করোনায় সংকটে শায়েস্তাগঞ্জের ইমাম, মুয়াজ্জিন ও হাফেজরা

শায়েস্তাগঞ্জ সংবাদদাতা


মে ১৯, ২০২০
০৪:৫২ পূর্বাহ্ন


আপডেট : মে ১৯, ২০২০
০৪:৫৯ পূর্বাহ্ন



করোনায় সংকটে শায়েস্তাগঞ্জের ইমাম, মুয়াজ্জিন ও হাফেজরা

প্রতিবছর রমজান মাসে মুসল্লিদের আগমনে মসজিদগুলো কানায় কানায় পূর্ণ থাকে। খতমে তারাবি পড়ানোর জন্য আগে থেকেই হাফেজ নিয়োগ করতে হয়। প্রতিটি মসজিদে ধর্মীয় রীতি অনুসরণের পাশাপাশি একটি সামাজিক পরিবেশও সৃষ্টি হয়। সেই সঙ্গে ইমাম-মুয়াজ্জিন-হাফেজদের জন্য বিশেষ হাদিয়াও বরাদ্দ থাকে। স্থানীয়রাই এই অর্থের যোগান দেন।

তবে এবারের পরিস্থিতি ভিন্ন। করোনাভাইরাস সংক্রমণের কারণে এবার মসজিদে যাতায়াত সীমাবদ্ধ করা হয়েছে। তারাবির নামাজে কমে গেছে মুসল্লির উপস্থিতি। তাই ব্যতিক্রমী সংকটে পড়েছেন হবিগঞ্জের শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলার ইমাম, মুয়াজ্জিন ও হাফেজরা।

তাঁদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, রমজান মাসে স্থানীয় মুসল্লিরা মসজিদ কমিটির মাধ্যমে দু’হাত ভরে মসজিদের ইমাম-মুয়াজ্জিনদের সম্মানী দিয়ে থাকেন। অনেক মসজিদে তারাবির নামাজে হাফেজরা একমাস ইমামতি করেন। এ সময় তারা নামাজে কোরআনের ৩০ পারা পাঠ করেন। একে বলা হয় খতমে কোরআন। হাফেজরা তাই তারাবিকে তাঁদের কোরআন চর্চার বিশেষ মাস হিসেবে দেখেন। সেই সঙ্গে প্রত্যেক মসজিদ থেকে তাঁদের সম্মানীও দেওয়া হয়। সেই অর্থ দিয়েই তারা পরিবার নিয়ে ঈদ উৎসব করেন, সংসারের খরচও মেটান। কিন্তু এ বছর করোনা মোকাবিলায় সবকিছু বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছেন তাঁরা।

উপজেলার পূর্ব নোয়াগাঁও জামে মসজিদের ইমাম সৈয়দ মুজাক্কির হোসেন বলেন, আহলে সুন্নাতে ওয়াল জামাত কেন্দ্রীয় কমিটির মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বরাবর একটি স্মারকলিপি দেওয়া হয়েছিল। বিষয়টি আমলে নিয়ে সরকারের নির্দেশে ইতোমধ্যে মসজিদের ইমাম ও মুয়াজ্জিনদের তালিকা করা হয়েছে। কিন্তু এখনও আমরা কোনো ধরণের সরকারি প্রণোদনা পাইনি।

পূর্ব নোয়াগাঁও জামে মসজিদ কমিটির সদস্য সচিব মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, আমাদের মাদরাসার ছাত্ররা ছুটিতে রয়েছে। এবার যেহেতু খতমে তারাবি হয়নি, তাই মসজিদে মুসল্লির সংখ্যাও কম। আমরা ব্যক্তিগতভাবে ইমাম মুয়াজ্জিনকে সহায়তা করার উদ্যোগ নিয়েছি।

এ ব্যাপারে শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা সুমী আক্তার জানান, শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলা বেশিদিন হয়নি আলাদা হয়েছে। তাই শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলার ইসলামিক ফাউন্ডেশনের কার্যক্রম এখনও শুরু হয়নি। এ ব্যাপারে তিনি কিছুই জানেন না।

আর হবিগঞ্জ সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা শাখাওয়াত হোসেন রুবেল বলেন, শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলার বিষয়ে আমি জানি না। আমাদের সদর উপজেলা থেকে ইমাম, মুয়াজ্জিনদের মধ্যে ৫০০ জনকে ত্রাণ দেওয়া হয়েছে।

এ বিষয়ে কথা হয় হবিগঞ্জ ইসলামিক ফাউন্ডেশনের কর্মকতা নজরুল ইসলামের সঙ্গে। তিনি জানান, সদর উপজেলার সঙ্গে সমন্বয় করে শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলার প্রতিটি মসজিদের ইমাম ও মসজিদ কমিটির সভাপতির নাম ও মোবাইল নাম্বার গতকাল (১৭ মে) প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পাঠানো হয়েছে। কিন্ত মুয়াজ্জিনদের তালিকা পাঠানো হয়নি। তিনি আশা করছেন ঈদের আগে তাঁরা প্রণোদনা পেয়ে যাবেন।

 

এসডি/আরআর-১০