জুড়িতে খামার বন্ধ ও মামলা প্রত্যাহারের দাবি

জুড়ী প্রতিনিধি


মে ১০, ২০২০
০৯:৪৫ অপরাহ্ন


আপডেট : মে ১০, ২০২০
০৯:৪৫ অপরাহ্ন



জুড়িতে খামার বন্ধ ও মামলা প্রত্যাহারের দাবি

মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলার ৩ নম্বর পশ্চিম জুড়ী ইউনিয়নের পশ্চিম আমতৈল গ্রামে অবৈধভাবে স্থাপিত পরিবেশ নষ্টকারী পোল্ট্রি ফার্ম বন্ধ ও মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে মানববন্ধন করেছেন ভুক্তভোগী আমতৈল গ্রামবাসী।

আজ রবিবার (১০ মে) দুপুরে উপজেলার আমতৈল এলাকায় পশ্চিম জুড়ী ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি রাধা কান্ত দাশের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে বক্তব্য দেন আহমদ আলী ও রিমা রানী দাশ।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন, ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক আলী হোসেন ও জুড়ী কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম-সম্পাদক রাজীব বৈদ্য।

পশ্চিম জুড়ী ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি ও ভুক্তভোগী রাধা কান্ত দাশ বলেন, গ্রামে দীনবন্ধু সেন প্রায় তিন বছর পূর্বে সম্পূর্ণ অবৈধভাবে ‘বন্ধু পোল্ট্রি ফার্ম’ নামে লেয়ার মুরগির ফার্ম চালু করেন। পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিবন্ধন ছাড়া অবৈধভাবে প্রতিষ্ঠিত এই ফার্ম থেকে ছড়িয়ে পড়া দুর্গন্ধে এলাকার পরিবেশ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। প্রতিবেশীরা বাড়ি-ঘরে থাকা কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে। খামারের ময়লা পাইপ দিয়ে নদীতে ফেলা হয়। এতে নদীর পানি ও পরিবেশ দুষিত হচ্ছে। অথচ পোল্ট্রি নীতিমালা অনুযায়ী মুরগির খামার পরিষ্কার করা পানি ও বিষ্ঠা নির্দিষ্ট একটি কূপে রাখতে হবে। কূপের ভেতর চুন ও পটাশ ব্যবহার করতে হবে, যাতে পরিবেশের কোনো ক্ষতি না হয়। তা না হলে বাংলাদেশ পরিবেশ সংরক্ষণ আইন-১৯৯৫ (সংশোধিত ২০১০) ও পরিবেশ সংরক্ষণ বিধিমালা-১৯৯৭ (সংশোধিত ২০০২) অনুসারে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার বিধান রয়েছে। সেখানে এই নিয়মের কোনো তোয়াক্কা করা হয়নি।

তিনি বলেন, আমরা ফার্ম বন্ধের দাবি জানালে দীনবন্ধু সেন বিভিন্নভাবে আমাদের হয়রানির চেষ্টা করেন। গত ১ মে রাতে অভিনব পাঁয়তারা করে তার সহযোগীদের নিয়ে ফার্মের বেড়া-নেট ভাঙচুর করে চিৎকার শুরু করেন। চিৎকার শুনে স্থানীয় বাসিন্দারা সেখানে জড়ো হন। রাত ১০টায় উপজেলা চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা এম এ মোঈদ ফারুক ধান কাটার মেশিন দেখতে সেখানে গেলে স্থানীয়রা দীনবন্ধু সেনের ষড়যন্ত্রের কথা তুলে ধরলে তিনি সকলকে শান্ত করার চেষ্টা করেন। পরে তিনি স্থানীয় বাসিন্দা তোফাজ্জুল আলীর বাড়িতে চা খেতে গেলে দীনবন্ধুর ভাড়াটে মাস্তানরা ওই বাড়ি ঘেরাও করে তোফাজ্জুল আলীর পুত্র বদরুল ইসলামকে মারধর করে। এতে তিনি গুরুতর আহত হন। তার ভাই নুরুল ইসলামের দোকানে ভাঙচুর ও লুটপাট করা হয়। বাধা দিতে গেলে নুরুলের মাকেও মারধর করে স্বর্ণের চেন ছিনিয়ে নেওয়া হয়।

তিনি আরও বলেন, এ ঘটনায় দীনবন্ধু সেন উল্টো উপজেলা চেয়ারম্যানসহ ১২ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা আরও ১৫-২০ জনকে আসামি করে মিথ্যা মামলা করেন। মামলায় আমরা ভুক্তভোগীদের আসামি করা হয়। আমরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে সাজানো সকল মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারসহ পরিবেশ বিনষ্টকারী অবৈধ পোল্ট্রি ফার্ম বন্ধের জোর দাবি জানাই।

ভুক্তভোগী আহমদ আলী বলেন, নীতিমালা উপেক্ষা করে গ্রামের ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় খামারটি স্থাপন করা হয়েছে। এ বিষয়ে উপজেলা চেয়ারম্যান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যানের কাছে লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়েছে গ্রামবাসীর পক্ষ থেকে।

কলেজছাত্রী রীমা রানী দাশ বলেন, আমরা করোনাভাইরাস থেকে নয়, ফার্মের দুর্গন্ধ থেকে মুক্তি চাই। সুস্থভাবে বাঁচার জন্য সুন্দর পরিবেশ চাই। সকল মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার চাই।

 

এইচআর/আরআর