বিশ্বনাথ প্রতিনিধি
জুলাই ০৮, ২০২০
০২:৫৬ অপরাহ্ন
আপডেট : জুলাই ০৮, ২০২০
০৪:১৮ অপরাহ্ন
সিলেটের বিশ্বনাথে বিদ্যালয়ের টাকার হিসাব দেওয়ার চাপে ওই বিদ্যালয়ের অফিস সহকারী আসমা শিকদার শিমলা হারপিক খেয়ে আত্মহত্যা করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। তিনি উপজেলার দৌলতপুর ইউনিয়নের আদর্শ উচ্চবিদ্যালয় ও কলেজের অফিস সহকারী ও একই ইউনিয়নের বাহাড়াদুবাগ গ্রামের ফজলুর রহমানের স্ত্রী। তার ১৬ বছর বয়সী এক ছেলে সন্তান রয়েছে।
গতকাল মঙ্গলবার (৭ জুলাই) রাতে সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।
জানা গেছে, আইনিভাবে অফিস সহকারীর কাছে বিদ্যালয়ের টাকা-পয়সার হিসেব চাওয়া যুক্তিসঙ্গত না হলেও বার বার হিসেব চায় বিদ্যালয় কমিটি এবং এর জন্য চাপ প্রয়োগ করেন বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ও কমিটির নেতৃবৃন্দ। এমন চাপের কারণে ও অপমানের ভার সহ্য করতে না পারায় ওই নারী আত্মহত্যা করেছেন বলে অভিযোগ করেছে তার পরিবার।
এদিকে ওই ঘটনায় আজ বুধবার (৮ জুলাই) বিকেলে স্কুল কমিটির এক সদস্যকে আটক করেছে পুলিশ। তার নাম আনোয়ার মিয়া। আর বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় ওই অফিস সহকারীর দাফন সম্পন্ন হয়েছে বলে তার পরিবার সূত্রে জানা গেছে।
সূত্র জানায়, আসমা শিকদার শিমলা দীর্ঘদিন ধরে ওই বিদ্যালয়ে অফিস সহকারীর দায়িত্বপালন করে আসছিলেন। সম্প্রতি সভাপতি কিংবা প্রতিষ্ঠানের প্রধানের কাছে আয়-ব্যয়ের হিসেব না চেয়ে শিমলার কাছে হিসাব চায় কমিটির একটি অংশ। এজন্য তাকে বিভিন্নভাবে নাজেহালও করেন তারা। এ অপমান সইতে না পেরে গত সোমবার (৬ জুলাই) দুপুরে কীটনাশক পান করেন শিমলা। পরে আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতকাল মঙ্গলবার দিবাগত রাত ২টায় তার মৃত্যু হয়। শিমলার স্বজনদের অভিযোগ, স্কুল কমিটির দেওয়া মানসিক চাপে তিনি হারপিক পান করেছেন।
এ ব্যাপারে শিমলার স্বামী ফজলুর রহমান বলেন, 'বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ও বিদ্যালয়ের গভর্নিং বডির দুই-তিনজন সদস্যের চাপে আমার স্ত্রী আসমা শিকদার শিমলা মারা গেছেন।' তিনি এ ব্যাপারে মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে জানান।
আদর্শ উচ্চবিদ্যালয় অ্যান্ড কলেজের গভর্নিং বডির সভাপতি যুক্তরাজ্য প্রবাসী মুক্তিযোদ্ধা আবদুর রউফ বলেন, 'বিদ্যালয়ের হিসাব দিতে কখনোই আমরা শিক্ষিকা আসমা বেগম শিমলাকে চাপ দেইনি। তার কাছে হিসাব চাওয়া যুক্তিসঙ্গত নয়। কারণ তিনি বিদ্যালয়ের অফিস সহকারী। হিসাব চাইলে আমরা সাবেক সভাপতি অথবা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের কাছে চাইতে পারি। বিদ্যালয়ের কমিটির উপরে আসা অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট।'
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সমীর কান্তি দেব বলেন, 'এ ধরণের কোনো খবর আমার কাছে আসেনি। তারপরও খোঁজ নিয়ে দেখব।'
বিশ্বনাথ থানার ওসি (তদন্ত) রমা প্রসাদ চক্রবর্তী বলেন, 'ভিকটিমের মরদেহের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে। এ ঘটনায় প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের জন্যে স্কুল পরিচালনা কমিটির এক সদস্যকে থানায় নিয়ে আসা হয়েছে।'
এমএ/আরআর-১৩