অর্ধশতাব্দিতে ঐতিহাসিক ৭ মার্চ

সিলেট মিরর ডেস্ক


মার্চ ০৭, ২০২১
০১:৫৭ পূর্বাহ্ন


আপডেট : মার্চ ০৭, ২০২১
০১:৫৭ পূর্বাহ্ন



অর্ধশতাব্দিতে ঐতিহাসিক ৭ মার্চ

আজ ঐতিহাসিক ৭ মার্চ। ১৯৭১ সালের এই দিনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের যুগান্তকারী ভাষণের স্মারক হিসেবে দিনটি অবিস্মরণীয় হয়ে আছে। সেই ঐতিহাসিক দিনটি পার করছে অর্ধশতাব্দী কাল।

দুই যুগের বেশি সময় পার করা এক মহাভাষণ আজো হয়ে আছে অনুপ্রেরণা। এই দিনে বাংলাদেশের স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের (তৎকালীন রেসকোর্স ময়দান) জনসভায় লাখ লাখ জনতার উদ্দেশে এক ঐতিহাসিক ভাষণ দিয়ে স্বাধীনতার ডাক দিয়েছিলেন।

সেদিন দৃপ্ত কণ্ঠে তিনি উচ্চারণে করেছিলেন ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম।’
একাত্তরের ৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর এই উদ্দীপ্ত ঘোষণায় বাঙালি জাতি পেয়ে যায় স্বাধীনতার দিক-নির্দেশনা। এরপরই দেশের মুক্তিকামী মানুষ চূড়ান্ত লড়াইয়ের প্রস্তুতি নিতে শুরু করে। বঙ্গবন্ধুর এই বজ্রনিনাদে জাতি উজ্জীবিত হয়ে ওঠে। ইস্পাতকঠিন দৃঢ়তা নিয়ে এগিয়ে যায় কাঙ্ক্ষিত মুক্তির লক্ষ্যে।

বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণকে ২০১৭ সালের ৩০ অক্টোবর বিশ্ব প্রামাণ্য ঐতিহ্য হিসেবে স্বীকৃতি দেয় জাতিসংঘের শিক্ষা বিজ্ঞান ও সাংস্কৃতিক বিষয়ক সংস্থা ইউনেসকো। দিনটি এত দিন আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠন ভিন্ন ভিন্নভাবে পালন করলেও এবারই প্রথম জাতীয়ভাবে পালন করা হচ্ছে। গত বছরের ১৫ অক্টোবর দিনটিকে ঐতিহাসিক দিবস হিসাবে ঘোষণা করে পরিপত্র জারি করা হয়।

দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী প্রদান করেছেন।

১৯৭১ সালের সেদিন বেলা ৩টা ২০ মিনিটে বঙ্গবন্ধু রেসকোর্স ময়দানে উপস্থিত হন। লাখো মানুষের উপস্থিতিতে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ছিল কানায় কানায় পূর্ণ। স্লোগান ছিল ময়দানজুড়ে ‘পদ্মা মেঘনা যমুনা, তোমার আমার ঠিকানা’। উপস্থিত জনতাকে বঙ্গবন্ধু যুদ্ধের প্রস্তুতি নিতে নির্দেশ দিয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু।

তিনি বলেছিলেন, প্রত্যেক ঘরে ঘরে দুর্গ গড়ে তোলো। তোমাদের যা কিছু আছে, তাই নিয়ে শত্রুর মোকাবিলা করতে হবে। ১৮ মিনিটের সেই ভাষণ মুক্তিযুদ্ধে দারুণ অনুপ্রেরণা জুগিয়েছিল। আজও অনেকের কাছে তা অনুপ্রেরণার উৎস হয়ে আছে।

প্রকৃতপক্ষে জাতির উদ্দেশে দেয়া বঙ্গবন্ধুর ওই ভাষণই ছিল বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণা। স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীর শুভক্ষণে ঐতিহাসিক ৭ মার্চ বিশেষ গুরুত্ব বহন করছে।

দিবসটি উপলক্ষ্যে রবিবার সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে জাতীয় পতাকা উত্তোলন এবং ধানমন্ডির ৩২ নম্বর সড়কের বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘর প্রাঙ্গণে জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করা হবে।

বিকেল ৩টায় রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে ভার্চ্যুয়াল যোগ দেবেন।

সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি থাকবেন মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রী আ. ক. ম. মোজাম্মেল হক, শিক্ষা মন্ত্রী ডা. দীপু মনি। দিবসটির তাৎপর্য তুলে ধরে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করবেন ড. কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী। স্বাগত বক্তব্য দেবেন সংস্কৃতি সচিব বদরুল আরেফীন।

অনুষ্ঠানে ‘ঐতিহাসিক ৭ই মার্চ’র ভাষণ এবং ডকুড্রামাসহ মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশিত হবে।

আরসি-০১