সিলেটে সামাজিক সংশোধনের সুযোগ পাচ্ছেন লঘু অপরাধে দণ্ডপ্রাপ্তরা

নিজস্ব প্রতিবেদক


ফেব্রুয়ারি ২৩, ২০২১
০৩:৩৯ পূর্বাহ্ন


আপডেট : ফেব্রুয়ারি ২৩, ২০২১
০৫:৫৮ পূর্বাহ্ন



সিলেটে সামাজিক সংশোধনের সুযোগ পাচ্ছেন লঘু অপরাধে দণ্ডপ্রাপ্তরা
# প্রবেশন সুবিধায় সাজা শেষ করেছেন ৫২ জন, আছেন ৯৯ জন

সিলেটে প্রবেশন সুবিধায় সামাজিকভাবে সংশোধনীর সুযোগ পাচ্ছেন লঘু দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা। অপরাধ করেও তারা শর্তসাপেক্ষে কারাগারের পরিবর্তে স্বাভাবিক জীবন যাপনের সুযোগ পাচ্ছেন।

ছোটখাটো বিভিন্ন অপরাধে ১৫১টি মামলায় ১৫১ জন সাজাপ্রাপ্ত আসামির প্রবেশন মঞ্জুর করেছেন আদালত। ইতোমধ্যে ৫২ জনের প্রবেশনে থেকে সাজা শেষ হয়েছে। এখনও ৯৯ জন প্রবেশনে থেকে সাজা ভোগ করছেন। যাদের মধ্যে ১০ জন নারী ও ৩ জন শিশু।

সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, প্রবেশন একটি অপ্রাতিষ্ঠানিক ও সামাজিক সংশোধনী কার্যক্রম। এই কার্যক্রমে অপরাধীকে তার প্রাপ্য শাস্তি স্থগিত রেখে, কারাবদ্ধ না রেখে বা কোনো প্রতিষ্ঠানে আবদ্ধ না করে সমাজে খাপ খাইয়ে চলার সুযোগ প্রদান করা হয়। প্রবেশন ব্যবস্থায় প্রথম ও লঘু অপরাধে আইনের সঙ্গে সংঘর্ষে বা সংস্পর্শে  আসা শিশু-কিশোরেরা বা অন্য কোনো প্রাপ্ত বয়স্ক ব্যাক্তিকে প্রথম ও লঘু অপরাধের দায়ে কারাগারে বা অন্য কোনো প্রতিষ্ঠানে না রেখে আদালতের নির্দেশে প্রবেশন অফিসারের তত্ত্বাবধানে এবং শর্ত সাপেক্ষে তার পরিবার ও সামাজিক পরিবেশে রেখে কৃত অপরাধের সংশোধন ও তাকে সামাজিকভাবে একিভূত করণের সুযোগ দেওয়া হয়।

প্রবেশন সুবিধাপ্রাপ্তদের নিয়মিত প্রবেশন কর্মকর্তার কাছে হাজিরা দিতে হয়। অনেকগুলো শর্তের মধ্যে আরেকটি শর্ত প্রতিমাসের যেকোনো সোমবার আদালত প্রাঙ্গণে মাদক বিরোধী অভিযানে যোগদান। এছাড়া মাদক গ্রহণ ও যেকোনো ধরনের সংঘর্ষ থেকে বিরত থাকাসহ, সন্তানদের লেখাপড়া করানো ও মা-বাবার সেবা করাও শাস্তির একটি অংশ। এসব শর্তকে হালকাভাবে নেওয়ার কোনো সুযোগ নেই, কারণ এটা শাস্তির আওতাধীন। তাছাড়া স্বাভাবিক জীবনে গিয়ে কে কোন পেশায় থেকে জীবিকা নির্বাহ করছেন সেটাও প্রবেশন কর্মকর্তাকে জানাতে হবে বলে সমাজসেবা অধিদপ্তর সিলেট সূত্রে জানা গেছে। সবকিছুই প্রবেশন কর্মকর্তার নজরদারির মধ্যে থাকবে।  

সোমবার সিলেটের আদালত প্রাঙ্গণে প্রবেশনে থাকা সাজাপ্রাপ্তরা এসেছিলেন মাদকবিরোধী অভিযানে যোগ দিতে। এই অভিযান তাদের সাজারই একটি অংশ।

সিলেটের প্রবেশন কর্মকর্তা তৈমুর হোসেন চৌধুরী জানান, প্রবেশন মানে ‘পরীক্ষাকাল’। অপরাধীদের সংশোধনের একটা সুযোগ দিয়ে কারাগার বা কোনো প্রতিষ্ঠানে আবদ্ধ না রেখে তাকে সমাজে চলার সুযোগ দেওয়া। নির্দিষ্ট কিছু শর্ত পূরণ করে তাদের প্রবেশন মঞ্জুর করেন আদালত। এ সময় তাদের বাড়ির আশপাশে পরিবেশ-বান্ধব গাছ লাগানো ও মুক্তিযুদ্ধের গল্প অবলম্বনে নির্মিত সিনেমা দেখতে বলা হয়। সেগুলো দেখে তারা প্রবেশন কর্মকর্তার কাছে এসে বলবেন তারা কী বুঝলেন সিনেমা দেখে।

আইন অনেক পুরনো হলেও চর্চার বিষয়ে জানতে চাইলে তৈমুর হোসেন বলেন, ‘২০১৪ সালে প্রথম সিলেটে প্রবেশন মঞ্জুর করেন আদালত। সিলেটে এর আগে আবেদন করা হলেও, আদালত সেগুলো আমলে নেননি। তবে সিলেটের আগে সুনামগঞ্জে ২০০০ সালে প্রথম প্রবেশন মঞ্জুর করেছিলেন আদালত।’