করোনা: সিলেটে সংক্রমণের হার আশঙ্কাজনক

নিজস্ব প্রতিবেদক


জুন ১৪, ২০২১
১২:২৯ পূর্বাহ্ন


আপডেট : জুন ১৪, ২০২১
১২:২৯ পূর্বাহ্ন



করোনা: সিলেটে সংক্রমণের হার আশঙ্কাজনক

সিলেটে আশঙ্কাজনকভাবে বাড়ছে করোনাভাইরাসের সংক্রমণের হার। গত এক সপ্তাহে নমুনা পরীক্ষা বিবেচনায় সিলেটে শনাক্তের হার ১৬ দশমিক ৩২ শতাংশে পৌঁছেছে। এই হারকে আশঙ্কাজনক বলছেন স্বাস্থ্য সংশ্লিষ্টরা। ভারতীয় ধরন ছড়িয়েছে এমন এলাকার সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করতে না পারলে পরিস্থিতি মারাত্মক আকার ধারণ করতে পারে বলে আশঙ্কা তাদের।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের দৈনিক করোনা প্রতিবেদন পর্যালোচনায় দেখা যায়, গত ৬ জুন থেকে ১২ জুন সকাল ৮টা পর্যন্ত সিলেট জেলায় করোনা পরীক্ষা হয়েছে ২ হাজার ২১১টি। করোনা শনাক্ত হয়েছে ৩৬১ জনের। অর্থাৎ নমুনা পরীক্ষা বিবেচনায় শনাক্তের হার ১৬ দশমিক ৩২ শতাংশ। এর মধ্যে গত ১০ ও ১১ জুন টানা দুদিন হার ছিল ২০ শতাংশ। ভারতের সঙ্গে সীমান্ত খোলা রয়েছে এমন জেলাগুলোতে সংক্রমণ ঠেকাতে নেওয়া ব্যবস্থাগুলো কার্যকর না হওয়ায় এখন অন্য জেলাতেও সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ছে বলে মনে করছেন জনস্বাস্থ্যবিদেরা। তারা বলছেন, আগামীতে সংক্রমণ পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারেই বলেই ইঙ্গিত দিচ্ছে বর্তমান পরিস্থিতি।

এদিকে, গত কয়েকদিন ধরে জেলায় নমুনা পরীক্ষার সংখ্যা কমছে বলে জানিয়েছে জেলা সিভিল সার্জনের কার্যালয়। কয়েকদিন আগেও জেলায় প্রতিদিন গড়ে ৫শর মতো নমুনা পরীক্ষা হত। এখন পরীক্ষা হচ্ছে ৩শর কাছাকাছি নমুনা।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে সিলেটের ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. জন্মেজয় দত্ত সিলেট মিররকে বলেন, ‘যেকোনো এলাকার সংক্রমণের হার ১০ শতাংশের বেশি হলে আশঙ্কাজনক হিসেবে ধরা হয়। সেখানে সিলেটে সংক্রমণের হার ১৬ শতাংশ। তাই সিলেটের মানুষকে সর্তক হতে হবে। স্বাস্থ্যবিধি না মানলে সংক্রমণ আরও বাড়বে।’ বিদেশযাত্রী কমে যাওয়া এবং মানুষের আগ্রহ কমে যাওয়াই নমুনা পরীক্ষা কমার কারণ হবে তিনি জানান।

গত বছরের ৫ এপ্রিল সিলেট জেলায় প্রথম করোনা আক্রান্ত রোগী শনাক্ত করা হয়। সে বছরের জুন-জুলাইয়ে দ্রুত বাড়তে থাকে শনাক্তের সংখ্যা। তবে আগস্টের পর কমতে শুরু করে সংক্রমণ। এ বছরের জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারিতে সিলেটে সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে ছিল। তবে মার্চের শেষ দুই সপ্তাহে আবারও উদ্বেগজনক হারে বাড়ে সংক্রমণ। এপ্রিলে এক মাসেই জেলায় দুই হাজার ৪৬৮ জনের করোনা শনাক্ত হয়, মৃত্যু হয় ৫৪ জনের; যা করোনার সংক্রমণ শুরুর পর শনাক্ত ও মৃত্যুতে এক মাসে সর্বোচ্চ। তবে এপ্রিলের শেষ দিকে এসে কমতে থাকে শনাক্তের সংখ্যা। গত ঈদের পর থেকে আবারও উর্ধ্বগতি দেখা যাচ্ছে সংক্রমণে।

এ অবস্থায় ভারতীয় ধরন ছড়িয়ে পড়া অঞ্চলগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ না করলে অবস্থা আরও খারাপ হতে পারে বলে জানিয়েছেন সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. হিমাংশু লাল রায়। তিনি সিলেট মিররকে বলেন, ‘বর্তমানের অবস্থা নিয়ে শঙ্কিত না হলেও ভারতীয় ধরন সিলেটে প্রবেশ করলে অবস্থা খারাপ হবে। কারণ সিলেট থেকে প্রতিদিন রাতে কয়েকটি বাস দেশের সীমান্ত খোলা আছে এমন জেলা ও বিভাগীয় শহরে চলাচল করে। এসব জেলায় সংক্রমণের হার অনেক বেশি, ছড়িয়েছে ভারতীয় ভ্যারিয়েন্টও। ফলে এসব বাস চলাচল দ্রুতই বন্ধ করতে হবে। তা না হলে সিলেটে ভারতীয় ধরন প্রবেশ করলে সংক্রমণ মারাত্মক আকার ধারণ করবে। তাই দ্রুতই প্রশাসনকে এ ব্যাপারে উদ্যোগ নিতে হবে।’

এ বিষয়ে কথা বলতে সিলেট জেলা প্রশাসনের সহকারী কমিশনার (সাধারণ শাখা, কোভিড-১৯ মিডিয়া সেল) শাম্মা লাবিবা অর্ণবকে একাধিকবার ফোন করলেও তিনি ফোন ধরেননি।’

বিএ-০১