করোনাকালে বালাগঞ্জে প্রশংসিত সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি

শামীম আহমদ, বালাগঞ্জ


জুন ১৬, ২০২০
০১:৪৬ অপরাহ্ন


আপডেট : জুন ১৬, ২০২০
০১:৪৬ অপরাহ্ন



করোনাকালে বালাগঞ্জে প্রশংসিত সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি

‘মোরা এক বৃন্তে দু’টি কুসুম হিন্দু-মুসলমান। মুসলিম তার নয়ন-মণি, হিন্দু তাহার প্রাণ। এক সে আকাশ মায়ের কোলে যেন রবি শশী দোলে, এক রক্ত বুকের তলে, এক সে নাড়ির টান।’ মানবতার কবি নজরুলের এই কবিতাটির মতো সিলেটের বালাগঞ্জে হিন্দু-মুসলিমদের মাঝে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির বন্ধন অটুট রয়েছে। করোনাকালে হিন্দু যুবকের শেষকৃত্যে মুসলমানরা অংশ নিয়ে মানবতার যে অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন, তা সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির নজির হয়ে থাকবে।

বালাগঞ্জ ইউনিয়নের চাঁনপুর গ্রামের নিতাই দাসের ছেলে সাহিত্য সংগঠক ও সংবাদকর্মী লিটন দাস লিকন করোনার উপসর্গ নিয়ে গত ১৪ জুন দুপুরে সিলেটের শহীদ শামসুদ্দিন হাসপাতালে নেওয়ার পথে মারা যান। মৃতদেহ বাড়িতে আনার পর বালাগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আব্দুল মুনিমসহ এলাকার বিভিন্ন শ্রেণি, পেশা ও ধর্মের লোকজন তার বাড়িতে ছুটে গিয়ে পরিবারের সদস্যদের সান্ত্বনা দেন।

ওইদিন বিকেলে উপজেলা প্রশাসনের তত্ত্বাবধানে মরদেহের শেষকৃত্যের ব্যবস্থা করা হয়। ব্যাগে ঢোকানো হয় মরদেহ। এরপর অন্যান্যদের সঙ্গে মৃতদেহ বহনকারী বাঁশের খাটিয়া কাঁধে তুলে নেন বালাগঞ্জ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. আব্দুল মুনিম। চেয়ারম্যান মো. আব্দুল মুনিম, উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক তুহিন মুনসুরসহ অন্যান্যরা শ্মশান ঘরে মৃতদেহ চুলার উপরে তোলেন। তারা এগিয়ে দেন দাহ করার লাকড়ি।

মৃতদেহ কাঁধে তুলে বহন করা, শ্মশান ঘরে চুলার উপরে মৃতদেহ তোলা ও শেষকৃত্যে লাকড়ি এগিয়ে দেওয়ার ছবিগুলো সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়ায় মানুষের প্রশংসায় ভাসছেন চেয়ারম্যান মো. আব্দুল মুনিম ও সাবেক ছাত্রনেতা তুহিন মুনসুর। শেষকৃত্য অনুষ্ঠান শেষে চেয়ারম্যান মো. আব্দুল মুনিম ও সাবেক ছাত্রনেতা তুহিন মনসুর নিজেদের ফেসবুক আইডি থেকে আবেগঘন পোস্টও দেন।

বালাগঞ্জ উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা দেবাংশু কুমার সিংহ বলেন, 'যারা সৌহার্দ্য-সম্প্রীতিকে ধারণ করেন, লালন করেন, তাদের কাছ থেকে অসাম্প্রদায়িক চেতনা জাগ্রত হয়। বালাগঞ্জে হিন্দু-মুসলিমদের মধ্যে অসাম্প্রদায়িক বন্ধন রয়েছে। করোনাকালে শেষকৃত্যে মুসলমানরা অংশ নেওয়ায় মানবতা এবং সম্প্রীতির ভীত আরও মজবুত হয়েছে বলে আমি মনে করি।

 

এসএ/আরআর-০১