বাংলাদেশ- চীনের ঘনিষ্ঠতায় ভারতের অসন্তুষ্টি

সিলেট মিরর ডেস্ক


জুন ২০, ২০২০
০৭:০২ অপরাহ্ন


আপডেট : জুন ২০, ২০২০
০৭:০২ অপরাহ্ন



বাংলাদেশ- চীনের ঘনিষ্ঠতায় ভারতের অসন্তুষ্টি

ভারত-চীন সীমান্ত সংঘাতের মধ্যে চীনের পক্ষ থেকে বাংলাদেশি পণ্যে শতকরা ৯৭ ভাগ শুল্কমুক্ত সুবিধা ঘোষণা এবং বাংলাদেশ নৌবাহিনীতে চীনের তৈরি যুদ্ধ জাহাজে সংযুক্তি ভারতের জন্য বাড়তি উদ্বেগের সৃষ্টি করেছে।

ঠিক এসময় বাংলাদেশের সাথে চীনের এমন ঘনিষ্ঠতায় ভারতের অসন্তুষ্টির কথা প্রকাশ করেছে সেদেশের বহুল প্রচারিত ইংরেজি দৈনিক দি টাইমস অব ইন্ডিয়া এবং বাংলা দৈনিক আনন্দবাজার পত্রিকা।  

উল্লেখ্য, বাংলাদেশ নৌবাহিনীর জন্য চীনে তৈরী দুটি যুদ্ধ জাহাজ “সংগ্রাম” এবং “প্রত্যাশা” গত বছর এপ্রিল মাসে চট্টগ্রাম নেভাল জেটিতে এসে পৌঁছায়। এক বছরেরও অধিক সময় পর বৃহস্পতিবার (১৮ জুন) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্স এর মাধ্যমে চট্টগ্রামে নৌ জেটিতে বানৌজা সংগ্রাম এর কমিশনিং অনুষ্ঠান উদ্বোধন করেন।

এদিকে, বাংলাদেশের অনুরোধের প্রেক্ষিতে চীনের স্টেট কাউন্সিলের ট্যারিফ কমিশন সম্প্রতি ৫ হাজার ১৬১টি বাংলদেশি পণ্যের ক্ষেত্রে এ শুল্কমুক্ত সুবিধার প্রদানের কথা জানিয়েছে। বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় শুক্রবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, চলতি বছরের ১ জুলাই থেকে চীন এ সুবিধা প্রদান করবে।

বাংলাদেশ ইতোমধ্যে চীন থেকে এশিয়া প্যাসেফিক ট্রেড এগ্রিমেন্ট (আপটা)-র আওতায় ৩ হাজার ৯৫ টি পণ্যের শুল্কমুক্ত সুবিধা ভোগ করে আসছিল। চীনের পক্ষ থেকে নতুন করে শুল্কমুক্ত সুবিধার ঘোষণার ফলে বাংলাদেশকে মোট ৮ হাজার ২৫৬ পণ্যের শুল্কমুক্ত সুবিধা দেয়া হলো।

বাংলাদেশের সাথে চীনের সম্পর্কের ঘনিষ্ঠতায় ভারতের উষ্মা প্রসঙ্গে ঢাকা বিশ্বিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ড. সি আর আবরার বলেন, ভারতের সাথে পার্শ্ববর্তী সবগুলি দেশের সাথেই সম্পর্কের টানাটানি রয়েছে। সেজন্য দায় দায়িত্ব ভারত সরকারের ওপরই বর্তায়। তাছাড়া বাংলাদেশের বর্তমান সরকার গত দশ বছরে ভারতকে তাদের সকল চাহিদা যেভাবে পূরণ করেছে তার বিপরীতে বাংলাদেশেকে তারা কিছুই দেয় নি।

তিনি আরো উল্লেখ করেন, আজ বাংলাদেশ তার নিজস্ব স্বার্থে চীনের সাথে সম্পর্ক উন্নয়নের জন্য কিছু করলে তা নিয়ে ভারতের গা-জ্বালা হতে পারে কিন্তু তারা এভাবে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে মন্তব্য করতে পরে না।  

উল্লেখ্য, আনন্দবাজার পত্রিকা  লিখেছে “বাণিজ্যিক লগ্নি আর খয়রাতির টাকা ছড়িয়ে বাংলাদেশকে পাশে পাওয়ার চেষ্টা নতুন নয় চীনের। লাদাখে ভারতের সঙ্গে সীমান্ত-সংঘর্ষে উত্তাপ ছড়ানোর পর ফের নতুন উদ্যমে সে কাজে নেমেছে বেইজিং। প্রতিবেশী দেশগুলির সঙ্গে সম্পর্ক বিষিয়ে দিয়ে দক্ষিণ এশিয়ায় ভারতকে একঘরে করে ফেলার কৌশল বাস্তবায়িত করছে বেইজিং। কয়েক বছর ধরেই বাংলাদেশ তাদের নিশানা। এখানে বিভিন্ন ক্ষেত্রে যেমন তারা লগ্নি করেছে, দেশের গ্রামীণ বাজারগুলিতেও পণ্যের পসরা নিয়ে হাজির হচ্ছে চীনা বণিকেরা। ঢাকার প্রধান শেয়ার বাজারটিও তাদের কব্জায়।“

এছাড়া টাইমস অব ইন্ডিয়া লিখেছে, ‘স্বল্পোন্নত দেশ’ হিসেবে চীনের কাছে শুল্ক ছাড়ের প্রস্তাব দিয়েছিল বাংলাদেশ। আশ্চর্যজনকভাবে গত ১৬ জুন, অর্থাৎ লাদাখ সংঘর্ষের মাত্র একদিন পরেই বিষয়টিতে ইতিবাচক সাড়া দেয় বেইজিং।“

টাইমস অব ইন্ডিয়া জনিয়েছে, “শুল্কছাড়ের ফলে ঢাকা-বেইজিং সম্পর্ক আরও ঘনিষ্ঠ হয়ে উঠবে, যা নয়া দিল্লির জন্য বেশ অস্বস্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বাংলাদেশ দীর্ঘদিন থেকেই ভারতের বন্ধুরাষ্ট্র হলেও গত বছর জাতীয় নাগরিকপঞ্জি (এনআরসি) ও নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের ফলে কিছুটা রুষ্ট হয়েছিল ঢাকা। -সূত্র: পার্সটুডে

জেএসএস/এনপি-১৬