মেয়র আনোয়ারুজ্জামান, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, শাবির সাবেক উপাচার্য, তিন সাবেক সংসদ সদস্যসহ আসামি ৩০০

নিজস্ব প্রতিবেদক ও শাবিপ্রবি প্রতিনিধি


আগস্ট ১৯, ২০২৪
০৭:২৭ অপরাহ্ন


আপডেট : আগস্ট ২০, ২০২৪
০৮:২০ অপরাহ্ন



মেয়র আনোয়ারুজ্জামান, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, শাবির সাবেক উপাচার্য, তিন সাবেক সংসদ সদস্যসহ আসামি ৩০০


বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনেv শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী রুদ্র সেন নিহতের ঘটনায় আদালতে মামলা হয়েছে। সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ছাড়াও মামলায় আসামি করা হয়েছে সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সদ্য সাবেক উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন, সদ্য সাবেক তিন সংসদ সদস্য শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল, হাবিবুর রহমান হাবিব ও রনজিত সরকারকে। 

আজ সোমবার (১৯ আগস্ট) দুপুরে সিলেটের অতিরিক্তি মূখ্য মহানগর হাকিম আদালতের বিচারক আব্দুল মোমেনের আদালতে এই মামলাটি দায়ের করেন বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন শাবিপ্রবি শাখার সমন্বয়ক হাফিজুল ইসলাম।

আদালত অভিযোগটি এফআইআর হিসেবে গ্রহণ করার জন্য সংশ্লিস্ট থানাকে নির্দেশ দিয়েছেন বলে জানান বাদীপক্ষের অন্যতম আইনজীবী আব্দুর রব। তিনি সিলেট মিররকে বলেন, ‘মামলায় ২৮ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও ২৫০ থেকে ৩০০ জনকে আসামি করা হয়েছে।

আদালতে জমা দেওয়া এজাহার অনুসারে রুদ্র সেন হত্যা মামলার আসামিরা হলেন-সিলেট মহানগর পুলিশের তৎকালীন অতিরিক্ত উপকমিশনার (উত্তর) আজবাহার আলী শেখ, অতিরিক্ত উপকমিশনার (ক্রাইম, উত্তর) মো. সাদেক দস্তগীর কাউছার, জালালাবাদ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মিজানুর রহমান, ওসি তদন্ত আবু খালেদ মো. মামুন, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী, সিলেট-৩ আসনের সদ্য সাবেক সংসদ সদস্য ও আওয়ামী লীগের প্রবাসী নেতা হাবিবুর রহমান হাবিব, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ^বিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন আহমদ, সাবেক প্রো-ভিসি কবির হোসেন, সাবেক প্রক্টর মো. কামরুজ্জামান চৌধুরী, কলেজ ইন্সপেক্টর তাজিম উদ্দিন, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও সদ্য সাবেক সংসদ সদস্য শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল, সুনামগঞ্জ-১ আসনের সদ্য সাবেক সংসদ সদস্য রনজিত সরকার, সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ন সম্পাদক ও ২০ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর আজাদুর রহমান আজাদ, সহ-সভাপতি ও ৮ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর জগদীশ চন্দ্র দাস, যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক বিধান কুমার সাহা, মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি ও ৭ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর আফতাব হোসেন খান, মহানগর যুবলীগ সভাপতি আলম খান মুক্তি,  জেলা ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক রাহেল সিরাজ, সভাপতি নাজমুল ইসলাম, মহানগর ছাত্রলীগ সভাপতি কিশোয়ার জাহান সৌরভ, সাধারণ সম্পাদক নাঈম আহমদ, ৩২ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর রুহেল আহমদ, মহানগর ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক সজল দাস অনিক, এসআই রেজওয়ান আহমদ, কনস্টেবল রনি চন্দ্র রায়, এসআই নহোরেন্দু তালুকদার, কনস্টেবল সুজিত সিংহ, অপূর্ব সিংহ, প্রণজিৎ, সুমন, শাবিপ্রবি ছাত্রলীগ সভাপতি খলিলুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক সজিবুর রহমান, সহ-সভাপতি মামুন শাহ, ফারহান রুবেল, সাবেক ছাত্রলীগ নেতা মেহেদী হাসান স্বাধীন, সাইমন ইসলাম, শাবিপ্রবি ছাত্রলীগের যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ হোসেন, সহ-সভাপতি তানিম খন্দকার, ছাত্রলীগ কর্মী দেলোয়ার হোসেন, শফিউল রাব্বী,  সহ-সভাপতি রেজাউল হক সিজার, ইউসুফ হোসেন টিটু, মনসুর আলম নিরব, সাংগঠনিক সম্পাদক লোকমান হোসেন, আরকে রাকিব হোসেন, শুভ সাহা, সহ-সভাপতি আশিকুর রহমান আশিক, শাবিপ্রবি ছাত্র ফরাহান হোসেন চৌধুরী আরিয়ান, সানি শেখ, ছাত্রলীগ কর্মী  মোহাম্মদ তারেক, সহ-সভাপতি শিমুল মিয়া, আয়াজ চৌধুরী, সাংগঠনিক সম্পাদক অমিত সাহা, ‘আমরা সাস্টিয়ান’ গুপের এডমিন আব্দুল কাদির মোহাম্মদ রেদোয়ান, নুরুল ইসলাম, ময়নুল ইসলাম, আহমদ সাজন, হাসান আহমদ, মহানগর আওয়ামী লীগের সদস্য জাহিদ সরোয়ার সবুজ, সিসিকের ৩৮ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর হেলাল উদ্দিন, শহীদ মু. অকিল অপু, মো. শাহজাহান, মু. আপ্তাব হোসেন সিরাজী, অহিদ উদ্দিন দুলাল, মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহ-সভাপতি রশিদ আহমদ, জেলা যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল লতিফ রিপন, মুজিবুর রহমান মালদার, আবু সুফিয়ান উজ্জ্বল, সিসিকের ১০ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর তারেক উদ্দিন তাজ, মাজহারুল ইসলাম সুমন, শাহনুর আলম, রুহিন আহসান খান, আমির হোসেন খানসহ অজ্ঞাত আরও ৩০০ জন।

প্রসঙ্গত, ১৮ জুলাই কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে শাবিপ্রবিতে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পুলিশ ও ছাত্রলীগের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। ওইদিন পুলিশের ধাওয়ায় নিরাপদ আশ্রয়ের সন্ধানে কয়েক বন্ধুর সঙ্গে খাল পার হতে গিয়ে ডুবে মারা যান তিনি। রুদ্র শাবিপ্রবির কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড পলিমার সায়েন্স বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন।

সেদিনের ঘটনার বর্ণনা দিয়ে রুদ্রের বন্ধু ইমতিয়াজ ও সিয়াম জানিয়েছিলেন, ‘রুদ্র প্রথম থেকেই কোটা সংস্কার আন্দোলনে ছিল। ১৮ জুলাই পুলিশের হামলায় সে পড়ে গিয়ে একটু আঘাত পায়। পরে আমরা মেসে ফিরে যাই। বিকেলে ছাত্রলীগ মহড়া দেয় এবং সন্ধ্যার আগ থেকে পুলিশের সঙ্গে আবারও সংঘর্ষ হলে আমরা একসঙ্গে অনেকে মেসে থাকা অনিরাপদ মনে করি। মেসের পেছন দিয়ে বাগবাড়ীর দিকে যাচ্ছিলাম। ভেলায় করে খাল পার হওয়ার সময় আমরা পড়ে যাই। সবাই সাঁতরে তীরে উঠলেও রুদ্র ডুবে যায়। অনেক খোঁজাখুঁজির পর তাকে পাই। পরে হাসপাতালে নিলে তাকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক।’


এএফ/০৬