মসজিদ পরিষ্কার, পশুকে খাওয়ানোর শর্তে মামলা থেকে মুক্তি সাদ্দামের

নিজস্ব প্রতিবেদক


মে ০৭, ২০২৫
১১:৫৪ অপরাহ্ন


আপডেট : মে ০৮, ২০২৫
০১:২৬ অপরাহ্ন



মসজিদ পরিষ্কার, পশুকে খাওয়ানোর শর্তে মামলা থেকে মুক্তি সাদ্দামের


প্রতি শুক্রবারে মসজিদে গিয়ে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজ করতে হবে, দুটি বিড়াল ও দুটি কুকুরকে এক বছর সাধ্যমতো খাওয়াতে হবে, ৫০টি গাছ লাগিয়ে নিয়মিত যত্ন নিতে হবে—এমন কিছু শর্তে সাদ্দাম হোসেন (২২) নামের এক তরুণকে মামলা থেকে মুক্তি দিয়েছেন আদালত।

আজ বুধবার (৭ মে) দুপুরে সিলেটের জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট চতুর্থ আদালতের বিচারক মো. মুসতানসীর হাসান চৌধুরী এই অভূতপূর্ব রায় দেন।

সাদ্দাম ময়মনসিংহ জেলার নান্দাইল উপজেলার কিসমত রসুলপুর গ্রামের লাল মিয়ার ছেলে। সে পরিবারের সঙ্গে সিলেটের বিয়ানীবাজার উপজেলার সুপাতলা গ্রামের বসবাস করে।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আসামিপক্ষে আইনজীবী দেলোয়ার হোসেন দিলু। তিনি বলেন, ‘মাদক মামলায় সাদ্দাম ২০২৩ সালে গ্রেপ্তার হয়। আজকে মামলার রায়ে আদালত প্রথমে তাকে এক বছরের সাজার জন্য সাব্যস্ত করেন। পরে আমি তার বয়স বিবেচনায় নেওয়ার জন্য এবং তার বিরুদ্ধে এর আগে কোনো মামলা ছিল না, ভবিষ্যতে এ রকম কাজে সে জড়াবে না জানালে আদালত এই ব্যতিক্রমী রায় দেন।

তিনি বলেন, ‘আদালত কয়েকটি নির্দেশনা দিয়েছেন। এর মধ্যে দুটি করে বিড়াল ও কুকুরকে এক বছর সাধ্যমতো খাওয়াতে হবে। ৫০টি বৃক্ষ রোপণ করে সেগুলোর নিয়মিত যত্ন নিতে হবে। রাসুল (সা.)-এর জীবনী পাঠ করতে হবে, পড়তে না পারলে অন্য কারো মাধ্যমে শুনতে হবে, নিয়মিত নামাজ পড়তে হবে ও শুক্রবারে মসজিদে গিয়ে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজ করা, পরিবারে সঙ্গে ভালো ব্যবহার করা, প্রবেশন কর্মকর্তার অনুমতি না নিয়ে পেশা ও বাসস্থান পরিবর্তন করা যাবে না।

সব সময় আদালতের স্থানীয় অধিক্ষেত্রের মধ্যে নির্দিষ্ট বাসস্থান বা পেশায় থাকতে হবে। মাদক সেবন ও বিক্রয় এবং মাদকসেবী ও মাদক ব্যবসায়ীদের সঙ্গে মেলামেশা করতে পারবেন নাসহ কিছু নির্দেশনা পালনের শর্তে মামলা থেকে মুক্তি দেন।’

সাদ্দামকে সমাজসেবা অধিদপ্তর সিলেটের প্রবেশন কর্মকর্তা তজির হোসেন চৌধুরী তত্ত্বাবধানে এই এক বছর থাকতে হবে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘সাদ্দাম আদালতের নির্দেশনা ঠিকমতো পালন করছে কি না, সেটি তত্ত্বাবধান করবেন প্রবেশন কর্মকর্তা।’

আদালতের এমন নির্দেশনায় মুক্তি পেয়ে দারুণ খুশি সাদ্দাম হোসেন। নিজের প্রতিক্রিয়ায় তিনি বলেন, ‘আদালতের রায়ে আমি খুব খুশি।

খারাপ বন্ধু-বান্ধবের পাল্লায় পড়ে আমি ভুল পথে চলে গিয়েছিলাম। এখন থেকে আদালতের নির্দেশনা পালন করে ভালো পথে চলতে চাই।’

নির্দেশনায় বলা হয়েছে, আগামী এক বছর প্রবেশন অফিসারের তত্ত্বাবধানে থাকতে হবে এবং তার নির্দেশনা মেনে চলতে হবে। ওই সময়ে কোনো অপরাধ করা যাবে না। শান্তির লক্ষ্যে সদাচরণ করতে হবে এবং আদালত, প্রবেশন কর্মকর্তা ও আইন প্রয়োগকারী সংস্থার তলব মতে যথাসময়ে যথাস্থানে উপস্থিত হতে হবে।



এএফ/০৭