জৈন্তাপুর প্রতিনিধি
জুলাই ৩১, ২০২১
১০:৪০ অপরাহ্ন
আপডেট : জুলাই ৩১, ২০২১
১০:৪০ অপরাহ্ন
করোনাভাইরাসের বিস্তাররোধে সরকার ঘোষিত কঠোর লকডাউন চলছে। বন্ধ রয়েছে হোটেল, রেস্তোরাঁ, চায়ের দোকান, পানের দোকানসহ অন্যান্য দোকানপাট। এ অবস্থায় থমকে গেছে কুয়ার পানি বিক্রি করে চলা জৈন্তাপুরের রজব আলীর ৬ সদস্যের পরিবার।
আলাপকালে রজব আলী জানান, ২০ টাকা মূল্যে তিনি জৈন্তাপুর বাজারের ছোট-বড় সবক'টি দোকানে পানি বিক্রি করতেন। পানি বিক্রি করেই চলে তার ছয় সদস্যের পরিবারের ভরণ-পোষন। নিজের ১ শতকও জমি-জমা নেই। গত ২০-২২ বছর যাবৎ নিজপাট মোরগহাঁটি এলাকার সরকারি খাস জমিতে বসবাস করে আসছেন তিনি।
দেশে করোনার সংক্রমণ শুরু হওয়ার পর থেকে তিনি মানবেতর জীবনযাপন করছেন। দোকানে পানি সরবরাহ না করলে তার ঘরের চুলা জ্বলে না। এই করোনাকালে সরকারি বা বেসরকারিভাবে পাননি কোনো সাহায্য-সহযোগিতা। পানি বিক্রিই তার একমাত্র পেশা। তার তিন মেয়ে ও এক ছেলে রয়েছে। তাদের মধ্যে এক মেয়েকে বিয়ে দিয়েছেন। ১৮ বছরের ছেলেকে পরিবারের হাল ধরার জন্য মিস্ত্রির সহযোগী হিসেবে কাজে পাঠাতেন। কিন্তু করোনা পরিস্থিতির শিকার হয়ে ছেলেও আর কাজে যেতে পারছেন না।
বাজারের দোকানপাট বন্ধ থাকায় রজব আলীও আগের মতো পানি বিক্রি করতে পারছেন না। বর্তমান পরিস্থিতিতে ২০ টাকা করে মাত্র ৫ থেকে ৭ ভার পানি বিক্রি করতে পারছেন তিনি। তা দিয়ে কোনোভাবে চলছে তার পরিবার।
রজব আলী জানান, সরকার অসহায় ভূমিহীন ও গৃহহীনদের বাড়ি তৈরি করে দিচ্ছে। করোনার সময় বিশেষ সহায়তাসহ খাদ্যদ্রব্য বিতরণ করছে। কিন্তু আমি কিংবা আমার পরিবার আজ পর্যন্ত কোনো সহায়তা পাইনি।
বেঁচে থাকার জন্য কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে রজব আলী দৈনিক ৫ হতে ৭ ভার পানি বিক্রি করে সেই উপার্জনে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। লকডাউন পরিস্থিতি আরও দীর্ঘ হলে কী হবে তা তিনি বুঝতে পারছেন না। তিনি প্রতিদিন স্বাস্থ্যবিধি মেনে পানি বিক্রিত জন্য বাজারে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। কারও পানির প্রয়োজন পড়লে তিনি পানি সরবরাহ করছেন। যে সরকারি খাস জায়গায় বসবাস করছেন রজব আলী, সে জায়গাটি বন্দোবস্ত ও সরকারি অর্থায়নে ঘর উপহার পাওয়ার আশা নিয়ে বসে আছেন তিনি। পাশাপাশি সহায়তার আশায় সমাজের বিত্তবানদের দিকে চেয়ে আছেন তিনি।
আরকে/আরআর-০৪