নিজস্ব প্রতিবেদক
অক্টোবর ২৮, ২০২৫
০৪:০২ অপরাহ্ন
আপডেট : অক্টোবর ২৮, ২০২৫
০৪:০২ অপরাহ্ন
সিলেট নগরে ব্যাটারিচালিত রিকশা চলাচলের ওপর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের দাবিতে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন রিকশা শ্রমিকরা।
আজ মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) দুপুরে সিলেট নগরের চৌহাট্টায় সরকারি আলিয়া মাদরাসা মাঠে শ্রমিক সমাবেশ শেষে সড়ক অবরোধ করেন তারা। রিকশা-ভ্যান-ইজিবাইক শ্রমিক ইউনিয়ন সিলেট জেলা শাখা এ কর্মসূচির আয়োজন করে।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, ব্যাটারিচালিত রিকশা বন্ধের সিদ্ধান্ত অন্যায় ও অমানবিক। এটি প্রত্যাহার করা না হলে বৃহত্তর আন্দোলনের কর্মসূচি দেওয়া হবে।
বক্তারা জানান, এই বাহন পরিবেশবান্ধব ও নিম্ন আয়ের হাজারো মানুষের জীবিকার একমাত্র অবলম্বন। প্রশাসনের এই পদক্ষেপে প্রায় ৩০ হাজার শ্রমিক পরিবার অনিশ্চয়তায় পড়েছে।
শ্রমিক ইউনিয়নের নেতারা জানিয়েছেন, দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত তারা আন্দোলন চালিয়ে যাবেন।
সংগঠনের ১২ দফা দাবির মধ্যে রয়েছে- ব্যাটারিচালিত যানবাহন বন্ধের আদশে প্রত্যাহার করে আটককৃত যানবাহন ফিরিয়ে দেওয়া এবং যে সকল গ্যারেজের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে তা পুণরায় সংযোগ দেওয়া, বিআরটিএ কর্তৃক নীতিমালা প্রণয়ন, যানবাহনের লাইসেন্স ও চালকদের লাইসেন্স প্রদান সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত নগরের গলি ও প্রয়োজনীয় সড়কে চলাচল করতে দেওয়া, যৌক্তিক ও সুশৃঙ্খল সড়ক ব্যাবস্থাপনা প্রণয়ন করতে সকল অংশীজনের সমন্বয়ে কমিটি গঠন, জরিপের মাধ্যমে এলাকাভিত্তিক অটোরিক্সার সংখ্যা ও মালিকানা নির্ধারণ, শ্রমিক নেতা আবু জাফরসহ গ্রেপ্তারকৃত শ্রমিকদের মুক্তি ও মামলা প্রত্যাাহার, সড়ক উপযোগী মডেল সকলের জন্য উন্মুক্ত করে বাহনসমূহের আধুনিকায়ন, ব্যাটারিচালিত যানবাহন শ্রমিকদের ওপর জুলুম-নির্যাতন-চাঁদাবাজি পুনরায় ফিরে না আসে তার জন্য কার্যকর ব্যবস্থা নিশ্চিত করা, ব্যটারিচালিত যানবাহন গ্যারেজের ট্রেড লাইসেন্স প্রদান, রিক্সা-ভ্যান ইজিবাইক ও সাইকেলের জন্য র্পযায়ক্রমে সকল সড়কে সার্ভিস লেন নির্মাণ, জীবিকা সুরক্ষায় শ্রম সংস্কার কমিশনের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন, রিক্সা-ভ্যান-ইজবিাইক শ্রমকিদের মানুষ হিসেবে নাগরিক অধিকার ও সামাজিক মর্যাদা নিশ্চিত করা ইত্যাদি।
শ্রমিক ইউনিয়নের নেতারা জানিয়েছেন, দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত তারা আন্দোলন চালিয়ে যাবেন। বেলা আড়াইটায় এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত শ্রমিকরা তাদের দাবি নিয়ে সিলেট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে অবস্থান নিয়েছেন।
বক্তারা ঘোষণা দিয়েছেন, তাদের দাবি না মানা পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাবেন। তারা জিন্দাবাজার-চৌহাট্টা সড়কে অবস্থান নেয়ার ফলে এই রুটে যানবাহন চলাচল পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়। ফলে নগরজুড়ে দেখা দিয়েছে তীব্র যানজট, ভোগান্তিতে পড়েছেন সাধারণ মানুষ।
এর আগে সোমবার (২৭ অক্টোবর) সিলেট প্রেসক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে একই দাবি তুলে ধরেছিলেন সংগঠনের আহবায়ক মাসরুখ জলিল। তিনি বলেন, ‘ব্যাটারি চালিত রিকশা শুধু পরিবেশবান্ধবই নয়, এটি আন্দোলনের সময় সাধারণ মানুষের পাশে থেকেছে। এমনকি ছাত্র-জনতার আন্দোলনে ২৪ জন রিকশাচালক জীবন দিয়েছেন।’ তিনি অভিযোগ করেন, ‘আধুনিক প্রযুক্তিনির্ভর এই বাহনকে অপপ্রচার চালিয়ে অবৈধ হিসেবে উপস্থাপন করা হচ্ছে। অথচ প্রশাসনের উচিত ছিল বিআরটিএর মাধ্যমে নীতিমালা প্রণয়ন ও লাইসেন্স প্রদান।’
উল্লেখ্য, গত সেপ্টেম্বরের শেষ দিক থেকে সিলেট নগরে ব্যাটারিচালিত রিকশা চলাচল বন্ধে অভিযান শুরু করে পুলিশ। সিলেট মহানগর পুলিশ কমিশনার আবদুল কুদ্দুছ চৌধুরীর উদ্যোগে পরিচালিত এই অভিযানে অসংখ্য রিকশা জব্দ ও একাধিক চার্জিং পয়েন্টের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে।
এএফ/০১