তাহিরপুরে দুইপক্ষের সংঘর্ষে আহত অর্ধশত

তাহিরপুর প্রতিনিধি


আগস্ট ২৩, ২০২০
০৪:৩০ পূর্বাহ্ন


আপডেট : আগস্ট ২৩, ২০২০
০৪:৩১ পূর্বাহ্ন



তাহিরপুরে দুইপক্ষের সংঘর্ষে আহত অর্ধশত

সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলায় আওয়ামী লীগের দুই নেতার পক্ষের লোকজনের মধ্যে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে প্রায় ঘন্টাব্যাপী সংঘর্ষে উভয়পক্ষের অন্তত ৫০ জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। ঘটনাটি ঘটেছে আজ শনিবার (২২ আগস্ট) বিকেলে উপজেলার শ্রীপুর (উত্তর) ইউনিয়নের বালিয়াঘাট নতুন বাজারের সড়কপাড়ায়।

উভয়পক্ষের গুরুতর আহত ৩০ জনকে তাহিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। অন্য আহতদের স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। এ ঘটনায় উভয়পক্ষের লোকজনের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করায় ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। 

প্রত্যক্ষদর্শী, পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গোলকপুর গ্রামের বাসিন্দা জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহ-সভাপতি আবুল খায়ের ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি স্থানীয় ইউপি সদস্য একই গ্রামের অমৃতপুরের বাসিন্দা শফিকুল ইসলামের মধ্যে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে বিরোধ চলে আসছিল। এর জের ধরে গতকাল শুক্রবার রাতে বালিয়াঘাট নতুন বাজারে আবুল খায়ের শফিকুল ইসলামকে গালিগালাজ করে বাড়িতে চলে যান। পরে আজ শনিবার দুপুরে আবুল খায়ের বাড়ি থেকে বালিয়াঘাট নতুন বাজারে আসার পথে শফিকুল ইসলামের লোকজন আবুল খায়েরকে বেধড়ক মারধর করেন। বিকেলের দিকে শফিকুল ইসলামের পক্ষের সুহেল মিয়া বাজারে এলে আবুল খায়েরের লোকজন তাকে মারধর করেন। একপর্যায়ে পূর্ব ঘোষণা দিয়ে উভয়পক্ষের লোকজন বিকেল ৫টার দিকে দেশীয় অস্ত্রসস্ত্র ও লাঠিসোঁটা নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। 

ঘন্টাব্যাপী সংঘর্ষে শফিকুল ইসলামের পক্ষের আহতরা হলেন- সেনাজুল (৩৫), হৃদয় (২৫), কাবিল মিয়া (৪০), কিবির মিয়া (২২), শালমান মিয়া (৩০), দুলাল মিয়া (২৫), আলফাজ উদ্দিন (৩০), সিরাজুল ইসলাম (২৫), সুহেল মিয়া (৪০), কামরুল (৪৫), ফকির আলম (৪৫), মেহেদী (২৩), নবী হোসেন (২০), জাকিল মিয়া (৪৫) ও হেলাল মিয়া (২৫)। অপরদিকে আবুল খায়েরের পক্ষের আহতরা হলেন- আবুল খায়ের (৪৫), উকিল মিয়া (৪০), সেলিম মিয়া (৩৫), সবুজ মিয়া (৩৫), পারভেজ মিয়া (২২), সাজুল মিয়া (৪৫), সাদিকুর (৩০), দিলসাদ মিয়া (৩৫), নবী হোসেন (২০), রফিক মিয়া (৩৫), হাবিবুল (৩০) সাহিবুল (৩৩) ও রফিক (৪০)। 

এ ব্যাপারে ইউপি সদস্য শফিকুল ইসলাম বলেন, 'আবুল খায়ের শুক্রবার রাতে মদ্যপান করে মাতাল অবস্থায় আমাকে অকারণে গালিগালাজ করেছেন। বিষয়টি আমার ভাই-ভাতিজা শুনতে পেয়ে শনিবার সকালে খায়েরের কাছে এর কারণ জানতে চাইলে সে উত্তর না দিয়ে অন্য গ্রামের লোকজন দিয়ে আমার বাড়িতে হামলা করিয়েছে।'

তবে বিষয়টি অস্বীকার করে আবুল খায়ের বলেন, 'আমি শুক্রবার রাতে শফিকুল ইসলামকে গালিগালাজ করিনি। শনিবার দুপুরে বাজারে আসার পথে তার লোকজন রাস্তায় আটকে বিনা কারণে আমাকে মারধর করেছে এবং আমার দুই লাখ টাকা, মোবাইল ও ডেবিট কার্ড ছিনিয়ে নিয়ে গেছে।'

তাহিরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আতিকুর রহমান বলেন, 'সংঘর্ষের খবর পেয়ে প্রথমে টেকেরঘাট পুলিশ ক্যাম্পের পুলিশকে ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়। পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে আমিসহ অতিরিক্ত পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করি। পরিস্থিতি এখন শান্ত রয়েছে। এখনও এ ঘটনায় থানায় কেউ লিখিত অভিযোগ দায়ের করেনি।'

 

এএইচ/আরআর-১০