কোম্পানীগঞ্জে চিকিৎসক কামরুজ্জামান ও খাদিজার অপসারণে আল্টিমেটাম

কোম্পানীগঞ্জ প্রতিনিধি


সেপ্টেম্বর ০৪, ২০২৪
০৩:৪৪ পূর্বাহ্ন


আপডেট : সেপ্টেম্বর ০৪, ২০২৪
০৩:৪৪ পূর্বাহ্ন



কোম্পানীগঞ্জে চিকিৎসক কামরুজ্জামান ও খাদিজার অপসারণে আল্টিমেটাম


সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা (টিএইচও) ডা. কামরুজ্জামান রাসেল ও ডা. খাদিজার আক্তারকে দায়িত্ব থেকে অপসারণের জন্য ৭২ ঘন্টার আল্টিমেটাম দিয়েছে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা। 

কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার মাধ্যমে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ও সিলেট সিভিল সার্জন বরাবর গত রবিবার (১ সেপ্টেম্বর) তাঁরা লিখিত অভিযোগে এ দুই চিকিৎসকের অপসারণের দাবি জানান।

এর আগে গত ২৯শে আগস্ট বৃহস্পতিবার দুপুর ২টায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সামনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকারীরা অবস্থান নেন। বিভিন্ন অনিয়ম, দূর্নীতি এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন বিপক্ষে অবস্থান করে উস্কানিমূলক বক্তব্য দেওয়া এবং সিন্ডিকেট করে বিপুল অর্থ কামানোর অভিযোগ তুলে টিএইচও ডা. কামরুজ্জামান রাসেল ও তার স্ত্রী ডাক্তার খাদিজা আক্তারকে ৭২ ঘন্টার আল্টিমেটাম দিয়েছিলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতা।

কিন্তু দাবিকৃত দুই চিকিৎসক স্বপদে বহাল থাকায় তাঁরা স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ও সিলেট সিভিল সার্জন বরাবর তাঁরা লিখিত অভিযোগ দিয়ে ৭২ ঘন্টার মধ্যে দুই চিকিৎসকের অপসারণ দাবী জানান।

লিখিত অভিযোগে বলা হয়, গত মাসের ৪ তারিখ সারা দেশের ন্যায় আমরাও শান্তিপূর্ণ ছাত্র আন্দোলনের মিছিল বের করি। কিন্তু অত্যান্ত দুঃখের বিষয় কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এর স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. কামরুজ্জামান রাসেল ও তাঁর স্ত্রী ডা. খাদিজা বেগম তাদের নিজস্ব ফেসবুকে ছাত্র আন্দোলনের বিপক্ষে অবস্থান নেন এবং উস্কানিমূলক বক্তব্যের মাধ্যমে আওয়ামী জনগনকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে ছাত্র আন্দোলন প্রতিহত করার চেষ্টা করে। এছাড়া ছাত্ররা আহত হয়ে হাসপাতালে গেলে চিকিৎসা দিতেও গড়িমসি করেন।

তারা ফ্যাসিস্ট সরকারের দালাল হয়ে দীর্ঘদিন ধরে কোম্পানীগঞ্জ হাসপাতাল এ কয়েকজন মিলে একটা সিন্ডিকেট তৈরী করে বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতি করে আসছে বলেও জনগনের মুখে মুখে আলোচনা হচ্ছে। কিন্তু তাদের বিরুদ্ধে কেউ মুখ খুললেই তাদেরকে বদলি, হয়রানি, সার্ভিস বুকে লাল কালি মেরে দিবো বলে হুমকি দিয়ে আসছেন। তাই ভয়ে কেউ মুখ খুলে না। তারা স্বামী স্ত্রী আর উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল কর্মকর্তা মাহমুল ইসলাম লুৎফর আরও দুই তিনজন মিলে সিন্ডিকেট গড়ে তুলেছেন এবং দলীয় ক্ষমতার বলে করোনাকালীন সময়েও বিভিন্ন টাকা আত্মসাত করেছে বলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্টাফদের অনেকে তাদের প্রতি অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন।

এছাড়া অফিস এ নির্দিষ্ট পদের জনবল থাকলেও তাদেরকে স্ব স্ব পদের দায়িত্ব বুঝিয়ে না দিয়ে তাদেরকে অন্য জায়গায় দায়িত্ব পালনের মতো তথ্য পাওয়া যায়। মাহমুল ইসলাম লুৎফরের এর বিরুদ্ধে কিছুদিন আগে জরুরি বিভাগে কাজ করে দিয়ে টাকা নেওয়ার ভিডিও প্রকাশ পেলে এবং জরুরি বিভাগে চিকিৎসকের পরিবর্তে নার্সকে দিয়ে চিকিৎসা প্রদানের বিষয়ে সিলেট জেলা সিভিল সার্জন ও কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর লিখিত অভিযোগ করলেও যথাযথ কোন ব্যাবস্থা নেওয়া হয়নি। এছাড়া গত ০৫ আগস্ট ২০২৪ হতে অদ্যবদি ডা. কামরুজ্জামান রাসেল এখনো হাসপাতালে অনুপস্থিত আছেন। আমরা কয়েক বার তার সাথে দেখা করতে গেলেও তার সাথে দেখা করতে পারি নাই। এমতাবস্থায় গত ২৯ আগস্ট ২০২৪ ইং বৃহস্পতিবার আনুমানিক দুপুর একটার সময় হাসপাতালে গেলেও তার দেখা পাইনি। বিধায় আমরা বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সকল সাধারণ শিক্ষার্থীবৃন্দ আলোচনার ভিত্তিতে ডা. কামরুজ্জামান রাসেল ও তার স্ত্রী ডা. খাদিজা বেগম এবং তাদের কুটনৈতিক বুদ্ধি ও পরামর্শদাতা মাহমুল ইসলাম (লুৎফর)কে আগামী ৭২ ঘন্টার মধ্যে অন্যত্র বদলি করার জন্য দাবি জানাচ্ছি। যদি দাবি মানা না হয় তবে পরবর্তীতে আমরা ছাত্র আন্দোলন আরো কঠোর পদক্ষেপ নিয়ে তাদের পদত্যাগ করতে বাধ্য করবো।


কেএ-০১/এএফ-০১