বন্যায় আটকা পড়ে ফেসবুকে বাঁচার আকুতি, অবশেষে সাজনের পরিবার উদ্ধার

নিজস্ব প্রতিবেদক


মে ৩০, ২০২৪
০৬:৫৮ পূর্বাহ্ন


আপডেট : মে ৩০, ২০২৪
০৭:০০ পূর্বাহ্ন



বন্যায় আটকা পড়ে ফেসবুকে বাঁচার আকুতি, অবশেষে সাজনের পরিবার উদ্ধার


টানা বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢল বন্যায় সিলেটের জৈন্তাপুর উপজেলার ফেরিঘাট এলাকায়  আটকা পড় সাজিদুর রহমান সাজন নামে যুবক ফেসবুকে তিনি ও তার পরিবারকে রক্ষার আকুতি জানিয়ে ফেসবুকে একের পর এক পোস্ট দিচ্ছিলেন। একটা পর্যায়ে হাল ছেড়ে দেওয়া যুবক লেখেন- ‘লাশ উদ্ধার অইমু হয়তো, জীবিত উদ্ধার অইতে পারতাম না, হয়তো এইটা শেষ পোস্ট।’ এ ঘটনায় এক হৃদয়বিদারক পরিস্থিতির উদ্ভব হয়। পরে রাত ১১টা ৮ মিনিটে এ পোস্ট দেওয়ার দুই ঘন্টা ৩১ মিনিট পর বুধবার দিবাগত রাত ১টা ৩৯ মিনিটে তাকে উদ্ধার করা হয়।

বুধবার রাত ৯টা ১৮ মিনিটে সাজিদুর রহমান সাজন নামে ওই যুবক ফেসবুকে প্রথম পোস্টটি করে তাকে, তার ভাই  ও মাকে উদ্ধারের আকুতি জানান। 

তার দেওয়া পোস্ট থেকে জানা যায় তিনি ফেরিঘাট এলাকার স্থানীয় বাসিন্দা দিলু মিয়ার ছেলে। পোস্টে তিনি নিজেকে দৌলা চেয়ারম্যানের ভাতিজা দিলু মিয়ার ছেলে বলে দাবি করেন। 

সাজিদুরের মতো জৈন্তাপুর উপজেলার আরও কয়েকজন নৌকা চেয়ে পোস্ট দেন।

জৈন্তাপুরের ময়নাহাটি খেয়াঘাট এলাকার আহমেদ নাইম রাত সাড়ে দশটায় ফেসবুকে পোস্ট দেন— ‘একটা ইঞ্জিন নৌকার দরকার, কেউ বাঁচাও আমরারে’।

এদিকে উদ্ধার কাজে সেনাবাহিনী চেয়ে জৈন্তাপুর উপজেলার ইমরান আহমদ সরকারি মহিলা কলেজের সহযোগী অধ্যাপক মো. খায়রুল ইসলাম তার ফেসবুক আইডিতে লেখেন—‘উদ্ধার কাজে সেনাবাহিনী চাই। জৈন্তাপুর গোয়াইনঘাট, কানাইঘাটে সর্বকালের ভয়াবহ বন্যা।’

বন্যার পানিতে আটকে থাকা মানুষজনকে উদ্ধারের ব্যাপারে কথা বলতে জৈন্তাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) উম্মে সালিক রুমাইয়া মোবাইল ফোনে কল দিলে তা বন্ধ পাওয়া যায়।

প্রসঙ্গত, জৈন্তাপুরে টানা বৃষ্টি-ঢলে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। উপজেলার সারি, বড় নয়াগং ও রাংপানি নদের পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন জৈন্তাপুর সদর, নিজপাট ও চারিকাটা ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চলের বাসিন্দারা।

উপজেলার নিজপাট লামাপড়া, বন্দরহাটি, ময়নাহাটি, জাঙ্গালহাটি, বড়খেল, মেঘলী, তিলকৈপাড়া, ফুলবাড়ি, নয়াবাড়ি, হর্নি, বাইরাখেল, গোয়াবাড়ি, ডিবির হাওর, ঘিলাতৈল, মুক্তাপুর, বিরাইমারা হাওর, খারুবিল, লমানীগ্রাম, কাটাখাল, বাউরভাগ, চাতলারপাড়, ডুলটিরপাড়সহ বিভিন্ন এলাকার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। রাত বাড়ার সাথে সাথে বাড়ছে নদীর পানি। তাই পানিবন্দি মানুষের বাড়ছে আতংক।


এএফ/০৩