নাবিল চৌধুরী
জুলাই ০৭, ২০২০
০১:৩৮ অপরাহ্ন
আপডেট : জুলাই ০৭, ২০২০
০২:২৭ অপরাহ্ন
সিলেট জেলায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত প্রতি ১০০ জনে দুইজনের বেশি রোগীর মৃত্যু হচ্ছে। যা সারাদেশের মৃত্যুর হারের প্রায় দ্বিগুণ। অন্যদিকে, সুস্থতার হার সারাদেশের সুস্থতার হারের অর্ধেকেরও কম। প্রায় একই অবস্থা সিলেট বিভাগেরও।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী আজ মঙ্গলবার (৭ জুলাই) সকাল পর্যন্ত সারাদেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ১ লাখ ৬৮ হাজার ৬৪৫ জনকে শনাক্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে সুস্থ হয়েছেন ৭৮ হাজার ১০২ জন। শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৪৬ দশমিক ৩১ শতাংশ।
অপরদিকে, সিলেট জেলায় আজ সকাল পর্যন্ত শনাক্ত করা হয়েছে ২ হাজার ৮৬৯ জনকে। এর মধ্যে সুস্থ হয়েছেন মাত্র ৫৭৬ জন। শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার মাত্র ২০ দশমিক ০৭ শতাংশ। যা সারাদেশের সুস্থতার হারের অর্ধেকেরও কম।
আজ সকাল পর্যন্ত সারাদেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ২ হাজার ১৫১ জনের মৃত্যু হয়েছে। শনাক্ত বিবেচনায় মৃত্যুর হার ১ দশমিক ২৭ শতাংশ। অপরদিকে, সিলেট জেলায় সকাল পর্যন্ত মৃত্যুবরণ করেছেন ৭১ জন। শনাক্ত বিবেচনায় মৃত্যুর হার ২ দশমিক ৪৭ শতাংশ। যা সারাদেশের মৃত্যুর হারের প্রায় দ্বিগুণ।
মৃত্যুর হার এবং সুস্থতার হারে খারাপ অবস্থায় আছে সিলেট বিভাগও। আজ সকাল পর্যন্ত সিলেট বিভাগে শনাক্ত হয়েছেন ৫ হাজার ৩৮১ জন। এর মধ্যে সুস্থ হয়েছেন ১ হাজার ৮৯৬ জন। সুস্থতার হার ৩৫ দশমিক ২৩ শতাংশ। মৃত্যু হয়েছে ৯০ জনের। মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৬৭ শতাংশ।
প্রসঙ্গত, ৫ এপ্রিল সিলেটে করোনা করোনাভাইরাসে আক্রান্ত প্রথম ব্যক্তিকে শনাক্ত করা হয়। প্রথম মৃত্যু হয় ১৫ এপ্রিল। প্রথম করোনা আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হওয়ার পর ধীর গতিতে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়লেও লকডাউন প্রত্যাহার এবং শপিংমল-দোকানপাট খুলে দেওয়ায় ঈদের পর আক্রান্তের সংখ্যা দ্রুত বাড়তে থাকে। শুধু জুন মাসেই সিলেটে শনাক্ত হয়েছেন ৩ হাজার ৫৭৪ জন রোগী।
স্বাস্থ্যবিধি যথাযথভাবে না মানার কারণেই সিলেট বিভাগে সংক্রমণ দ্রুত বাড়ছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। আর মৃত্যুর হার বেশি ও সুস্থতার হার কম হওয়ার জন্য হাসপাতালে পর্যাপ্ত শয্যা না থাকাকে দায়ী করছেন তারা।
সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) সিলেট জেলার সাধারণ সম্পাদক শাহ শাহেদা সিলেট মিররকে বলেন, ‘সিলেটে করোনা আক্রান্ত রোগীদের জন্য প্রয়োজনীয় চিকিৎসার ব্যবস্থা নেই। এজন্য সারাদেশের তুলনায় সিলেটে করোনায় মৃত্যু বেশি ও সুস্থতার হার কম। শহীদ শামসুদ্দিন আহমদ হাসপাতালে করোনা আক্রান্তদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে; কিন্তু সেখানে শয্যা কম। বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা ব্যয় বেশি, যা সাধারণ মানুষের পক্ষে বহন করা কঠিন। তাই অনেকে চিকিৎসা পাচ্ছেন না।’
করোনা প্রতিরোধে জনগনের মধ্যেও সচেতনার অভাব রয়েছে বলেও তিনি মন্তব্য করেন। সবমিলিয়ে মহামারী মোকাবেলায় যে ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া উচিত তা নেওয়া হয়নি বলে মনে করেন শাহ শাহেদা।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সিলেট বিভাগীয় কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক ডা. আনিসুর রহমান সিলেটে মৃত্যুর হারকে স্বাভাবিকই দেখছেন। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি সিলেট মিররকে বলেন, ‘সিলেটে করোনায় মৃত্যুর বর্তমান হার স্বাভাবিক। সিলেটে গত জুন মাসে মূলত বেশি করোনা আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছেন। তাদের বেশিরভাগই কয়েকদিনের মধ্যে সুস্থ হবেন। তখন সুস্থতার হারও বাড়বে।’
এনপি-০১