মৌলভীবাজার প্রতিনিধি
                        সেপ্টেম্বর ০৪, ২০২০
                        
                        ০২:০৩ পূর্বাহ্ন
                        	
                        আপডেট : সেপ্টেম্বর ০৪, ২০২০
                        
                        ০২:০৩ পূর্বাহ্ন
                             	
 
                        
             
    মৌলভীবাজারে গাঁজার আসর বসিয়ে মাদকসেবন ও নারী ধর্ষণের প্রতিবাদে মানববন্ধন ও স্মারকলিপি প্রদান করা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার (৩ সেপ্টেম্বর) দুপুরে শহরের চৌমুহনা চত্বরে ঘন্টাব্যাপী মানববন্ধন শেষে এক প্রতিবাদ সমাবেশে অনুষ্ঠিত হয়।
সমাবেশে বক্তব্য দেন, মৌলভী সৈয়দ কুদরত উল্লাহ্ ফাউন্ডেশনের সভাপতি সৈয়দ সাহাব উদ্দিন আহমদ, সচেতন নাগরিক সমাজের সভাপতি মোয়াজ্জেম হোসেন মাতুক, জেলা যৌন হয়রানি নির্মূল কমিটির সভাপতি রাশেদা বেগম, সম্মিলিত সামাজিক উন্নয়ন পরিষদের সভাপতি খালেদ চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক আলীম উদ্দিন আলীম, শেখ বুরহান উদ্দিন (রহ:) ইসলামী সোসাইটির চেয়ারম্যান এম মুহিবুর রহমান মুহিব, বাঁধন থিয়েটারের সভাপতি রুহেল আহমদ, সমাজসেবক কে এম আকলু, তরুণ সমাজকর্মী মিজানুর রহমান রাসেল, আদর মাদকাসক্তি পূনর্বাসন কেন্দ্রের পরিচালক নিখিল তালুকদার, মেধা সংস্কৃতি বিকাশ পরিষদ রাজনগরের সাংগঠনিক সম্পাদক খছরুমিয়া চৌধুরী, দৈনিক কালের কন্ঠ শুভ সংঘের সাধারণ সম্পাদক তাকবীর হোসেন প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, মৌলভীবাজার শহর শান্তিপূর্ণ ও সুশৃঙ্খল। এখানে মাদকের আসর বসিয়ে মদ্যপ অবস্থায় ধর্ষণের মতো ন্যাক্কারজনক ঘটনা ঘটিয়ে তা ফেসবুকে প্রচার করার দুঃসাহস যারা দেখিয়েছে, তাদেরকে অবিলম্বে গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। অন্যথায় জেলার সর্বস্তরের মানুষকে নিয়ে কঠোর আন্দোলনের মাধ্যমে দাবি বাস্তবায়ন করা হবে।
বক্তারা আরও বলেন, যেখানে শহরের গুরুত্বপূর্ণ একটি এলাকায় এ ধরণের কর্মকাণ্ড চলে আসছে, সেখানে প্রশাসন নীরব ভূমিকায় রয়েছে। মাদক ও ধর্ষণের ব্যাপারে সরকার যেখানে জিরো টলারেন্স নীতি ঘোষণা করেছে, সেখানে প্রশাসনের নাকের ডগায় এ রকম একটি ঘটনায় বিস্মিত জেলার সকল স্তরের মানুষ। হযরত সৈয়দ শাহ মোস্তফা (রহঃ) এর পুণ্যভূমিতে এই বেহায়াপনা, অশ্লীল, অনৈতিক কার্যক্রম কোনোভাবেই সহ্য করা যায় না।
মানববন্ধন শেষে একটি স্মারকলিপি জেলা প্রশাসক বরাবরে প্রদান করা হয়।
উল্লেখ্য, গত ৩ আগস্ট শহরের সুনাপুর এলাকায় স্থানীয় সাংবাদিক মাহমুদ এইচ খানের বাসায় মদ ও গাঁজার আসর বসে। ওই আসরে মাহমুদ এইচ খানের সঙ্গে ছিলেন সজিব, রায়হান ও আরও দুই নারী। গত ২৫ আগস্ট মাহমুদ এইচ খান ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে জানান, ওই আসরে সজিব এক নারীকে নেশাগ্রস্ত করে ধর্ষণ করেছেন। পরদিন ২৬ আগস্ট অভিযুক্ত সজিব ধর্ষণের কথা অস্বীকার করে মেয়েটির ইচ্ছাতেই তাদের সম্পর্ক হয়েছে বলে পাল্টা পোস্ট দেন।
এ ঘটনা জানাজানি হলে ফুঁসে ওঠে জেলার সচেতন মহল, তরুণ ও যুবসমাজ। সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শুরু হয় তোলপাড়। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তারা এমন নিন্দনীয় অসামাজিক কার্যকলাপের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে সোচ্চার হন। তাদের সঙ্গে একাত্মতা পোষণ করে জেলার বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন।
এদিকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ওই ঘটনার সত্যতা অকপটে স্বীকার করার পর সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট মৌলভীবাজার জেলা শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক ও শহর শাখার সভাপতি সজিবকে সংগঠনের সকল প্রকার দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল বাসদ মৌলভীবাজার জেলা কমিটির বর্ধিত ফোরামের সদস্য রায়হানকেও সংগঠনের সকল প্রকার দায়িত্ব থেকে সাময়িকভাবে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
অপরদিকে মৌলভীবাজার প্রেসক্লাব গত ৩০ আগস্ট সন্ধ্যায় প্রেসক্লাবের কার্যনির্বাহী কমিটির এক জরুরি সভায় প্রেসক্লাবের গঠনতন্ত্র বিরোধী কার্যকলাপের কারণে মাহমুদ এইচ খানকে সহযোগী সদস্যপদ থেকে বহিষ্কার করে তার সদস্যপদ বাতিল করা হয়।
মৌলভীবাজার মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইয়াছিনুল হক জানান, ওই ঘটনায় গত ৩১ আগস্ট পৃথক দু'টি মামলা হয়েছে। ধর্ষণের শিকার তরুণী তার নাম-পরিচয় প্রকাশ করায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করেছেন মোস্তফা কামাল বিজয় (কে বি খান বিজয়) নামের এক ইউটিউবারের বিরুদ্ধে। অপর মামলায় সজিবকে প্রধান আসামি এবং রায়হান ও নারী সুরক্ষা আন্দোলনের নেত্রী মার্জিয়া প্রভাকে ধর্ষণের সহযোগী উল্লেখ করেছেন ধর্ষণের শিকার ওই তরুণী।
এসএইচ/আরআর-০৮