টাকার বিনিময়ে করোনার সার্টিফিকেট, সিলেটে চিকিৎসক গ্রেপ্তার

নিজস্ব প্রতিবেদক


জুলাই ১৯, ২০২০
০২:২৯ অপরাহ্ন


আপডেট : জুলাই ১৯, ২০২০
০৭:৪৭ অপরাহ্ন



টাকার বিনিময়ে করোনার সার্টিফিকেট, সিলেটে চিকিৎসক গ্রেপ্তার

টাকার বিনিময়ে পরীক্ষা ছাড়াই করোনার ভুয়া সার্টিফিকেট দেওয়ার অভিযোগে এ এইচ এম শাহ আলম নামে এক চিকিৎসককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এসময় তাকে এক লাখ টাকা অর্থদণ্ড ও চার মাসের কারাদণ্ড দিয়েছে টাস্কফোর্স। তিনি নিজেকে ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মেডিক্যাল অফিসার বলে পরিচয় দিতেন এবং নিজে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েও চেম্বারে রোগী দেখছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
আজ রবিবার (১৯ জুলাই) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে নগরের মধুশহীদ এলাকায় মেডিনোভা মেডিক্যাল সার্ভিসেস এর নিচ তলায় চেম্বারে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
জানা গেছে, ঢাকার জেকেজি মেডিক্যালের মতো কোনো ধরণের পরীক্ষা নিরীক্ষা ছাড়াই কেবলমাত্র টাকার বিনিময়ে তিনি কোভিড-নন কোভিডের প্রত্যয়নপত্র দিয়ে আসছিলেন। মূলত বিদেশগামী যাত্রীদেরই তিনি টার্গেট বানিয়েছিলেন। তাদের ‘করোনা নেগেটিভ’ সার্টিফিকেট দেওয়ার কথা বলে জনপ্রতি চার হাজার টাকা করে আদায় করতেন এবং ফ্লাইটের ৪৮ ঘন্টা আগে ডেকে এনে প্রত্যয়নপত্র দিতেন। রোগী বা যাত্রীকে না দেখলেও তিনি নিজের প্যাডে লিখে দিতেন, তিনি রোগীকে নিজের চেম্বারে দেখেছেন। তার মধ্যে কোভিড-১৯ এর কোন লক্ষণ নেই। এসব অভিযোগের ভিত্তিতে জেলা প্রশাসনের ম্যাজিস্ট্রেট, সিভিল সার্জনের প্রতিনিধি ও র‌্যাবের যৌথ টাস্কফোর্স সন্ধ্যার দিকে অভিযান চালায়। এসময় অভিযুক্ত চিকিৎসক তার অপরাধ স্বীকার করেছেন বলে জানা গেছে।
এ বিষয়ে র‌্যাব-৯ এর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সামিউল আলম বলেন, ‘ডা. আলম বিদেশযাত্রীদের টাকার বিনিময়ে ভুয়া সার্টিফিকেট দিচ্ছেন এমন খবরে আমরা তদন্ত শুরু করি। এরপর তাকে র‌্যাব কার্যালয়ে নিয়ে আসা হলে তিনি জিজ্ঞাসাবাদে বিষয়টি স্বীকারও করেন। পরে তাকে নিয়ে তার চেম্বার নগরের কাজলশাহ্ এলাকায় মেডিনোভা মেডিক্যাল সার্ভিসেস লিমিটেটে অভিযান চালানো হয়।’ নিজে করোনা আক্রান্ত হয়েও ডা. আলম চেম্বারে রোগী দেখছিলেন জানিয়ে এই র‌্যাব কর্মকর্তা বলেন, ‘গত ১৪ জুলাই ডা. আলমের করোনা শনাক্ত হলেও তিনি চেম্বারে রোগী দেখছেন নিয়মিত। পাশাপাশি ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মেডিক্যাল অফিসার বলেও নিজের ভুয়া পরিচয় দিতেন।
অভিযানে অংশ নেওয়া জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সুনন্দা রায় বলেন, ‘তার বিরুদ্ধে অভিযোগ আছে তিনি তিনি যে পদের নন এমন পদবি ব্যবহার করে প্রেসক্রিপশন দিচ্ছেন। নিজেকে ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মেডিক্যাল অফিসার পরিচয় দিলেও তিনি তা নন।’ তিনি আরও বলেন, ‘ডা. উনি কোন পরীক্ষা নিরীক্ষা করছেন না। যে সব পরীক্ষা করা দরকার তা না করেই যে কেউ আসলে টাকার বিনিময়ে প্রত্যয়নপত্র দিচ্ছেন। যেটা খুবই ক্ষতিকর। এসব প্রত্যয়নপত্র নিয়েই আমাদের দেশের প্রবাসীরা বাইরে চলে যাচ্ছেন। এতে আমাদের দেশের সম্মানহানি হচ্ছে।’ অভিযুক্ত চিকিৎসক নিজের অপরাধ স্বীকার করে নিয়েছেন জানিয়ে তিনি বলেন, ‘তাকে এক লাখ টাকা অর্থদণ্ড এবং চার মাসে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।’

এনএইচ/এএফ-০৭