সিলেট মিরর ডেস্ক
জুন ২১, ২০২০
০৩:০৭ অপরাহ্ন
আপডেট : জুন ২১, ২০২০
০৫:০৪ অপরাহ্ন
সিলেটে ‘নিরাপদ খাদ্য’ বিষয়ে এক কর্মশালায় বক্তারা বলেছেন, সুস্বাস্থ্যের জন্য নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করতে হবে। চলতি করোনা পরিস্থিতিতে নিরাপদ খাদ্য গ্রহণ আরও বেশি জরুরি। কেবল খাদ্য গ্রহণ করলেই হবে না, সেই খাদ্য হতে হবে নিরাপদ ও স্বাস্থ্যকর। অনিরাপদ খাদ্য গ্রহণ করলে তা উল্টো নানা অসুখের কারণ হতে পারে। তাই নিরাপদ খাদ্য সরবরাহ নিশ্চিতের পাশাপাশি এ ব্যাপারে ব্যাপক গণসচেতনতাও জরুরি। মানুষের মধ্যে নিরাপদ খাদ্যাভ্যাস গড়ে তুলতে হবে।
আজ রবিবার (২১ জুন) বিকেলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সিলেট বিভাগীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত কর্মশালায় বক্তারা এসব কথা বলেন।
কর্মশালা উদ্বোধন করেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সিলেট বিভাগীয় পরিচালক ডা. সুলতানা রাজিয়া। করোনাকালে স্বাস্থ্যবিধি মেনে এ কর্মশালায় স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তারা ছাড়াও সিলেট অঞ্চলের সাংবাদিক, শিক্ষক, পেশাজীবী সংগঠনের নেতৃবৃন্দসহ সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ করেন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সিলেট বিভাগীয় কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক ডা. আনিসুর রহমান অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন। তিনি অংশগ্রহণকারীদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন। কর্মশালা আয়োজনে সমন্বয় করেন জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক পার্থ সারথি দাস।
স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য শিক্ষা ব্যুরোর ‘লাইফস্টাইল, হেলথ এডুকেশন এন্ড প্রমোশন’ কর্মসূচির আওতায় আয়োজিত কর্মশালায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সিলেট বিভাগীয় কার্যালয়ের মেডিকেল অফিসার ডা. সিধু সিংহ।
মূল প্রবন্ধে বলা হয়, অনিরাপদ খাবার বাংলাদেশের সার্বিক জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ঝুঁকি হিসাবে কাজ করছে। প্রক্রিয়াজাত করা বা তৈরি করা বেশিরভাগ খাবারে অবাধে ভেজাল মেশানোর ফলে অনিরাপদ হয়ে যাচ্ছে। আইসিডিডিআরবি এর উপাত্ত থেকে দেখা যায়, অনিরাপদ খাবার ও পানি থেকে সৃষ্ট রোগের জন্য প্রতিদিন ৫০১ জন এই হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা গ্রহণ করেন। বিশ্বব্যাংকের ২০১৯ সালে প্রকাশিত মূল্যায়নে দেখা যায়, বাংলাদেশে এখনও শতকরা ৩১ ভাগ শিশুর উচ্চতা স্বাভাবিক উচ্চতার নিচে। শতকরা ২২ ভাগ শিশু কম ওজন নিয়ে জন্মগ্রহণ করে। পুষ্টিকর ও সুষম খাবারের অভাবে এ জাতীয় সমস্যা হচ্ছে।
প্রবন্ধে বলা হয়, বিত্তশালী পরিবারের প্রায় ২২ ভাগ জাঙ্ক ফুড গ্রহণের সমস্যায় ভুগছে। আবার শহর এলাকায় উন্মুক্ত স্থানে বিক্রি হওয়া খাবার গ্রহণ করে দরিদ্র, অশিক্ষিত লোকজন নানা অসুখে আক্রান্ত হচ্ছেন। অনিরাপদ খাদ্য গ্রহণ করার কারণে পেটের পীড়া, ডায়রিয়া, বমি, জ্বর ইত্যাদি রোগ ছড়ায়। অনিরাপদ খাদ্যের কারণে সবচেয়ে ঝুঁকিতে আছেন শিশু, গর্ভবতী নারী, প্রবীণ ও বিভিন্ন জটিল রোগে আক্রান্তরা।
প্রবন্ধে নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিতে টাটকা ও মানসম্মত ফলমূল, শাক-সবজি, মাছ-মাংস গ্রহণ করতে বলা হয়েছে। স্বাস্থ্যসম্মত পরিবেশে খাবার তৈরি, পরিবেশন, সংরক্ষণ এবং উচ্চ তাপমাত্রায় (৭০ ডিগ্রি সে.) খাবার রান্না করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
কর্মশালায় মুক্ত আলোচনায় অংশ নেন, সিলেট জেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি তাপস দাশ পুরকায়স্থ, সিলেট প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রশিদ মো. রেনু, দৈনিক সিলেটের ডাক এর বার্তা সম্পাদক সমরেন্দ্র বিশ্বাস সমর, সিলেট উইমেন্স চেম্বারের সভাপতি স্বর্ণলতা রায়, সমাজ অনুশীলন সিলেটের সদস্য সচিব মুক্তাদীর আহমদ মুক্তা, দৈনিক দেশ রূপান্তরের নিজস্ব প্রতিবেদক ফখরুল ইসলাম, দৈনিক প্রথম আলোর নিজস্ব প্রতিবেদক উজ্জ্বল মেহেদী, দৈনিক মানবজমিনের নিজস্ব প্রতিবেদক ওয়েছ খছরু, ইলেকট্রনিক মিডিয়া জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশন সিলেটের সাধারণ সম্পাদক সজল ছত্রী, দৈনিক উত্তরপূর্বের প্রধান প্রতিবেদক তালুকদার আনোয়ারুল ইসলাম পারভেজ প্রমুখ।
আরসি-০৭