নিজস্ব প্রতিবেদক
মে ১২, ২০২৫
১২:২৪ পূর্বাহ্ন
আপডেট : মে ১২, ২০২৫
১২:২৪ পূর্বাহ্ন
সিলেটে প্রথমবারের মতো অনুষ্ঠিত হলো ‘প্রথম আন্তঃমেডিকেল শিক্ষা সম্মেলন’। সিলেট বিভাগের সকল ইএনটি অ্যান্ড হেড-নেক সার্জনদের অংশগ্রহণে এ সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। সিলেট বিভাগের সাতটি সরকারি ও বেসরকারি মেডিকেল কলেজ এতে অংশগ্রহণ করে এবং নিজেদের গবেষণা ও অভিজ্ঞতা তুলে ধরে।
গতকাল রবিবার সিলেট নগরের দরগা এলাকার একটি অভিজাত হোটেলের বলরুমে দিনব্যাপি এই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সম্মেলন আয়োজন করে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজের নাক-কান-গলা বিভাগ।
ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নাক কান গলা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ডা.নূরুল হুদা নাঈমের সভাপতিত্বে সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন সিলেট মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. ইসমাঈল পাটোয়ারি। সম্মানিত অতিথি ছিলেন অধ্যাপক ডা. এ কে এম হাফিজ।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে সিলেট মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ ইসমাইল পাটোয়ারী চিকিৎসা বিষয়ক এমন গবেষণা ধর্মী অনুষ্ঠান আয়োজনের ভুয়সী প্রশংসা করে বলেন, ‘সিলেট থেকে হেড নেক এর এত বেশি জটিল রোগীর চিকিৎসা আমরা দিচ্ছি তা অভূতপূর্ব। এখন আর এ ধরণের অপারেশনের জন্য রোগীদের ঢাকা বা দেশের বাইরে যেতে হয় না।’
নাক-কান-গলা বিভাগের আবাসিক সার্জন ডা. মো. আব্দুল হাফিজ শাফী এবং রেসিডেন্ট ট্রেইনি ডা. মৌসুমীর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন অধ্যাপক ডা. মাশুকুর রহমান চৌধুরী, অধ্যাপক ডা. কাজী আক্তার উদ্দিন, অধ্যাপক ডা. ইমাদ হোসেন চৌধুরী, সহযোগী অধ্যাপক ডা. এম এস রহমান শামীম, ও সহযোগী অধ্যাপক ডা. রিতুরাজ দেব।
শুরুতে স্বাগত বক্তব্যের পাশাপাশি ওসমানী মেডিকেল হাসপাতালের সিগ্নেচার ওয়ার্ক কক্লিয়ার ইমপ্লান্ট সার্জারী নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ বৈজ্ঞানিক গবেষণা উপস্থাপন করেন বিভাগীয় প্রধান ও কর্মসূচি পরিচালক ডা. নূরুল হুদা নাঈম। তিনি এসময় বলেন, ‘ইতোমধ্যে ১০১ টি সফল কক্লিয়ার ইমপ্লান্ট সার্জারী সম্পন্ন করা হয়েছৈ। শত বাঁধা সত্ত্বেও সবার সহযোগিতায় কার্যক্রমটি সুচারুভাবে চলছে।’ এমন আয়োজন নিজেদের মধ্যে জ্ঞানের আদান-প্রদান, সহযোগিতা, পারস্পারিক সহমর্মিতা বৃদ্ধির মাধ্যমে নাক কান গলা রোগীদের মানসম্মত সেবা প্রদান করা সম্ভব বলে তিনি মন্তব্য করেন।
বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের নিয়ে নাক-কান-গলার বিভিন্ন রোগ বিষয়ে প্যানেল আলোচনা পরিচালনা করেন আয়োজনের সমন্বয়কারী বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. সৈয়দ নাফি মাহদী। প্যানেল আলোচনায় অন্যান্যদের সঙ্গে আরো যুক্ত ছিলেন সহযোগী অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ শাহ কামাল, সহযোগি অধ্যাপক ডা. মুখলেছুর রহমান প্রমুখ।
সেমিনারে অংশগ্রহণকারী মেডিকেল কলেজগুলো হচ্ছে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ, হবিগঞ্জ মেডিকেল কলেজ, সুনামগঞ্জ মেডিকেল কলেজ, জালালাবাদ রাগীব-রাবেয়া মেডিকেল কলেজ, নর্থ ইস্ট মেডিকেল কলেজ, সিলেট উইমেন্স মেডিকেল কলেজ ও পার্কভিউ মেডিকেল কলেজ সিলেট।
জালালাবাদ রাগীব রাবেয়া মেডিকেলের পক্ষে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সহযোগী অধ্যাপক ডা. মোফাক্কারুল ইসলাম, ওসমানী মেডিকেলের পক্ষে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ডা. মাসুম বিল্লাহ, নর্থ ইস্ট মেডিকেলের পক্ষে ডা. মেহেদী হাসান অনিক, সিলেট উইমেনস মেডিকেলের পক্ষে ডা. সুদিপ কান্তি, পার্ক ভিউ মেডিকেলের পক্ষে ডা. মুফতি মোহাম্মদ শামস প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন।
নিবন্ধনের পর শুভ উদ্বোধনের মাধ্যমে সম্মেলনের সূচনা হয়। এর পরপরই অনুষ্ঠিত হয় প্যানেল আলোচনা। এরপর প্রতিটি অংশগ্রহণকারী মেডিকেল কলেজ তাদের বিভাগীয় গবেষণা প্রবন্ধ ও কেস স্টাডি উপস্থাপন করে। এই সেশনগুলোতে উঠে আসে আধুনিক চিকিৎসা পদ্ধতি, জটিল রোগের ব্যবস্থাপনা এবং সার্জিকাল কৌশল নিয়ে গবেষণালব্ধ মূল্যবান তথ্য ও অভিজ্ঞতা।
মধ্যাহ্ন বিরতির পর অনুষ্ঠিত হয় দ্বিতীয় প্যানেল আলোচনা, রাফেল ড্র ও স্পনসর প্রতিষ্ঠান রেনেটা পিএলসির উপস্থাপনা। অনুষ্ঠানের সমাপ্তি সসনদপত্র বিতরণের মাধ্যমে।