বালাগঞ্জে উত্যক্তের প্রতিবাদ করায় হামলার অভিযোগ

বালাগঞ্জ প্রতিনিধি


জুলাই ২১, ২০২০
১১:৫০ পূর্বাহ্ন


আপডেট : জুলাই ২১, ২০২০
১১:৫০ পূর্বাহ্ন



বালাগঞ্জে উত্যক্তের প্রতিবাদ করায় হামলার অভিযোগ

সিলেটের বালাগঞ্জ উপজেলার বালাগঞ্জ ইউনিয়নের রহমতপুর-গহরমলী গ্রামে কুপ্রস্তাবের প্রতিবাদ করায় হামলার ঘটনায় থানায় লিখিত অভিযোগ দাখিল করা হয়েছে। অভিযোগ দাখিলের পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল সোমবার (২০ জুলাই) বালাগঞ্জ থানার এএসআই মোস্তাক আহমদ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে আহত লোকজনসহ স্থানীয়দের স্বাক্ষ্যগ্রহণ করেছেন।

স্থানীয়রা জানান, গ্রামের সমছু মিয়ার মেয়েকে (২৮) বিভিন্ন সময় কুপ্রস্তাব দিয়ে উত্তক্ত করে আসছিল পার্শ্ববর্তী বাড়ির এন্তাজ আলীর ছেলে হেলন মিয়া। গত ১৮ জুলাই রাত সাড়ে ১২টার দিকে হেলন ওই মেয়েটির শোবার ঘরের দরজা ভাঙার চেষ্টা করে। বাড়ির লোকজন বিষয়টি টের পেয়ে হেলনকে জাপটে ধরেন। হেলন ছুটে যাওয়ার চেষ্টাকালে বাড়ির লোকজনকে এলোপাতাড়ি আঘাত করলে কয়েকজন আহত হন। ধস্তাধস্তিকালে হেলনের মাথায়ও কিছুটা জখম হয়।

সমছু মিয়ার ছেলে মিজানুর রহমান বলেন, হেলনকে আটকের খবর পেয়ে তার স্বজনরা এসে তাকে জোর করে ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন। হেলনকে গ্রামের ফারুক মিয়ার জিম্মায় ছেড়ে দেওয়া হয়। হেলনকে ছাড়িয়ে নেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তার স্বজনরা দেশীয় অস্ত্র নিয়ে আমাদের বাড়িতে উঠে বাড়ির লোকজনের ওপর হামলা ও ভাঙচুর করে। অতর্কিত হামলায় আমি, আমার বাবা ও মাসহ ৫-৬ জন আহত হই।

লিখিত অভিযোগে বলা হয়েছে, রাত দেড়টার দিকে আহতরা বালাগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিতে যান। সেখানে আগে থেকে ওত পেতে থাকে বখাটে হেলনের ভাই আক্তার মিয়া ও তার সহযোগী লেচু মিয়া। হাসপাতালের মূল ফটকে পৌঁছামাত্র লেচুর নির্দেশে আক্তার ভারী ইট দিয়ে সমছু মিয়া ও তাদেরকে বহনকারী সিএনজিচালিত অটোরিকশার চালক মনু মিয়ার মাথায় সজোরে আঘাত করে। ইটের আঘাতে তারা মাটিতে পড়ে গেলে সমছু মিয়ার ছেলে মিজানুরের চিৎকারে হাসপাতালে দায়িত্বরতরা ছুটে এসে তাদেরকে উদ্ধার করেন এবং থানায় কল দেন। ফোন পেয়ে বালাগঞ্জ থানার এএসআই মোস্তাক আহমদ সেখানে যান। পুলিশের উপস্থিতিতে গুরুতর আহত চালক মনু মিয়াকে হাসপাতালের এম্বুলেন্সযোগে দ্রুত সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। তার মাথায় দিতে হয়েছে ২০টি সেলাই। আর বালাগঞ্জ হাসপাতালে চিকিৎসা নেন আহত কদ্দুস মিয়া। তার মাথায়ও দিতে হয়েছে ৮টি সেলাই।

উত্যক্তের শিকার ওই নারী বলেন, দীর্ঘদিন ধরে হেলন আমাকে নানাভাবে কুপ্রস্তাব দিয়ে আসছে। আমি আলাদা ঘরে থাকি। কয়েকদিন আগে আমি আত্মীয়ের বাড়িতে বেড়াতে যাই। এই সুযোগে হেলন রাতে আমার ঘরের তালা ভেঙে ঘরে থাকা জিনিসপত্র ও মোবাইল নিয়ে যায়। আমি বাড়িতে আসার পর হেলন আমাকে জানায়, তার প্রস্তাবে যেন রাজি হয়ে যাই আর এ বিষয়টি কাউকে যেন না বলি, তাহলে সে আমার ঘর থেকে নেওয়া সব জিনিসপত্র ফেরত দিয়ে দেবে। লোকলজ্জার ভয়ে এই ঘটনাটি আমি কাউকে বলিনি। ওইদিন রাতে হেলনকে আমার ঘরের দরজা ভাঙতে দেখে বাড়ির লোকজন তাকে আটক করেন।

এ বিষয়ে বালাগঞ্জ থানার এএসআই মোস্তাক আহমদ বলেন, রবিবার (১৯ জুলাই) ওই নারী বাদী হয়ে লিখিত অভিযোগ দেওয়ার পরদিন হেলনের স্ত্রী আরেকটি অভিযোগ দিয়েছেন। হেলনও আহত হয়ে চিকিৎসাধীন আছে। এ ঘটনার বিষয়টি তদন্ত করবেন থানার সেকেন্ড অফিসার বদিউজ্জামান।  

 

এসএ/আরআর-০৪