জগন্নাথপুর প্রতিনিধি
জুন ২৩, ২০২০
০৯:৫৪ অপরাহ্ন
আপডেট : জুন ২৩, ২০২০
০৯:৫৪ অপরাহ্ন
সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর পৌরসভার প্রথম নির্বাচিত চেয়ারম্যান উপজেলা আওয়ামী লীগের একাধিকবারের সভাপতি পৌরশহরের ইকড়ছই আবাসিক এলাকার বাসিন্দা প্রয়াত হারুনুর রশিদ হিরণ মিয়ার দ্বিতীয় ছেলে নব্বই দশকের তুখোড় ছাত্রনেতা যুক্তরাজ্যের লিডস আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বজলুর রশিদ ভূঁইয়াকে আজ মঙ্গলবার (২৩ জুন) দুপুরে দাফন করা হয়েছে।
এর পূর্বে সকাল ১১টায় ইকড়ছই সিনিয়র হাফিজিয়া আলিয়া মাদরাসা প্রাঙ্গণে সাবেক এই ছাত্রনেতার জানাজার নামাজ অনুষ্ঠিত হয়। এতে শোকাহত মানুষের ঢল নামে। জানাজা শেষে মাদরাসার নিকটবর্তী পঞ্চায়েতি কবরস্থানে তাঁর বাবা মরহুম হারুনুর রশিদ হিরণ মিয়ার কবরের পাশে তাঁকে দাফন করা হয়।
গতকাল সোমবার (২২ জুন) সন্ধ্যা ৭টার দিকে সিলেট নগরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বজলুর রশীদ ভূঁইয়া (৪৭) ইন্তেকাল করেন। তিনি মাসখানেক ধরে লিভারজনিত জটিলতায় আক্রান্ত ছিলেন এবং চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন।
মৃত্যুকালে তিনি মা, ভাই, বোন, স্ত্রী, দুই ছেলে, দুই মেয়েসহ অসংখ্য আত্মীয়-স্বজন গুনগ্রাহী রেখে গেছেন। তাঁর স্ত্রী ও সন্তানরা যুক্তরাজ্যে বসবাস করছেন।
এদিকে গতকাল রাত সাড়ে ১০টার দিকে মরহুমের মরদেহ এম্বুলেন্সযোগে তাঁর জন্মভিটায় এসে পৌঁছালে সেখানে এক হৃদয়বিদাযড়ক দৃশ্যের অবতারণা ঘটে। এলাকার শত শত নারী-পুরুষ শেষবারের মতো তাঁকে দেখতে বাড়িতে ছুটে যান। তাঁর অকাল মৃত্যুতে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে আসে।
সাবেক ছাত্রনেতা বজলুর রশিদ ভুঁইয়ার বড় ভাই জগন্নাথপুর পৌরসভার সাবেক চেয়ারম্যান মিজানুর রশীদ ভূঁইয়া বলেন, আমার ছোট ভাইয়ের অকাল মৃত্যুতে আমরা বাকরুদ্ধ। অনাকাঙ্ক্ষিত এই মৃত্যুর শোক বহন বড়ই কষ্টকর, বেদনাদায়ক। ছোট ভাইয়ের চলার পথে ভুল-ভ্রান্তি হতে পারে। এজন্য আমি ক্ষমা চেয়ে ভাইয়ের বিদেহী আত্মার শান্তির জন্য সবার কাছে দোয়া চাইছি।
বজলুর রশিদ ভুঁইয়ার স্বজনরা জানান, আওয়ামী লীগ পরিবারে জন্ম নেওয়া বজলুর রশীদ স্কুল জীবন থেকে ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে সক্রিয়ভাবে জড়িত ছিলেন। জগন্নাথপুর কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি ও উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক পদে দায়িত্বপালন করেছেন। তিনি নব্বইয়ের দশকে স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনের অগ্রসৈনিক হিসেবে রাজপথের একজন সাহসী যোদ্ধা ছিলেন। বৈবাহিক বন্ধনে আবদ্ধ হওয়ার পর তিনি পরিবার-পরিজন নিয়ে যুক্তরাজ্যে বসবাস করে আসছিলেন। সেখানে তিনি লিডস আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদকের দায়িত্বে ছিলেন। রাজনীতির পাশাপাশি বজলুর রশীদ ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক অঙ্গনে ৯০ এর দশকে খুবই জনপ্রিয় ছিলেন। ফুটবল খেলায় একজন কৃতী গোলরক্ষক হিসেবে তাঁর সুখ্যাতি ছিল। অনুরূপভাবে বিচরণ ছিল সাংস্কৃতিক জগতেও। তৎকালীন সময়ের জনপ্রিয় সামাজিক সংগঠন পারাবত এর সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বপালন করেছেন।
তাঁর আকস্মিক মৃত্যুতে স্থানীয় সংসদ সদস্য পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান, সুনামগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি প্রবীন রাজনীতিবিদ সিদ্দিক আহমদ, জেলা আওয়ামী লীগ নেতা নুরুল ইসলাম, সিরাজুল ইসলাম, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আকমল হোসেন, সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিম রিজু, সহ-সভাপতি সিরাজুল হক, আব্দুল কাইয়ুম মশাহীদ, যুগ্ম-সম্পাদক লুৎফুর রহমান. সাংগঠনিক সম্পাদক বদরুল ইসলাম, মুক্তাদীর আহমদ, জয়দ্বীপ সূত্রধর বীরেন্দ্র, উপজেলা যুবলীগ সভাপতি কামাল উদ্দিন, সাধারণ সম্পাদক আবুল হোসেন লালন, উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মুজিবুর রহমান মুজিব, উপজেলা ছাত্রলীগ সভাপতি সাফরোজ ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক শাহ রুহেলসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার নেতৃবৃন্দ শোক প্রকাশ করেছেন।
এএ/আরআর-০১