বিশ্বনাথে তরুণীকে 'গণধর্ষণ', ১২ দিন পর মামলা

বিশ্বনাথ প্রতিনিধি


জুলাই ১৪, ২০২০
০৯:৩২ অপরাহ্ন


আপডেট : জুলাই ১৪, ২০২০
০৯:৩২ অপরাহ্ন



বিশ্বনাথে তরুণীকে 'গণধর্ষণ', ১২ দিন পর মামলা

সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলার লামাকাজী ইউনিয়নের ইসবপুর গ্রামের ১৮ বছরের এক পিতৃহারা তরুণী গণধর্ষণের শিকার হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। গত ১ জুলাই রাতে ওই গ্রামের আমির আলীর দোকানে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার ১২ দিন পর গতকাল সোমবার (১৩ জুলাই) রাতে ওই তরুণী বাদী হয়ে ৩ জনের নাম উল্লেখ করে বিশ্বনাথ থানায় মামলা দায়ের করেছেন।

মামলার আসামিরা হলেন- উপজেলার ইসবপুর গ্রামের মন্নান মিয়ার ছেলে আনোয়ার মিয়া (৪০), রিয়াছদ আলীর ছেলে সুজন মিয়া (৩০) ও মৃত ফজর আলীর ছেলে শায়েস্তাবুর মিয়া (৩০)।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই গ্রাম ও এলাকার অনেকে জানান, গণধর্ষণের ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে শুরু থেকেই তৎপর হয়ে ওঠে স্থানীয় একটি প্রভাবশালী মহল। তরুণী ও তার পরিবারের লোকজন রহস্যজনক আত্মগোপনে চলে যায়। কিন্তু গত বৃহস্পতিবার খবর পেয়ে বিশ্বনাথের কয়েকজন সংবাদকর্মী অনুসন্ধানে নামলে প্রভাবশালী মহল ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে ব্যর্থ হয়। ফলে ঘটনার ১২ দিন পর তরুণী নিজেই থানায় উপস্থিত হয়ে মামলা দায়ের করেন। 

মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, গত ১ জুলাই চাচা শাসন করায় তার ওপর অভিমান করে ওইদিন দুপুরে পার্শ্ববর্তী ছাতক উপজেলায় নিজের ফুপুর বাড়িতে যাওয়ার জন্য ঘর থেকে বের হন ওই তরুণী। এ সময় সঙ্গে ছিল তার ছোট ভাই জামিল। যাওয়ার পথে গ্রামের আমির আলীর দোকানে ভাড়ায় থাকা মুদি দোকানদার আনোয়ার মিয়া তাদের গন্তব্য কোথায় জানতে চাইলে তরুণী ছাতকে ফুফুর বাড়িতে যাচ্ছে বলে জানায়। আনোয়ার মিয়াও ওই পথে গোবিন্দগঞ্জে যাবে বলে তরুণীকে দোকানে বসিয়ে রেখে মুঠোফোনে ডেকে আনে সুজন মিয়া ও অটোরিকশার চালক শায়েস্তাবুর মিয়াকে। তারা তিনজন মিলে তরুণী ও তার ভাইকে নিয়ে জাউয়া বাজার দক্ষিণপাড়ায় তরুণীর নানাবাড়িতে গিয়ে ছোট ভাই জামিলকে নামিয়ে দিয়ে তাকে নিয়ে বিভিন্ন এলাকা ঘুরে রাত ৮টার দিকে ইসবপুরে আনোয়ারের দোকানে ফিরে আসে। পরে দোকানের ভেতর আনোয়ার, সুজন ও শায়েস্তাবুর সারারাত তরুণীকে পালাক্রমে ধর্ষণ করে। তাদের পাশবিকতায় তরুণী অসুস্থ হয়ে পড়লে পরদিন বিকেলে তাকে গোবিন্দগঞ্জ পয়েন্টে ফেলে আসে অভিযুক্তরা। আসার সময় তারা ঘটনাটি কাউকে জানালে বা মামলা করলে তাকে মেরে ফেলার হুমকি দেয়। খবর পেয়ে তরুণীর চাচাতো ভাই রাহেল তাকে উদ্ধার করে বাড়িতে নিয়ে আসেন। রাহেলের বাড়িতে একরাত থাকার পর ভয়ে-লজ্জায় ছাতকের বেতকোনা গ্রামে ফুফুর বাড়িতে আত্মগোপনে চলে যান তরুণী।

গণধর্ষণ মামলা দায়েরের সত্যতা নিশ্চিত করে বিশ্বনাথ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শামীম মুসা বলেন, 'গতকাল সোমবার ভিকটিম তরুণীকে সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওসিসিতে পাঠানো হয়েছে। আসামিদের গ্রেপ্তার করতে তৎপর রয়েছে পুলিশ।'

 

এমএ/আরআর-০৯