নিজস্ব প্রতিবেদক
এপ্রিল ২৮, ২০২৫
০৩:৪৫ পূর্বাহ্ন
আপডেট : এপ্রিল ২৮, ২০২৫
০৩:৪৫ পূর্বাহ্ন
বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শেখ বশির উদ্দিন বলেছেন, সিলেটের জন্য এটি একটি ঐতিহাসিক দিন। কারণ স্বাধীনতার পরে প্রথম ঢাকার বাইরে সিলেট থেকে একটি আন্তর্জাতিক ফ্রেড কার্গো চালু হচ্ছে। আমি এই মহান ইতিহাসের অংশ হতে পেরে গর্বিত।
তিনি বলেন, আজকে আমরা যে সাফল্যটা অর্জন করলাম সেটা কোনোভাবে আমাদের গন্তব্য নয়। এটা মাত্র একটা যাত্রা। এই যাত্রায় আপনাদের সহযোগিতায় আমরা আশা করি সফল হবো।
গতকাল রবিবার সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে কার্গো ফ্লাইট চালু উপলক্ষে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
উপদেষ্টা বলেন, আজ একটি ঐতিহাসিক এবং অর্থনৈতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তের স্বাক্ষী আমরা। ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে সরাসরি ইউরোপের উদ্দেশ্যে প্রথম কার্গো ফ্লাইটের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন নিঃসন্দেহে আমাদের জন্য একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ। যারা এটিকে বাস্তবায়নে কাজ করেছেন তাদের সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। তাদের আকুণ্ঠ সমর্থন ও সহযোগিতা ছাড়া আজকে এটা সম্ভব হতো না।
তিনি বলেন, যখন আমাদের ট্রান্সশিপমেন্ট বন্ধ হয়ে গেল। তখন প্রধান উপদেষ্টা আমাকে ডাকলেন। করণীয় ঠিক করতে তিনি নির্দেশনা দেন। তখন আমরা তাকে নিশ্চিত করি সংশ্লিষ্ট সবাইকে নিয়ে বিকল্প ব্যবস্থা করা যাবে। আমি খুবই আনন্দের সঙ্গে জানাচ্ছি, ‘আমি যখন সিলেটের উদ্দেশ্যে রওয়ানা দিতে আসি তখন একজন কর্মকর্তা আমাকে হাতেকলমে দেখাচ্ছিলেন, যে আমাদের গত মাসের চেয়ে এই মাসে ঢাকা থেকে ইউরোপে রপ্তানির ক্ষেত্রে ৩৭ শতাংশ খরচ কমেছে এবং যুক্তরাষ্ট্রের খরচ ১৩ শতাংশ কমেছে। আমি এতে অবশ্যই সন্তুষ্ট না। আমি এর চেয়েও বেশি চাই। ইনশাল্লাহ সবার সহযোগিতায় এটা সম্ভব।
মেক্সিকোয় নিযুক্ত বাংলাদেশের হাই কমিশনার মুশফিকুল ফজল আনসারীর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমি কৃতজ্ঞতা জানাই মেক্সিকোর রাষ্ট্রদূতের প্রতি। আজকে এখান থেকে যে ফেটার বিমান যাবে এটা একটা মেক্সিকান কোম্পানি। এটিকে ফ্যাসিলিটেশনের জন্য উনার ব্যক্তিগত উদ্যোগ, উৎসাহ ও আগ্রহ ছিল। সবাই একত্রে কাজ করলে যে এত দ্রুত এত বড় একটা সমস্যার সমাধান করতে পারা যায় এটা তার উদাহরণ।
তিনি বলেন, সিভিল এভিয়েশনও অসম্ভব পরিশ্রম করেছে। তারা তাদের রানওয়েকে নতুন করে ইভালেশন করেছে, বিভিন্ন রেগুলেটরি যে রিকোয়ারমেন্ট ছিল সেগুলোর ফ্যাসিলেশন থেকে শুরু সামগ্রিকভাবে কাজ করেছে। এজন্য আমি সকলের কাছে কৃতজ্ঞ।
সিলেটের জন্য এটি একটি ঐতিহাসিক দিন। কারণ স্বাধীনতার পরে আজকেই প্রথম ঢাকার বাইরে একটি আন্তর্জাতিক ফ্রেড কার্গো চালু হচ্ছে সিলেট থেকে। আমি এই মহান ইতিহাসের অংশ হতে পেরে গর্বিত।
উপদেষ্টা বলেন, বিগত ফ্যাসিস্ট সরকার উৎপাদনশীলভাবে ক্রিমিনালাইজেশন করে যেত। দুর্বৃত্তায়ন করেছে। যে দুর্বৃত্তায়নের ফলে আমরা মানসিকভাবে অনেকক্ষেত্রে সাব-অর্ডিনেট হয়ে গিয়েছি। ফলে আমাদের নিজস্ব সৃষ্টিশীলতা, আমাদের কার্যক্ষমতা, এই যে সামগ্রিকভাবে একত্রিত হয় আমরা অর্জন করতে পারলাম। একটা ট্রান্সশিপমেন্ট বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর আমাদের যে শুধু সক্ষমতা বৃদ্ধি না প্রতিযোগিতামূলকতা যে বাড়িয়েছি এটা স্মরণীয়।
উপদেষ্টা বলেন, আমি মনে করি সাফল্য কোনো গন্তব্য নয় এটি একটি যাত্রা। আমরা আজকে যে সাফল্যটা অর্জন করলাম সেটা কোনোভাবে আমাদের গন্তব্য নয়। এটা মাত্র একটা যাত্রা। এই যাত্রায় আপনাদের সহযোগিতায় আমরা আশা করি সফল হবো।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ থেকে যারা মরুভূমির দেশে কাজ করতে যান। দশ বছর, পাঁচ বছর, ছয় বছর বৌ বাচ্চা থেকে বিচ্ছিন্ন অবস্থায় থাকেন। দেশে এসে তার পরিবারের সঙ্গে একত্রিত হয়ে আবার যে ছুটে যাবে এই খরচা বহনের সক্ষমতা তাদের নেই। কারণ আমাদের বিমানের ভাড়া দেশ থেকে যাতায়াতের যে ভাড়া, বিমান শুধু বলব না অন্যসব এয়ারলাইন্স। আমরা যদি তুলনা করি এটি খুব অযৌক্তিক মাত্রার ভাড়া। কেন এটা? নিয়ামকের মধ্যে যতগুলো নিয়ামক আছে সবগুলো দেখা হবে। আমরা যদি আন্তর্জাতিক ফ্রেড কস্ট মাত্র দুই তিন সপ্তাহে কমাতে পারি। আমি মনে করছি এটা থেকে আরো অনেক কমবে। আমি মনে করি আমাদের বিমান ও বৈদেশিক বিমান সংস্থা আছে তাদের খরচা কমতে হবে। এই অমানবিক জীবন, এই যে সামাজিক দায় তৈরি হচ্ছে, একটা পরিবার তার পরিবারের প্রধান থেকে পাচ-সাত বছর দূরে থাকছে। মিলিত হতে পারছে না এই অনৈতিক দায়টা কেন রাষ্ট্র নেবে। কেন এরকম ঘটনা ঘটবে। কেন গুটি কয়েক লোকের মুনাফার জন্য আমরা লক্ষ্য কোটি মানুষ এর শিকার হবে। এটা কোনোভাবে হতে দেওয়া উচিত নয়।
উপদেষ্টা বলেন, ফ্যাসিস্ট আমলের অর্জিত দায় বর্তমান সরকারকে নিতে হচ্ছে এবং অনেক দায় তাদের মিটাতে হচ্ছে। আমি যখন এখানকার অবকাঠামো, শুধু এখানকার নয় অন্যান্য যত বিমানবন্দর হচ্ছে, আমার কথা হচ্ছে- ব্যয়ের উদ্বৃত্ত থাকতে হবে। আমি এমন কোনো ব্যয় করতে রাজি নই যে ব্যয়ে উদ্বৃত্ত তৈরি করতে পারে না। যে উদ্বৃত্ত তৈরি করতে না পারে সে একমাত্র জিনিস তৈরি করবে, সেটা হচ্ছে দায়। কেন আমার দায় নেব?