শহিদ আহমদ চৌধুরী, ফেঞ্চুগঞ্জ
জুলাই ২০, ২০২০
১১:০৯ পূর্বাহ্ন
আপডেট : জুলাই ২০, ২০২০
১১:০৯ পূর্বাহ্ন
বৃষ্টি কম থাকলেও সিলেটের ফেঞ্চুগঞ্জ পয়েন্টে বাড়ছে কুশিয়ারা নদীর পানি। এতে উপজেলার বেশ কয়েকটি গ্রাম তলিয়ে প্রায় কয়েক হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। বন্যার্ত পরিবারগুলো মানবেতর জীবনযাপন করছে।
উপজেলার কয়েকটি গ্রামে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। এতে বেশ কিছু ঘরের ভেতর পানি প্রবেশ করেছে। পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় নানা ভোগান্তিতে রয়েছে এসব পরিবার। উপজেলার গয়াসি, সাইলকান্দি, সুরিকান্দি, ভেলকুনা, মানিকোনা (একাংশ), বাগমারা, ছত্রিশ (একাংশ), পাঠানচক, ইলাশপুর (একাংশ), ধনারাম (একাংশ), বারহাল, ভরাউট, নাথকলোনীসহ বেশ কিছু এলাকার মানুষ ও গৃহপালিত গবাদিপশু পানিবন্দি রয়েছে। এর মধ্যে বেশ কিছু পরিবার রান্না নিয়ে সমস্যায় রয়েছেন। রান্না করতে না পেরে তারা মানবেতর জীবনযাপন করছেন।
বাগমারা গ্রামের রাজা মিয়া বলেন, 'আমাদের গ্রামের প্রায় ৪৫টির মতো পরিবার পানিবন্দি রয়েছে। আমরা প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো ধরণের সহযোগিতা পাইনি। প্রশাসনের কেউ আমাদের কোনো খোঁজ নেয়নি। শুধুমাত্র কয়েকটি পরিবারকে উপজেলা চেয়ারম্যানের পক্ষ থেকে প্যাকেটজাত খাদ্য দেওয়া হয়েছে।
উপজেলার ভুক্তভোগী মানুষের দুর্ভোগের শেষ নেই। আমাদের চলাচলের একমাত্র ভরসা এখন নৌকা। কারও ঘরে পানি, কারও বারান্দায় পানি। বন্যায় কাঁচা ও আধাপাকা ঘর যেকোনো সময় ভেঙে পড়ে যেতে পারে, সেই ভয়ে রাতে ঘুম হয় না। আছে খাবারের চিন্তা। খেয়ে না খেয়ে অনেকে দিন পার করছেন।'
এ নিয়ে উত্তর ফেঞ্চুগঞ্জ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এমরান আহমদের সঙ্গে কথা হলে তিনি জানান, তার ইউনিয়নে প্রায় সাড়ে চার হাজার মানুষ পানিবন্দি। সরকার থেকে মাত্র দেড় টন চাল ও ১৬ প্যাকেট খাদ্যসামগ্রী পেয়েছেন, যা মোটেও যথেষ্ঠ নয়।
উত্তর কুশিয়ারা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আহমেদ জিলু জানান, তার ইউনিয়নে প্রায় ২ হাজার মানুষ বন্যায় আক্রান্ত। প্রশাসন থেকে দেড় টন চাল ও কয়েক প্যাকেট খাবার পেয়েছেন।
৩ নম্বর ঘিলাছড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান লেইছ চৌধুরী জানান, 'তার এলাকায় বন্যার পানি কারও বাড়িতে উঠেনি। তবে পানি বাড়লে উঠার সম্ভাবনা রয়েছে। তিনি তার এলাকায় বরাদ্দকৃত চাল বিতরণ করেছেন।
বন্যার বিষয়ে কথা বলার জন্য বেশ কয়েকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও পাওয়া যায়নি ফেঞ্চুগঞ্জ সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান কাজী বদরোদ্দোজাকে।
ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা রাখী আহমদ জানান, বন্যায় আক্রান্ত মানুষের জন্য ১০ টন চাল ও শুকনো খাদ্য এবং গবাদি পশুর খাদ্য এসেছিল। তা বিতরণ করা হয়েছে।
এদিকে সিলেট পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, কুশিয়ারার পানি বিপৎসীমার ৪৮ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে শুধু ফেঞ্চুগঞ্জ পয়েন্টে। অন্যান্য পয়েন্টে পানি কমলেও পানি বৃদ্ধি অব্যাহত আছে। বৃষ্টি অব্যাহত থাকলে পানি আরও বাড়তে পারে বলে জানিয়েছেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-সহকারী প্রকৌশলী গোলাম বারী।
এসএ/আরআর-০২