৫হাজার টাকা, অকৃষি জমি ৩৫ দশমিক ৫ শতক। যার মুল্য পাঁচ লাখ ২০হাজার টাকা, দালান (বাণিজ্যিক) তিন লাখ ৫০হাজার টাকা, একটি সাইড পাকা টিনসেড ঘর যার মুল্য এক লাখ টাকা।       

মো.সাইফুল ইসলাম চৌধুরীর শিক্ষাগত যোগ্যতা এমএসএস। পেশায় আইনজীবী। বাৎসরিক আয় দুই লাখ ৫০হাজার টাকা, নগদ ৫০হাজার টাকা, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমাকৃত টাকার পরিমান তিন লাখ টাকা, একটি পুরাতন পালসার মোটরসাইকেল, তিনভরি স্বর্ণ (বিবাহ সূত্রে)। এ ছাড়া একটি  কম্পিউটার, একটি ফ্রিজ, ফ্যান দুটি, টিভি একটি, মোবাইল একটি এবং দুটি খাট, একটি আলমীরা, একটি ওয়ারড্রফ,একটি ডাইনিং টেবিল,আলনা একটি,  চেয়ার ৬টি ও ৫শতক বসতবাড়ি রয়েছে। এগুলোর কোনো মুল্য হলফনামায় উল্লেখ করা হয়নি।

ধর্মপাশা উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে,এই উপজেলার ছয়টি ইউনিয়নে ভোটার সংখ্যা  এক লাখ ৬হাজার ৫৮৭জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৫৩হাজার ৫৬৬জন ও নারী ভোটার ৫৩হাজার ২০জন এবং একজন হিজরা ভোটার রয়েছেন। ভোট কেন্দ্রের সংখ্যা ৪৩টি।৬ষ্ঠ উপজেলা পরিষদের দ্বিতীয় ধাপে আগামী ২১মে অনুষ্ঠেয নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে ছয়জন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে ছয়জন ও ভাইস চেযারম্যান (নারী)পদে পাঁচজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দিতা করছেন। #


এএফ/০৪