নিজস্ব প্রতিবেদক
জুন ২৭, ২০২০
০৩:০৩ অপরাহ্ন
আপডেট : জুন ২৭, ২০২০
০৫:০৪ অপরাহ্ন
সিলেট নগরেরে চৌহাট্টা থেকে জিন্দাবাজার সড়ক থেকে সরানো হচ্ছে তারের জঞ্জাল। সড়কের দুই পাশের খুঁটি করা হচ্ছে অপসারণ। এতে করে কাটা পড়েছে ইন্টারনেটের ক্যাবল। ফলে নগরে ইন্টারনেটের গতি কমে এসেছে। বিকল্প মাধ্যমে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে ইন্টারনেট সরবরাহ হচ্ছে। তবে সেখানেও ইন্টারনেটের গতি ধীর। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের অনলাইনে ক্লাস কিংবা অন্যান্য কাজেও তাই ব্যাঘাত ঘটছে।
আজ শনিবার (২৭ জুন) দুপুরে চৌহাট্টা পয়েন্ট থেকে জিন্দাবাজার সড়কের দুই পাশের বিদ্যুতের খুঁটি অপসারণের কাজ শুরু করে সিলেট সিটি করপোরেশন। ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার্স অ্যাসোসিয়েশন (আইএসপিএস) সিলেটের প্রতিনিধিদের নিয়ে সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী এই কাজের উদ্বোধন করেন। চৌহাট্টা থেকে জিন্দাবাজার সড়কে ভূগর্ভস্থ বিদ্যুৎ লাইনের কাজ শেষ হয়েছে। চলছে আপৎকালীন ওভারহেড লাইনের শেষ মুহূর্তের কাজ। যা পূর্ণাঙ্গ সঞ্চালনের পর সরিয়ে নেওয়া হবে।
এদিকে, চৌহাট্টা থেকে জিন্দাবাজার সড়কে ভূগর্ভস্থ বিদ্যুৎ লাইনে পরীক্ষামূলকভাবে বিদ্যুৎ সঞ্চালন চালু করা হয়েছে কয়েকদিন ধরে। কিছু দিনের মধ্যেই পূর্ণাঙ্গ সঞ্চালনও শুরু হবে। পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী সিলেট সিটি করপোরেশন চৌহাট্টা থেকে জিন্দাবাজার সড়কের দুই পাশের বিদ্যুতের খুঁটি ও ইন্টারনেটের তার অপসারণের কাজ শুরু করেছে। ইন্টারনেটের তার সরিয়ে নিতে গত শুক্রবার পর্যন্ত সময় বেঁধে দেওয়া হয়েছিল।
বিকল্প ব্যবস্থা করলেও ইন্টারনেটের সংযোগে ধীরগতি দেখা দিয়েছে। বিভিন্ন দাপ্তরিক কাজ কিংবা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাস গ্রহণের ক্ষেত্রেও সমস্যার সম্মুখীন হয়েছেন শিক্ষার্থীরা।
সিলেটের একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আফিয়ান সাঈদ সিলেট মিররকে বলেন, দুপুর থেকে ইন্টারনেটে ধীরগতি। বিকেলে অনলাইনে ক্লাস ছিল। সেখানে কানেক্ট হতে পারিনি নেট স্লো থাকায়। স্বাভাবিক কখন হবে জানতে চেয়ে যোগাযোগ করা হলে তাঁরাও সঠিক কোনো উত্তর দিতে পারেননি।’
এই বিষয়ে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সেবাদানকারি প্রতিষ্ঠান লিংক থ্রি সিলেটের ব্যবস্থাপক মাসুদ রানা বলেন, ‘এই সড়ক দিয়ে অনেকগুলো এলাকায় সংযোগ গেছে। তারগুলো কাটা পড়ায় এলাকাগুলোতে সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়েছে। তাদেরকে আমরা বিকল্প মাধ্যমে সেবা পৌছানোর চেষ্টা করেছি। ইতোমধ্যে অনেকের কাছে ইন্টারনেট সংযোগ পৌঁছে গেছে। যারা পাননি তাদেরকে পৌঁছে দেওয়ার কাজ চলছে।’
মাটির নিচে নেওয়ার কাজের অগ্রগতির বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটা প্রক্রিয়াধীন আছে। একটু সময় লাগবে। কারণ একদিন বা দুই দিনে এই কাজ করা সম্ভব নয়।’
সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী বলেন, ‘দ্রুততম সময়ের মধ্যেই কাজটি শেষ হলে ভূগর্ভস্থ বিদ্যুতের পূর্ণাঙ্গ সেবা পাবেন চৌহাট্টা থেকে জিন্দাবাজার সড়কের দুই পাশের গ্রাহকরা। দেশের প্রথম ভূগর্ভস্থ বিদ্যুতায়ন প্রকল্পের আওতায় এর আগে সফলভাবে হজরত শাহজালাল দরগাহ এলাকায় গ্রাহকদের মাঝে পূর্ণাঙ্গ বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু হয়েছে। এই ধারাবাহিকতায় পরবর্তীতে গোটা সিলেট নগরকে ভূগর্ভস্থ বিদ্যুৎ লাইনের আওতায় আনা হবে।’
উল্লেখ্য, বিদ্যুতের তারের জঞ্জাল কমিয়ে সিলেট নগরকে স্মার্ট ডিজিট্যাল সিটি হিসেবে গড়ে তুলতে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের অর্থায়নে ও সিলেট সিটি করপোরেশনের সহায়তায় ৫৫ কোটি টাকা ব্যায়ে ভূগর্ভস্থ বিদ্যুতায়ন প্রকল্পের আওতায় এ কাজ চলছে। দেশের প্রথম এই ভূগর্ভস্থ বিদ্যুতায়নের এই প্রকল্পে সিলেট নগরে ১১ কেভি ২৫ কিলোমিটার, শূন্য দশমিক ৪ কেভি ১৮ কিলোমিটার ও ৩৩ কেভি ৬ কিলোমিটার ভূ-গর্ভস্থ বিদ্যুৎ লাইন নির্মাণ করা হবে।
এই প্রকল্পে নগরের ইলেক্ট্রিক সাপ্লাই সাব স্টেশন থেকে ভূ-গর্ভস্থ বিদ্যুৎ সরবরাহের লাইন আম্বরখানা হয়ে যাবে চৌহাট্টায়। চৌহাট্টা থেকে জিন্দাবাজার-কোর্ট পয়েন্ট হয়ে সিলেট সার্কিট হাউজ যাবে একটি লাইন। চৌহাট্টা থেকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল হয়ে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড সিলেট অফিস পর্যন্ত বিদ্যুতায়ন হবে।
আরসি/এনপি-০৫