কারা ভবন থেকে লাফিয়ে পালিয়েছেন এক বন্দি

সিলেট মিরর ডেস্ক


মার্চ ০৯, ২০২১
০৫:৩০ পূর্বাহ্ন


আপডেট : মার্চ ০৯, ২০২১
০৫:৩০ পূর্বাহ্ন



কারা ভবন থেকে লাফিয়ে পালিয়েছেন এক বন্দি

চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের নিখোঁজ বন্দি ফরহাদ হোসেন রুবেল কারাগার থেকে পালিয়েছেন বলে নিশ্চিত হয়েছে তদন্ত কমিটি। সোমবার (৮ মার্চ) দিনভর চট্টগ্রাম কারাগারে তদন্ত শেষে কমিটির প্রধান খুলনার ডিআইজি প্রিজন ছগীর মিয়া রাতে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, কারা অভ্যন্তরের দক্ষিণ পাশে সীমানায় লাগানো সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ পর্যালোচনা করে পালিয়ে যাওয়ার বিষয়টি মোটামুটি নিশ্চিত হওয়া গেছে। কারাবন্দি ফরহাদ ৬ মার্চই কারাগার থেকে পালিয়েছেন। তাকে পালাতে কেউ সহযোগিতা করেছেন কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানান তিনি।

গত শনিবার ভোর সোয়া পাঁচটায় চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের কর্ণফুলী ওয়ার্ড নামের ভবন থেকে নিখোঁজ হন হত্যা মামলার আসামি ফরহাদ হোসেন।

ডিআইজি ছগীর মিয়া বলেন, কর্ণফুলী ভবনের নিচ তলা দিয়ে বের হয় ফরহাদ। সিসিটিভি ফুটেজে ফরহাদকে ফাঁসির মঞ্চের পাশের ভবন থেকে সীমানা দেয়ালের বাইরে লাফ দিতে দেখা যায়। ফলে প্রাথমিকভাবে নিশ্চিত হওয়া গেছে ফরহাদ কারাগার থেকে পালিয়েছে।

এর আগে সোমবার সকালে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে খুনের মামলার আসামি এক হাজতি নিখোঁজের ঘটনায় কারা কর্তৃপক্ষের গঠিত তদন্ত কমিটি কাজ শুরু করে। তদন্ত কমিটির প্রধান খুলনা বিভাগের কারা উপ মহাপরিদর্শক ছগীর মিয়ার নেতৃত্বে কারাগার পরিদর্শন করেন সদস্যরা।  

তার আগে ডিআইজি প্রিজন চট্টগ্রামের কার্যালয়ে বৈঠক করেন তদন্ত কমিটির সদস্যরা। এসময় কমিটির অন্য দুই সদস্য ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা কারাগারের সুপার ইকবাল হোসেন ও বান্দরবান জেলা কারাগারের ডেপুটি জেলার ফোরকান ওয়াহিদ উপস্থিত ছিলেন।

তখন তদন্ত দলের প্রধান ছগীর মিয়া সাংবাদিকদের বলেন, সাত কর্মদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। আজ থেকে তদন্ত দলের কাজ শুরু হয়েছে। তিনি বলেন, ঘটনার বিষয়ে বিভাগীয় কমিশনার ও জেলা প্রশাসকের সঙ্গে কথা হয়েছে। সব বিষয় মাথায় রেখে সমন্বয় করেই তদন্ত কাজ চলছে। কবে, কোথায়, কখন বন্দি নিখোঁজ হয়েছে আমরা খুঁজে দেখব।

সরেজমিনে দেখা গেছে, ফায়ার সার্ভিস দিয়ে কারাগারের ভেতরে নিখোঁজ বন্দিকে খোঁজা হয়েছে। এদিকে ঘটনার পরপর জেলা প্রশাসনও তদন্ত কমিটি করেছে। রোববার (৭ মার্চ) চট্টগ্রামের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে প্রধান করে তিন সদস্যের এ কমিটি করা হয়।

বন্দি নিখোঁজের ঘটনায় চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলার ও ডেপুটি জেলারকে রবিবার প্রত্যাহার করা হয়েছে। দুই কারারক্ষীকে বরখাস্ত ও এক কারারক্ষীর বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা হয়েছে।

এর আগে শনিবার (৬ মার্চ) রাতে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে হাজতি নিখোঁজের ঘটনায় নগরীর কোতোয়ালী থানায় মামলা করেছে কারা কর্তৃপক্ষ।

ওই দিন নিখোঁজের বিষয়ে অবগত হওয়ার পর প্রথমে কোতোয়ালী থানায় এ বিষয়ে একটি জিডি করা হয়। জিডিতে উল্লেখ করা হয়, সদরঘাট থানায় দায়ের হওয়া একটি মামলায় চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের অন্তর্বর্তীকালীন হাজতের পরোয়ানা মোতাবেক গত ৯ ফেব্রুয়ারি ফরহাদকে কারাগারে পাঠানো হয়। শনিবার সকাল ৬টা থেকে কারা অভ্যন্তরে অনেক খোঁজাখুঁজি করেও তাকে পাওয়া যায়নি। তিনি কেন্দ্রীয় কারাগারে ১৫ নম্বর কর্ণফুলী ভবনের ‘পানিশমেন্ট’ ওয়ার্ডে থাকতেন।

নিখোঁজ হাজতি মো. ফরহাদ হোসেন রুবেল নরসিংদী জেলার রায়পুরা উপজেলার মীরেরকান্দি গ্রামের শুক্কুর আলী ভাণ্ডারির ছেলে। ফরহাদ নগরীর সদরঘাট থানায় দায়ের হওয়া একটি হত্যা মামলার আসামি। গত ৮ ফেব্রুয়ারি আগ্রাবাদের মিস্ত্রিপাড়া থেকে পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে। ৯ ফেব্রুয়ারি থেকে তিনি কারাগারে ছিলেন।

আরসি-১৫

সূত্রঃ ঢাকা পোস্ট