বিশ্বের এক-তৃতীয়াংশ নারী সহিংসতার শিকার

সিলেট মিরর ডেস্ক


মার্চ ১১, ২০২১
০৩:৪৩ পূর্বাহ্ন


আপডেট : মার্চ ১১, ২০২১
০৩:৪৩ পূর্বাহ্ন



বিশ্বের এক-তৃতীয়াংশ নারী সহিংসতার শিকার

বিশ্বের প্রতি তিনজন নারীর একজন জীবনে অন্তত একবার শারীরিক কিংবা যৌন নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। মঙ্গলবার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০০০ সাল থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত আঠার বছরে ১৫-৪৯ বয়সী ৮৫২ মিলিয়ন নারী তাদের জীবনের এক/ একাধিকবার শারীরিক বা যৌন নির্যাতনের অভিজ্ঞতার মধ্যে দিয়ে গেছেন; বিশ্বে নারীদের সংখ্যার বিচারে যার শতকরা হার প্রায় ৩১ শতাংশ। বিভিন্ন দেশের জাতীয় তথ্য সংরক্ষণ কেন্দ্র ও নিজস্ব জরিপের মাধ্যমে ‍এই প্রতিবেদনের তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে বলে জানিয়েছে ডব্লিউএইচও।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই স্বামী বা ঘনিষ্ট সঙ্গীদের হাতে নির্যাতনের শিকার হন নারীরা। নির্যাতিত ৮৫২ মিলিয়ন নারীদের প্রতি চার জনে একজন নির্যাতিত হয়েছেন তাদের স্বামী বা ঘনিষ্ট সঙ্গীদের দ্বারা।

কিরিবাতি, ফিজি, পাপুয়া নিউগিনি, বাংলাদেশ, ডিআর কঙ্গো এবং আফগানিস্তান নারী নির্যাতনে শীর্ষস্থানে রয়েছে বলে জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। এ তালিকায় সবচেয়ে নিচে রয়েছে ইউরোপের দেশগুলো, তবে সেখানেও ২৩ শতাংশেরও বেশি নারী জীবনে অন্তত একবার এ ধরনের অভিজ্ঞতার মধ্যে দিয়ে গেছেন।

ডব্লিউএইচওর এই গবেষণা পরিচালনাকারী দলের অন্যতম সদস্য হেইডি স্টোকেল বলেন, ‘জরিপে যে তথ্য দেওয়া হয়েছে, বাস্তব পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ। কারণ, এশিয়ার অনেক দেশেই নারী নির্যাতন বিষয়ক তথ্য গোপন করার সংস্কৃতি আছে।’

তিনি আরো বলেন, সাম্প্রতিক করোনা মহামারির কারণে লকডাউন বা ঘরবন্দি থাকার কারণেও নারী নির্যাতন বেড়েছে অনেক দেশে। উদাহারণ হিসেবে লাতিন আমেরিকার দেশ কলম্বিয়ার উদাহারণ টানেন তিনি; যেখানে ২০১৯ সালের তুলনায় ২০২০ সালে নারী নির্যাতন বেড়েছে প্রায় ১৭৫ শতাংশ।

বিশ্বজুড়ে নারী নির্যাতনের এই ঊর্ধ্বগতির জন্য বিভিন্ন দেশের সরকার ব্যবস্থাকে দায়ী করে হেইডি ‍স্টোকেল বলেন, ‘এটা খুবই দুর্ভাগ্যজনক যে দশকের পর দশক ধরে আমরা একই চিত্র দেখছি। নারী অধিকার এবং লিঙ্গ সমতার প্রশ্নে বিভিন্ন দেশের সরকারগুলো যদি আন্তরিক হতো, তাহলে আমাদের এই অবস্থা দেখতে হতো না। রাষ্ট্র ও সমাজব্যবস্থা ও দৃষ্টিভঙ্গিতে বড় ধরনের পরিবর্তন না এলে এ থেকে উত্তরণ সম্ভব নয়।’

প্রতিবেদন প্রকাশের পর এ বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন ডব্লিউএইচও প্রধান তেদ্রোস আধানম গেব্রিয়েসুসও। এক বার্তায় তিনি বলেন, ‘এটা খুবই উদ্বেগজনক। যুগের পর যুগ ধরে দেশে দেশে নারীরা নির্যাতিত হয়ে চলেছেন, প্রতিবাদ করছেন— কিন্তু এই সংস্কৃতি অবসানের কোনো আশা এখনও আমরা দেখতে পাচ্ছি না।’

‘ছোটবেলা থেকে ছেলে শিশুদের এ বিষয়ে শিক্ষা দেওয়া প্রয়োজন। তাদের শেখানো উচিত, নারীদের সম্মান করতে হবে এবং পারস্পরিক সম্মতি ছাড়া যৌনতা একটি ভয়াবহ অপরাধ।’

আরসি-০৬